দিনাজপুর প্রতিনিধি
প্রকাশ : ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০:২৪ পিএম
আপডেট : ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০:৫০ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

‘আমি সন্তান বিক্রি করিনি’

দিনাজপুরে শিশু সন্তানের মাঝে আলোচিত রশিদ-রোকেয়া দম্পতি। ছবি : কালবেলা
দিনাজপুরে শিশু সন্তানের মাঝে আলোচিত রশিদ-রোকেয়া দম্পতি। ছবি : কালবেলা

দিনাজপুরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকোলে দিনমজুর আব্দুর রশিদ গুলিবিদ্ধ হয়ে হাসপাতালের বেডে যখন ছটফট করছে তখন স্ত্রী রোকেয়া বেগমের গর্ভে জন্ম নেয় একটি শিশু সন্তান। মাত্র ৩ দিনের শিশু সন্তানকে তুলে দেন কুড়িগ্রামের এক নিঃসন্তান আত্মীয়ের কাছে। অবশেষে সন্তানকে কোলে ফিরে পেয়েছেন রশিদ-রোকেয়া দম্পতি। সন্তান ফিরে পেয়ে তারা জানালেন, একটু ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে, আসলে আমরা সন্তান বিক্রি করিনি। আমাদের অনিশ্চিত জীবনে সন্তানের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করেই কোলের সন্তানকে সন্তানহীন আত্মীয়ের হাতে তুলে দিয়েছিলাম।

মঙ্গলবার (১০ সেপ্টেম্বর) দুপুরে শহরের রাজবাড়ী কাটাপাড়ায় এসব কথা বলেন আবদুর রশিদ ও রোকেয়া বেগম দম্পতি।

এর আগে সোমাবার (৯ সেপ্টেম্বর) রাতে প্রশাসনিক সহযোগিতায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতা শিশুটিকে কুড়িগ্রাম থেকে নিয়ে এসে বাবা-মায়ের কোলে তুলে দেয়।

মঙ্গলবার দুপুরে শিশুটির মা রোকেয়া বেগম বলেন, আমি সন্তান বিক্রি করিনি। আমাদের অনিশ্চিত জীবনে সন্তানের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করেই সন্তানহীন এক নিকট আত্মীয়ের হাতে তুলে দিয়েছিলাম। আর তারা আমার স্বামীর চিকিৎসার জন্য আত্মীয় হিসেবে মানবিক কারণে ২৫ হাজার টাকা দিয়েছিলেন। কিন্তু বিষয়টি আমরা সন্তান বিক্রি করেছি বলে খবর ছড়িয়ে পড়ে। এতে করে প্রশাসন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতা, হাসাপাতাল কর্তৃপক্ষ সবাই চাপের মধ্যে পড়ে যায়। তবে যদি ছাত্ররা আগে জানতো তাহলে চিকিৎসার কোনো সমস্যা হতো না।

সন্তানটির বাবা গুলিবিদ্ধ আব্দুর রশিদ বলেন, হাসাপাতালে ভর্তি হওয়ার পর আমরা আতঙ্কে হাসাপাতাল ছেড়ে দেই। আমার কারণে কেউ আমাদের বিষয়টি জানতে পারেনি। পরে যখন সবাই জেনেছে, তখন থেকে সহযোগীতা পেয়ে আসছি। আমরা পরিবারে আমার স্ত্রী, এক মেয়ে ও আমার মাসহ চার জন সদস্য। যার মধ্যে আমি একাই উপার্জন করতাম। আমি যখন গুলিবিদ্ধ হলাম তার পরে এই সন্তানটির জন্ম হয়। সে যেন অন্তত ভালোভাবে মানুষ হতে পারে তাই এক সন্তানহীন আত্মীয়ের হাতে তুলে দেই। পরে তারা আমাদেরকে তারা ২৫ হাজার টাকা সহায়তা করে। আর এটাই ছড়িয়ে যায় আমরা টাকার বিনিময়ে সন্তান বিক্রি করেছি।

এর আগে গত ৪ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীকে দিনাজপুর ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসাপাতালে চেকআপের জন্য নিয়ে আসার সময় গুলিবিদ্ধ হন আবদুর রশিদ।

দিনাজপুর এম আবদুর রহিম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. এটিএম নুরুজ্জামান জানান, এখন পর্যন্ত বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে আহত ১৮২ জনের চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।

দিনাজপুর কোতোয়ালি থানার ওসি ফরিদ হোসেন বলেন, প্রশাসনিক সহযোগিতায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতা শিশুটিকে কুড়িগ্রাম থেকে নিয়ে এসে বাবা-মার কোলে তুলে দিয়েছে। জেলা প্রশাসক, সদর ইউএনও এবং এসিল্যান্ড বিষয়টি তদারকি করছেন। পরিবারটিকে সার্বিক সহযোগিতা করবেন তারা।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

দ্বিতীয় সেশনেও টাইগারদের দাপট

ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের অস্তিত্ব রক্ষায় ৮ দফা বাস্তবায়নের দাবি ঐক্য পরিষদের

ভিসার মেয়াদ শেষ আজ, কী ঘটবে শেখ হাসিনার ভাগ্যে

লক্ষ্মীপুরে পিটিআই প্রশিক্ষকের অপসারণের দাবিতে বিক্ষোভ

সালমানকে নিয়ে যা বললেন শাবনূর

ট্রাম্পের তথ্য হ্যাক করে বাইডেনকে দিয়েছে ইরান!

শেষ ম্যাচে ৮ উইকেটের বড় জয় বাংলাদেশের

নামাজ পড়ে বাসায় যাওয়া হলো না পুলিশ সদস্য জহিরুলের

বিদেশি শিক্ষার্থী-কর্মীদের কানাডার দুঃসংবাদ

পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় ঢাবি প্রশাসনের মামলা

১০

জবির নতুন রেজিস্ট্রার অধ্যাপক শেখ গিয়াস উদ্দিন

১১

ঢাবিতে মব জাস্টিসের প্রতিবাদে ‘ব্রিং ব্যাক জাস্টিস’ কর্মসূচি

১২

ঢাবিতে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় জড়িতদের পরিচয় মিলল

১৩

আ.লীগ নেতা তুষার কান্তি মন্ডল ৭ দিনের রিমান্ডে

১৪

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় দুই গ্রামবাসীর সংঘর্ষে আহত ১৫

১৫

ঢাবি ও জাবিতে ‘পিটিয়ে হত্যা’ দুঃখজনক : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

১৬

জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে সম্প্রদায়িক সহিংসতার তদন্ত দাবি ঐক্য পরিষদের

১৭

ঢাবির হলে পিটিয়ে হত্যা, তদন্তে প্রত্যক্ষদর্শীদের সহায়তার আহ্বান

১৮

জাবিতে ছাত্রলীগ নেতা হত্যা নিয়ে আ.লীগের বিবৃতি

১৯

গ্যাংস্টারের স্ত্রী পরী মণি 

২০
X