অফিস বা বাড়ির আঙিনায় সৌন্দর্য বাড়িয়ে তুলতে এখন দিন দিন জনপ্রিয়তা বাড়ছে ‘লন কার্পেট’ ঘাসের। আর সেই ঘাস বাণিজ্যিকভাবে চাষ করে সফলতা পেয়েছেন অনেকে। এবার পতিত জমিতে বাণিজ্যিকভাবে এই ঘাস চাষ করে প্রতি বছরে ৬ লাখ টাকা আয় করছেন নেত্রকোনার কলমাকান্দা উপজেলার এক কৃষক।
উপজেলার কৈলাটি ইউনিয়নের সেহড়াউন্দ গ্রামের বাসিন্দা সাইকুল ইসলাম (৪৪)। এক সময় কৃষি কাজ করতেন তিনি। ২০২০ সালে ঢাকায় কাজ করতে গিয়ে বিভিন্ন স্থানে এই ‘লন কার্পেট’ ঘাস দেখতে পান তিনি। সেখান থেকে বাড়ি ফিরে ঘাস চাষ করার কথা পরিকল্পনা করেন। এরপর এক লাখ টাকা খরচে ৮ শতাংশ জমি ইজারা নিয়ে পরীক্ষামূলকভাবে ঘাসের চাষ শুরু করেন তিনি। এতে বাণিজ্যিক সফলতা পেয়েছেন। বাজারজাত করে এক বছরেই সফলতার মুখ দেখেছেন তিনি। এখন বর্তমানে ৭০ শতাংশ জমিতে এই ‘লন কার্পেট’ ঘাস চাষ করছেন। এতে কর্মসংস্থান হয়েছে স্থানীয় যুবকদের। তাদের জনপ্রতি দৈনিক হাজিরা ৫০০ টাকা। সব মিলিয়ে তার প্রতি মাসে খরচ হয় ৪০-৫০ হাজার টাকা।
কৃষক সাইকুল ইসলাম কালবেলাকে বলেন, ঢাকায় কাজ করতে গিয়ে ‘লন কার্পেট’ ঘাস দেখি। পরে চাষ করার কথা চিন্তা করি। চাষের পদ্ধতির খোঁজখবর নেই। বাড়ি ফিরে ভালো মানের জমি ইজারা নিয়ে বীজ সংগ্রহ করে ৮ শতাংশ জমিতে পরীক্ষামূলক চাষ করি। বর্তমানে ৭০ শতাংশ জমিতে এই ঘাসের চাষবাদ চলছে। ইতোমধ্যে, ঢাকা ও খুলনায় এ ঘাস বিক্রি হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, প্রথম দিকে প্রতিবেশীরা পাগল বলেছে। কিন্তু তিনি থেমে যাননি। বর্তমানে স্থানীয় ১৫ থেকে ১৬ যুবক কাজ করছেন। এতে যুবকদের বেকারত্বও দূর হয়েছে। আর নিজেও স্বাবলম্বী হচ্ছি। এই ‘লন কার্পেট’ ঘাস দূর-দূরান্ত থেকে সৌখিন মানুষ কিনে নিয়ে যাচ্ছেন। এই ঘাস প্রতি স্কয়ার ফিট ৮০ টাকায় বিক্রি করছি। প্রতি বছর শ্রমিক ও পরিচর্যা খরচ বাদ দিয়ে আয় থাকে প্রায় ৬ লাখ টাকা।
স্থানীয় যুবক আবু রায়হান কালবেলাকে বলেন, ঘাস বিক্রি করা যায় সেটা জানা ছিল না। ফাঁকা পড়ে থাকা জমিতে এখন ঘাস চাষ হচ্ছে। স্থানীয় লোকজন সেখানে কাজ করে আয় করতে পারছেন। দূরে কোথাও যেতে হচ্ছে না।
কলমাকান্দায় এই প্রথম ‘লন কার্পেট’ চাষ হয়েছে জানিয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা (ইউএনও) সাইফুল ইসলাম কালবেলাকে বলেন, কৃষক সাইকুল ইসলামের মতো কেউ এই ঘাস চাষ করতে চান, তাহলে সহযোগিতা করা হবে। এই ঘাস সৌন্দর্যবর্ধনের জন্য সৌখিন মানুষ কেনেন। আর কম খরচে বেশি লাভ পাওয়া যায়।
মন্তব্য করুন