নীলফামারীর ডোমারে ২০১৫ সালে বিএনপির নেতাকর্মীকে নির্যাতন ও দশ লাখ টাকা চাঁদা দাবিসহ মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানির অভিযোগে সাবেক সংসদ সদস্য আফতাব উদ্দিন সরকার ও ডোমার থানার সাবেক ওসি মোয়াজ্জেম হোসেনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয়েছে।
ঘটনার নয় বছর ছয় মাস পর বৃহস্পতিবার (১২ সেপ্টেম্বর) দুপুরে জেলা জজ আদালতে (ডোমার) মামলাটি করেন ডোমার উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মাসুম বিন আমিন সুমন।
মামলায় সাবেক সংসদ সদস্য আফতাব উদ্দিন সরকার ও ডোমার থানার সাবেক ওসি মোয়াজ্জেম হোসেন ছাড়াও অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে পুলিশের ৪০ সদস্যকে।
বাদীর আইনজীবী আবু মো. সোয়েম বিষটি নিশ্চিত করে বলেন, আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে এফআইআর হিসেবে গ্রহণ করতে ডোমার থানার ওসিকে নির্দেশ দিয়েছেন।
আদালতে করা এজাহারের বরাত দিয়ে বাদীর আরেক আইনজীবী আসাদুজ্জামান রিনো বলেন, মামলার বাদী মাসুম বিন সুমন ২০১৫ সালে জাতীয়তাবাদী যুবদল ডোমার উপজেলা যুগ্ম আহ্বায়ক ছিলেন। ওই বছরের ১৪ মার্চ সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে বাদীসহ যুব দলের আরও চার কর্মী শহরের কৃষি ব্যাংক মোড়ে একটি চায়ের দোকানে চা পান করছিলেন। এ সময় ডোমার থানার ওসি মোয়াজ্জেম হোসেনের নেতৃত্বে ৩০ থেকে ৪০ পুলিশ সদস্য কোনো কারণ ছাড়া বাদীকে চায়ের দোকান থেকে টেনেহিঁচড়ে বের করে উপস্থিত জনতার সামনে লাঠি ও বন্দুকের বাঁট দিয়ে পিটিয়ে মাটিতে ফেলে দেয়। এতে বাদীর সঙ্গে থাকা যুবদলের ওই চার কর্মী প্রতিবাদ জানালে তাদেরও লাঠি ও বন্দুকের বাঁট দিয়ে পিটায়।
এরপর বাদীসহ যুবদলের ওই চার কর্মীকে পুলিশ ভ্যানে করে থানায় নিয়ে যায় ওসি মোয়াজ্জেমের নেতৃত্বাধীন পুলিশ সদস্যরা। এরপর থানায় নিয়ে গিয়ে আবারও তাদের ওপর শারীরিক নির্যাতন চালায়। একপর্যায়ে নীলফামারী-১ ( ডোমার-ডিমলা) আসনের আওয়ামী লীগ দলীয় সংসদ সদস্য আফতাব উদ্দিন সরকারের নির্দেশে বিএনপিকে নিশ্চিহ্ন করাসহ বাদীর বুকে বন্দুক ঠেকিয়ে ক্রসফায়ারে মেরে ফেলার হুমকি দিয়ে তার কাছ থেকে ১০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন ওসি মোয়াজ্জেম হোসেন।
বাদী টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে পরের দিন দুটি মিথ্যা ও গায়েবি মামলা দিয়ে আদালতের মাধ্যমে বাদী ও তার চার সহযোগীকে কারাগারে পাঠায় ওসি মোয়াজ্জেম হোসেন।
ঘটনার সাড়ে নয় বছর পর মামলার দায়েরের কারণ সর্ম্পকে জানতে চাইলে মামলার বাদী মাসুম বিন আমিন সুমন বলেন, ২০১৫ থেকে ২০২৪ সালের ৪ আগস্ট পর্যন্ত দেশে আইনের শাসন ছিল না। অবৈধভাবে সরকারের দায়িত্বে ছিল আওয়ামী লীগ। ওই সময় আফতাব উদ্দিন ও ওসির বিরুদ্ধে মামলা তো দূরের কথা তাদের বিরুদ্ধে কথা বললেই তারা আমাকে প্রাণে মেরে ফেলত। তাই সে সময় মামলা করতে পারিনি। এখন দেশ স্বাধীন হয়েছে, আইনের শাসন প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এজন্য আমি মামলা করেছি। সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্ত হলে আমি ন্যায়বিচার পাব।
নীলফামারীর ডোমার থানার পরিদর্শক (ওসি) মো. মহসিন আলী জানান, এখন পর্যন্ত আদালত থেকে কোনো আদেশ আমাদের কাছে আসেনি।
মন্তব্য করুন