ইউপি চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতার বিরুদ্ধে তালিকায় ভুয়া নাম দিয়ে ভিজিএফ (ভায়াবিলিটি গ্যাপ ফান্ডিং)-এর সাড়ে ৪৩ মণ চাল আত্মসাতের ঘটনা তদন্তে সত্য প্রমাণিত হয়েছে। এ বিষয়ে ভিজিএফের চাল আত্মসাতের অভিযোগ তদন্তে গঠিত কমিটি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর লিখিত প্রতিবেদন দাখিল করেছেন।
অভিযুক্ত আ.লীগ নেতার নাম আতাউর রহমান মিন্টু। তিনি কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার বড়ভিটা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের বন ও পরিবেশবিষয়ক সম্পাদক।
জানা যায়, গত ঈদুল আজহা উপলক্ষে উপজেলার বড়ভিটা ইউনিয়নের হতদরিদ্র পরিবারের মধ্যে ভিজিএফের ১০ কেজি করে চাল বিতরণের জন্য ৬ হাজার ৩৭৫ উপকারভোগীর তালিকা প্রণয়ন করা হয়। ইউপি সদস্য ও সংরক্ষিত মহিলা সদস্যরা নিজ নিজ এলাকার হতদরিদ্র মানুষের নাম এ তালিকায় অন্তর্ভুক্তির জন্য দেন।
কিন্তু চাল বিতরণের সময় ইউপি সচিবের কাছ থেকে উপকারভোগীর তালিকা সংগ্রহ করে ইউপি সদস্যরা দেখতে পান তালিকায় অন্তর্ভুক্ত অনেক উপকারভোগীই তাদের অপরিচিত। তা ছাড়া তালিকার অনেক জায়গায় একই ব্যক্তির নাম বারবার এবং মৃত ব্যক্তির নামও রয়েছে। এ অবস্থায় পরিষদের সব ইউপি সদস্য বিতর্কিত তালিকা দিয়ে চাল বিতরণে আপত্তি জানান। কিন্তু চেয়ারম্যান আতাউর রহমান মিন্টু ইউপি সদস্যদের আপত্তি উপেক্ষা করে বিতর্কিত তালিকা দিয়েই উপকারভোগীদের মধ্যে চাল বিতরণ করেন এবং ভুয়া নামে ইস্যু করা স্লিপের চালগুলো নিজের লোক দিয়ে তুলে আত্মসাৎ করেন।
পরে গত ১২ জুন ওই ইউনিয়ন পরিষদের ১১ জন ইউপি সদস্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে তালিকায় ভুয়া নাম দিয়ে ভিজিএফের চাল আত্মসাতের লিখিত অভিযোগ দেন। পরে ইউপি সদস্যদের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে উপজেলা প্রশাসন ঘটনা তদন্তে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তাকে দায়িত্ব দেন।
এ প্রসঙ্গে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা সবুজ কুমার গুপ্ত বলেন, দীর্ঘ তদন্তে চেয়ারম্যান আতাউর রহমান মিন্টু কর্তৃক তালিকায় ভুয়া নাম ব্যবহার করে ১.৭৪০ মেট্রিক টন বা সাড়ে ৪৩ মণ ভিজিএফের চাল আত্মসাতের সুস্পষ্ট প্রমাণ পাওয়া গেছে। দায়ী ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে চেয়ারম্যান আতাউর রহমান মিন্টুর মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করা হলেও কল রিসিভ হয়নি।
ফুলবাড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রেহেনুমা তারান্নুম বলেন, গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন জেলা প্রশাসক বরাবর পাঠানো হয়েছে। শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
মন্তব্য করুন