মঙ্গলবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২ আশ্বিন ১৪৩১
পার্বতীপুর (দিনাজপুর) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১১:২৪ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

আবারও বন্ধ হলো বড়পুকুরিয়ার তাপবিদ্যুৎ উৎপাদন

বড়পুকুরিয়ার তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র। ছবি : কালবেলা
বড়পুকুরিয়ার তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র। ছবি : কালবেলা

উৎপাদন শুরুর দুই দিনের মাথায় আবারও বন্ধ হয়ে গেল দিনাজপুরের পার্বতীপুরে অবস্থিত দেশের অন্যতম উৎপাদনশীল কয়লা ভিত্তিক বড়পুকুরিয়া তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের কার্যক্রম।

সোমবার (৯ সেপ্টেম্বর) সকালে যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দিলে উৎপাদন বন্ধ করে দিতে বাধ্য হন কর্তৃপক্ষ। এতে বিদ্যুৎ বিভ্রাটের চরম শঙ্কায় পড়েছে উত্তরাঞ্চল।

জানা গেছে, বড়পুকুরিয়া খনি হতে উৎপাদিত কয়লা দিয়ে দীর্ঘদিন যাবৎ তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের উৎপাদন কার্যক্রম চালিয়ে আসছিল চীনা ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান হারবিন ইন্টারন্যাশনাল। পাঁচ বছরের চুক্তি মোতাবেক আগামী বছর তাদের মেয়াদ শেষ হতে চলেছে। চুক্তি অনুযায়ী এসময় উৎপাদন সচল রাখতে ছোট মেরামত ও যন্ত্রাংশ সরবরাহের কথা থাকলেও তা মানছেন না বলে অভিযোগ ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে।

বড়পুকুরিয়া তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের তিনটি ইউনিটের মধ্যে যান্ত্রিক ত্রুটি ও কয়লার খরচ বেশি হওয়ার কারণে দীর্ঘদিন যাবত বন্ধ ছিল দুটি ইউনিট। প্রতিটি ইউনিট সচল রাখতে প্রয়োজন দুটি করে ইলেক্ট্রো হাইড্রোলিক অয়েল পাম্প। যা ওই ইউনিটের জ্বালানী হিসেবে তেল সরবরাহের মাধ্যমে উৎপাদন কার্যক্রম সচল রাখে। কিন্তু ২০২২ সাল থেকেই তৃতীয় ইউনিটের দুটির মধ্যে একটি নষ্ট থাকায় যে কোনো সময় বন্ধের ঝুঁকি নিয়ে বিকল্প হিসেবে একটি ইলেক্ট্রো হাইড্রোলিক অয়েল পাম্প দিয়ে চলে আসছিল এর কার্যক্রম। ফলে মাঝে মধ্যেই যান্ত্রিকত্রুটির কারণে বন্ধ হতো তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের বিদ্যুৎ উৎপাদন।

সর্বশেষ চলতি মাসের ৭ তারিখ মেরামতের মাধ্যমে ইউনিটটি চালু করা হলে দুদিনের মাথায় সোমবার সকালে আবারও যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দিলে বন্ধ হয়ে যায় সব কার্যক্রম।

এ বিষয়ে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও তারা কথা বলতে রাজি হয়নি।

উল্লেখ্য, তৃতীয় ইউনিট থেকে বর্তমানে উৎপাদিত ১৯০ থেকে ২০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে সরবরাহ করা হচ্ছিল। এটি চালু রাখতে প্রতিদিন দুই হাজার ৩০০ মেট্রিক টন কয়লা লাগছে।

বড়পুকুরিয়ার তিনটি ইউনিটের মধ্যে ২ নম্বর ইউনিটটি ২০২০ সালের নভেম্বর থেকে বন্ধ হয়ে আছে। গেল মাসে তৃতীয় ইউনিট বন্ধ হওয়ায় বিদ্যুৎবিভ্রাট বেড়ে যায়। ইউনিট দুটি উৎপাদনে না থাকায় পার্বতীপুর উপজেলাসহ উত্তরাঞ্চলের ৮ জেলায় চরমভাবে বিদ্যুৎ সরবরাহে বিঘ্নিত হয়। ফলে বেড়েছে ঘন ঘন লোডশেডিং। এতে বিপযস্ত হয়ে পড়েছে জনজীবন।

এদিকে তৃতীয় ইউনিট চালুর পরই এক সপ্তাহের জন্য বন্ধ হয়ে গেছে ১২৫ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন ১ নম্বর ইউনিট। এই ইউনিটে প্রয়োজনীয় সংস্কারকাজ চলবে। ১ নম্বর ইউনিট থেকে উৎপাদন হতো ৬০-৬৫ মেগাওয়াট। ফলে কয়লার খরচ বেশি হতো।

সংশ্লিষ্ট সূত্রের দাবি, বড়পুকুরিয়া কয়লাখনি থেকে দৈনিক কয়লা সরবরাহ করা হয় প্রায় চার হাজার মেট্রিক টন। তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রটির তিনটি ইউনিট চালু রেখে স্বাভাবিক উৎপাদনের জন্য দৈনিক প্রায় ৫ হাজার ২০০ মেট্রিক টন কয়লার প্রয়োজন। তবে, এর আগে তিনটি ইউনিট একই সঙ্গে কখনই চালানো সম্ভব হয়নি।

তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের প্রধান প্রকৌশলী মো. আবু বক্কর সিদ্দিক বলেন, চীন থেকে মেশিন নিয়ে এলে উৎপাদন শুরু করা যাবে। এ জন্য সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলা হয়েছে। বিকল্প যন্ত্রাংশ দিয়ে এতদিন এ ইউনিট চালানো হয়েছে। সোমবার সকাল ৬টা ৬ মিনিটে যান্ত্রিকত্রুটি দেখা দিলে তা মেরামত করা হয়। এর পর বেলা ১১টার দিকে পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায় কার্যক্রম।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

হিজাব নিয়ে নতুন সিদ্ধান্ত নিল ইরান

বৃষ্টিতে ভেসে গেছে ৭ হাজার মাছের ঘের

উত্তরায় আন্দোলনে গুলিবর্ষণকারী দেলোয়ার গ্রেপ্তার

আয়নাঘর পরিদর্শনের ক্ষমতা পেল তদন্ত কমিশন

চাঁদাবাজির অভিযোগে বিএনপির সাবেক মেয়রকে শোকজ

গুলিবিদ্ধ যুবকের মামলায় আসামি শেখ হাসিনাসহ ১৭৯ জন

টঙ্গীতে বকেয়া বেতনের দাবিতে মহাসড়ক অবরোধ

উপড়ে পড়ল শতবছরের পুরোনো বটগাছ

মোজাম্মেল, শ্যামল ও শাহরিয়ার কবির ৭ দিনের রিমান্ডে

রাতে শুরু হচ্ছে নতুন ফরম্যাটের চ্যাম্পিয়ন্স লিগ

১০

নিম্নচাপ শেষে সাগরে ছুটছেন জেলেরা

১১

জামিন পেলেন সাবেক বিচারপতি মানিক

১২

সাবেক রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলামের ৫ দিনের রিমান্ড আবেদন

১৩

ঈদে মিলাদুন্নবী উদযাপনে যাওয়ার পথে দুর্ঘটনায় ৪০ মুসল্লি নিহত

১৪

বাবু, শাহরিয়ার ও শ্যামল দত্তকে ১০ দিনের রিমান্ড চায় পুলিশ

১৫

বৃষ্টির পরও বায়ুদূষণে ঢাকা তৃতীয়

১৬

আমুর দুই সহকারীসহ ৯৩ নেতাকর্মীর নামে মামলা

১৭

দুই দশকের মধ্যে ভয়াবহ বন্যার কবলে মধ্য ইউরোপ

১৮

৩০ কেজি গাঁজাসহ আটক যুবক

১৯

মধুসূদনের স্মৃতিবিজড়িত সেই কাঠবাদাম গাছটি উপড়ে গেছে

২০
X