সাপাহার (নওগাঁ) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১১:২৪ পিএম
আপডেট : ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১১:৩৮ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

‘একটি হুইল চেয়ার পেলে স্কুলে যেতে পারতাম’

বাঁ থেকে- বর্ষণ, প্রতিবন্ধী এতিম শিশু রনি মুরমু ও তার নানি সনতি মুরমু। ছবি : কালবেলা
বাঁ থেকে- বর্ষণ, প্রতিবন্ধী এতিম শিশু রনি মুরমু ও তার নানি সনতি মুরমু। ছবি : কালবেলা

নওগাঁর সাপাহার উপজেলার আদিবাসী পল্লি লক্ষ্মীপুর দিঘীপাড়া গ্রামের ৯ বছরের প্রতিবন্ধী এতিম শিশু রনি মুরমু। জন্ম হতে প্রতিবন্ধী হয়ে পঙ্গু জীবনযাপন করছে সে।

প্রতিবন্ধী রনির নানি সনতি মুরমু (৬২) বলেন, আমার মেয়ে মেনতা হেমরম (৩৫) যখন ৭ মাসের গর্ভবতী তখন সংসারে খুব অভাব, ঘরে খাবার নেই, ওষুধ নেই এই নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে প্রায়ই গন্ডগোল হতো, সে সময় আমার মেয়ে রাগ করে স্বামীর বাড়ি বিন্নাকুড়ি থেকে বের হয়ে অন্যত্র চলে যায়। সন্তান জন্মের ২ বছর পরে প্রতিবন্ধী সন্তানকে নিয়ে আমার মেয়ে তার স্বামীর বাড়ি বিন্নাকুড়ি যায়। সেখানে গিয়ে দেখে তার স্বামী কার্ত্তিক মুরমু আর বেঁচে নেই। শ্বশুরবাড়ির লোকজনের সঙ্গে কথা বলতে চাইলে ওই বাড়ি থেকে তাদের বের করে দেয়।

তিনি আরও বলেন, তখন তাদের স্থান হয় আমার বাড়ি লক্ষ্মীপুর দিঘীপাড়া গ্রামে। এর পরে আমার মেয়ে তার সন্তান রনিকে আমার বাড়িতে রেখে কাউকে কিছু না বলে চলে যায়। পরে জানতে পারি, সে ভারতে চলে গেছে। বাবা-মায়ের এনআইডি কার্ড না থাকায় তার প্রতিবন্ধী কার্ডও করতে পারিনি। রনির বাবার বাড়িতে আইডি কার্ড আনতে গেলে তারা কার্ড না দিয়ে তাড়িয়ে দেয়। তার কার্ডটাও আর করা হলো না। এমনই জীবন আমাদের। তাই বাবা-মা হারা প্রতিবন্ধী এতিম ছেলেটাকে নিয়ে ভিক্ষায় বের হইছি। রনি হাঁটতেও পারে না। তাকে নিয়ে বেড়াতে অনেক কষ্ট হয় আমার। আমার স্বামীও বেঁচে নেই, ২০ বছর আগে মারা গেছে। অভাবী সংসার আমার।

প্রতিবন্ধী রনির চলার পথে সাহায্য করা পিসির ছেলে বর্ষণ (১০) বলে, রনি নিজে হাঁটা-চলা করতে না পারার কারণে কাঠের বাতা দিয়ে ফ্রেম তৈরি করে তিনটি বিয়ারিং লাগিয়ে একটি গাড়ি তৈরি করেছি। রনিকে ওখানে বসিয়ে পেছন থেকে আমি ঠেলা দিয়ে এখানে-সেখানে ভিক্ষা করতে নিয়ে যাই। বাড়ি থেকে বাজার প্রায় ৪ কিলোমিটার রাস্তা ঠেলে ওকে আনতে আমার খুব কষ্ট হয়। একটি হুইল চেয়ার হলে ভালো হয়। প্রতিবন্ধী রনি মুরমু ভাঙা ভাঙা গলায় বলে, আমি হাঁটতে পারি না, তাই স্কুলেও যেতে পারি না। আমি পড়ালেখা করতে চাই। একটা হুইল চেয়ার পেলে আমি স্কুলে যেতে পারব। সে আরও জানায়, আমরা গরিব মানুষ, অনেক কষ্ট করে চলি। তাই সরকার ও সমাজের বৃত্তবান মানুষের কাছে রনির আবদার একটি হুইল চেয়ার ও প্রতিবন্ধী কার্ড। এগুলো পেলে সে স্কুলে ঠিকমতো যেতে পারবে।

এ বিষয়ে শুক্রবার (১৩ সেপ্টেম্বর) দুপুর ১২টায় উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা দেলোয়ার হোসেনের সঙ্গে তার মোবাইল ফোনে কথা হলে তিনি জানান, আমি একটা ট্রেনিংয়ে রাজশাহীতে আছি। সামনের সপ্তাহে ছেলেটিকে আমার অফিসে আসতে বলেন, আমি সাধ্যমতো চেষ্টা করব।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

মাভাবিপ্রবির নতুন উপাচার্য ঢাবি অধ্যাপক আনোয়ারুল আজীম

শাবিপ্রবির নতুন ভিসি অধ্যাপক ড. এ এম সারওয়ারউদ্দিন চৌধুরী

নরসিংদীর ‘আটগ্রাম ক্রিকেট টুর্নামেন্ট’ এর ফাইনাল খেলা ২১ সেপ্টেম্বর

কাজী নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন ভিসি ঢাবি অধ্যাপক

ইসরায়েলকে ফিলিস্তিন ছাড়তে আলটিমেটাম দেবে জাতিসংঘ

জাবিতে নতুন দুই প্রোভিসি ও ট্রেজারার নিয়োগ 

অনুমতি ছাড়া ঢাবি প্রশাসনের কারও নাম ব্যবহার না করার আহ্বান

নিয়মিত প্রাইভেট কারে গাঁজা পাচার করে তারা

এক্সিকিউটিভ পদে নিয়োগ দিচ্ছে ভিভো

‘জামায়াতের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য গণমানুষের কল্যাণ’

১০

নতুন ভিসি পেল বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়

১১

‘তুমি না আমার বিরুদ্ধে নিউজ করছো’

১২

আন্দোলনে ২ হাজার মানুষকে খুন করেছে হাসিনা : মির্জা ফখরুল

১৩

চবির নতুন ভিসি অধ্যাপক ইয়াহইয়া

১৪

জবির নতুন ভিসি ড. মুহাম্মদ রেজাউল

১৫

যেভাবে দেখবেন শান্ত-রোহিতদের লড়াই

১৬

আদালতে যা বললেন বিচারপতি মানিক

১৭

পুলিশ সদস্যের সঙ্গে ‘পালাল’ রোহিঙ্গা কিশোরী

১৮

দুবাই থেকে চট্টগ্রামে ঋণখেলাপি স্বামী-স্ত্রীকে ফিরিয়ে আনার নির্দেশ

১৯

কলাপাড়ায় ৭ দফা দাবিতে মানববন্ধন

২০
X