বগুড়ায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে সদর উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক মিজানুর রহমানকে (৪০) কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে।
সোমবার (৯ সেপ্টেম্বর) রাত ৯টার দিকে ঢাকা-রংপুর মহাসড়কে গোকুল ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) সংলগ্ন মাজারের কাছে এ ঘটনা ঘটে।
গোকুল ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও ইউনিয়ন যুবদলের সদ্য বহিষ্কৃত আহ্বায়ক সুমন আহমেদ (বিপুল) এ হামলায় নেতৃত্ব দেন বলে নিহত মিজানুরের স্বজনরা অভিযোগ করেছেন।
এদিকে মিজানকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় জড়িত সন্দেহে লেদু (৩৫) নামে এক ব্যক্তিকে পিটুনি দেয় নিহত মিজানুরের সমর্থকরা। গুরুতর আহত লেদুকে সেনা বাহিনী ও পুলিশ সদস্যরা উদ্ধার করে শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। রাত ১১টার দিকে হাসপাতালে লেদুর ওপর আবারও হামলা করেন স্বেচ্ছাসেবক দলের কর্মী-সমর্থকরা। এতে আহত লেদুর মৃত্যু হয়।
নিহত মিজানুর রহমান উপজেলার গোকুল উত্তরপাড়ার আফসার আলীর ছেলে। অন্যদিকে পিটুনিতে নিহত লেদুর বাড়িও গোকুল উত্তরপাড়ায়। তিনি যুবদল নেতা সুমনের চাচাতো ভাই ও যুবদলের কর্মী।
বগুড়া সদর থানার ওসি সাইহান ওলিউল্লাহ কালবেলাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
স্থানীয়রা জানান, সোমবার রাতে মিজান তার কয়েকজন বন্ধুর সঙ্গে গোকুল বন্দরে গোডাউন এলাকায় গল্প করছিলেন। রাত সোয়া ৯টার দিকে ১০/১২টি মোটরসাইকেলে একদল দুর্বৃত্ত সেখানে যায়। তারা মিজানকে ধরে ধারালো অস্ত্র দিয়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে মহাস্থানের দিকে চলে যায়। মিজানকে উদ্ধার করে প্রথমে টিএমএসএস মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়।
অবস্থার অবনতি ঘটলে বগুড়া শজিমেক হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন তাকে। এদিকে হামলার সময় মিজানের সঙ্গে থাকা দলের কর্মীরা হামলাকারীদের মধ্যে লেদু নামের একজনকে মারধর করে। পরে পুলিশ গিয়ে আহত লেদুকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য শজিমেক হাসপাতালে নেয়। সেখানে নেওয়ার পর মিজানের লাশের কাছে থাকা দলের কর্মী-সমর্থকরা লেদুর ওপর আবারো হামলা করে। এতে হাসপাতালেই মারা যায় লেদু।
নিহত মিজানের ঘনিষ্ঠজনরা জানান, ২০১৮ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি গোকুল ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম-আহ্বায়ক সনি রহমান খুন হন। সনি খুনের সঙ্গে জড়িত যুবদলের বহিষ্কৃত নেতা সুমন আহমেদ বিপুলের নেতৃত্বে মিজানকে খুন করা হয়। সনি খুনের পর থেকে মিজানের সঙ্গে বিপুলের দ্বন্দ্ব চলে আসছিল।
তারা আরও জানান, ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর বিপুল বিভিন্নস্থানে চাঁদাবাজিতে জড়িয়ে পড়েন। এ কারণে বিপুলকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়। এ বহিষ্কারের পেছনে মিজানের হাত রয়েছে বলে ধারণা তার। এ কারণেই ক্ষুদ্ধ হয়ে মিজানকে খুন করা হয় বিপুলের নেতৃত্বে।
মেডিকেল পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক মিলাদুন্নবী বলেন, মর্গে মিজান ও লেদুর লাশ রয়েছে। মিজানকে কুপিয়ে এবং লেদুকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে।
বগুড়া সদর থানার ওসি সাইহান ওলিউল্লাহ কালবেলাকে বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, মিজানের লাশ উদ্ধার করে ওই হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে। ঘটনাস্থলে পুলিশের একাধিক দল কাজ করছে। হত্যাকাণ্ডের কারণ অনুসন্ধানের পাশাপাশি জড়িতদের চিহ্নিত করার চেষ্টা চালানো হচ্ছে।
মন্তব্য করুন