খাগড়াছড়ির মাটিরাঙ্গায় তাইন্দং উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মো. রেজাউল করিম সরকারের পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন শিক্ষার্থীরা।
বৃহস্পতিবার (১২ সেপ্টেম্বর) বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা বিদ্যালয় থেকে মিছিল করে তাইন্দং বাজারে গিয়ে সমাবেশ করে। এ সময় বিদ্যালয়ের বর্তমান শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আন্দোলনে যোগ দেন ওই স্কুলের সাবেক শিক্ষার্থীরা।
আর্থিক অনিয়ম, অতিরিক্ত অর্থ আদায়, স্বেচ্ছাচারিতা, রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে এক দশকেরও বেশি সময় ধরে বিদ্যালয়ের কমিটি না করা ও সহকারী প্রধান শিক্ষক হয়েও ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের পদ আঁকড়ে ধরে রাখার অভিযোগ রয়েছে ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে।
এ সময় শিক্ষার্থীরা ‘এক দফা এক দাবি-রেজাউল স্যারের পদত্যাগ’ ও ‘রেজাউল স্যার স্বৈরাচার-এ মুহূর্তে স্কুল ছাড়’-সহ নানা স্লোগানে প্রধান শিক্ষকের পদত্যাগের দাবি জানান।
শিক্ষার্থী নুসরাত জাহান ইরা জানান, আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে নানা অনিয়ম দুর্নীতি শুরু করেন মো. জোউল করিম সরকার। শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ফিসহ বিনা রশিদে অর্থ আদায়, ভুয়া বিল করে টাকা আত্মসাৎসহ নানা অনিয়ম দুর্নীতি করেন তিনি।
সাবেক শিক্ষার্থী মো. শাহিন আলম বলেন, নিজের ক্ষমতাকে কুক্ষিগত করার লক্ষ্যে এক দশকের ও বেশি সময় ধরে বিদ্যালয়ের নিয়মিত কমিটি না করা, প্রধান শিক্ষক নিয়োগ না দেওয়া, ক্ষমতার অপব্যবহার করে অভিভাবকদের সঙ্গেও দুর্ব্যবহার করেন তিনি।
স্থানীয় শিক্ষার্থী অভিভাবক মো. নুরুল ইসলাম বলেন, ওই শিক্ষক প্রায়ই অভিভাবকদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করতেন। অতিরিক্ত ফি নেওয়া তার অভ্যাসে পরিণত হয়েছে। রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে তিনি গত ১৫ বছর ধরেই বিদ্যালয়কে নিজের পৈতৃক প্রতিষ্ঠানে পরিণত করেছেন। তার ক্ষমতার কাছে গত ১৫ বছরে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরাও জিম্মি ছিল।
ওই বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক (ইংরেজি) মাকসুদুর রহমান কালবেলাকে বলেন, দীর্ঘ বছরেও বিদ্যালয়ে নিয়মিত কমিটি না করে নিজের একক আধিপত্য বিস্তার করেছেন তিনি। কোনো কাজে শিক্ষকদের সঙ্গে পরামর্শ করার প্রয়োজন মনে করতে না।
তাইন্দং উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত শিক্ষক মো. রেজাউল করিম সরকার কালবেলাকে বলেন, আমার বিরুদ্ধে অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগের বিষয়টি একেবারেই মিথ্যা। ব্যক্তি আক্রোশে তার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে।
মাটিরাঙ্গা উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসের একাডেমিক সুপারভাইজার মো. শরীফুল ইসলাম বিদ্যুৎ কালবেলাকে বলেন, বিষয়টি আমি অবগত হয়ে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। কোনো অনিয়ম থাকলে তদন্ত সাপেক্ষে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মন্তব্য করুন