রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে ইউটিউব দেখে মাচা পদ্ধতিতে গাছ আলু চাষে ভাগ্য বদলেছে কৃষক হুমায়নের। সাধারণ আলুর চেয়ে অধিক পুষ্টিগুণে ভরপুর এ আলু চাষ করে আর্থিকভাবে অধিক লাভবান হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন অনেকে। আর বাজারে এর চাহিদা থাকায় অনেকেই এই আলু চাষে আগ্রহী হয়ে উঠছেন বলে জানিয়েছেন গোয়ালন্দ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. খোকন উজ্জামান।
জানা যায়, মাচা পদ্ধতিতে গাছ রোপণের ৩ মাস পর থেকেই আলু ধরতে শুরু করে। গাছের কাণ্ড, মূল, এমনকি মাটির নিচেও আলু হয়ে থাকে। প্রায় সারা বছরই ফল দেয় গাছটি। একেকটা গাছে ২ থেকে ৪ কেজি পর্যন্ত আলু হয়। প্রথম দেখায় মনে হতে পারে এটি পানের বর। আসলে তা নয়।
আর এ গাছ আলু চাষে সফলতার স্বপ্ন দেখছেন রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার তোরাপ শেখের পাড়া এলাকার কৃষক ও তরুণ কৃষি উদ্যোক্তা হুমায়ন আহমেদ। ব্যাপক হারে ফলন হওয়ায় অধিক লাভবান হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন তিনি। এখন তার এখানে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হয়েছে প্রায় বেশ কয়েকজনের।
কৃষি অফিস সূত্রে জান যায়, খাবারের সঙ্গে নিয়মিতভাবে এ আলু খেলে হার্ট ভালো থাকে এবং শরীরে ক্যালসিয়ামের ঘাটতি পূরণ হয়। এ আলুর ফলন সাধারণ আলুর চেয়ে দেড় থেকে দুই গুণ বেশি। আর নতুন পদ্ধতিতে এ আলুর চাষ প্রতিদিনই বিভিন্ন অঞ্চল থেকে দেখতে আসছেন বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ। দেখতে আসা অনেকেই গাছ আলু চাষে নতুন করে আগ্রহ দেখাচ্ছেন। উপজেলা কৃষি অফিস কালবেলাকে আরও জানায়, কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া এলাকা থেকে এ বীজটা সংগ্রহ করা হয়েছে। এ বীজের মাধ্যমে বর্তমানে এ উপজেলার অনেক কৃষকই গাছ আলু চাষ করেছেন।
পাষাণ ফকীর নামে এক ব্যক্তি কালবেলাকে বলেন, আমার বয়স প্রায় ৬০ বছরেরও বেশি। তবে এ গাছ আলু চাষ আমি আগে কখনো দেখিনি।
কৃষক ও তরুণ উদ্যোক্তা, হুমায়ন আহমেদ কালবেলাকে বলেন, ইউটিউবে একটি প্রতিবেদন দেখে আমি ২০২৩ সালে পরীক্ষামূলকভাবে গাছ আলু চাষ করেছিলাম। চলতি বছর বাণিজ্যিকভাবে কৃষি অফিসের পরামর্শ নিয়ে প্রায় ৫০ শতাংশ জমিতে মাচা পদ্ধতিতে চাষ করেছি। আর বাজারের আলুর চেয়ে আমার গাছ আলুর চাহিদা রয়েছে ব্যাপক। একেকটা গাছে ৮ থেকে ১০ কেজির মতো আলু আমি পেয়েছি। আশা করছি, আমি এ বছর অধিক লাভবান হবো।
গোয়ালন্দ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. খোকন উজ্জামান কালবেলাকে জানান, বাজারে গাছ আলুর চাহিদা থাকায় অনেকে এটি চাষে আগ্রহী হচ্ছেন। আমরা কৃষি অফিসের পক্ষ থেকে সবসময়ই কৃষকদের পরামর্শ ও প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকি। এ উপজেলায় গাছ আলু চাষে অধিক লাভবান হচ্ছেন কৃষকরা।