চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে লোকলয় থেকে প্রায় ১৩ ফুট দৈর্ঘ্যর একটি অজগর সাপ উদ্ধার করা হয়েছে। সোমবার (৯ সেপ্টেম্বর) সকাল ৯টায় উপজেলার করেরহাট ইউনিয়নের ছত্তরুয়া এলাকা থেকে সাপটি উদ্ধার করে করেরহাট রেঞ্জের কর্মকর্তারা। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন করেরহাট রেঞ্জ কর্মকর্তা মো. তারিকুর রহমান।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সোমবার সকালে একটি গ্রামীণ সড়কের পাশে স্থানীয়রা একটি অজগর সাপ দেখতে পান। পরে স্থানীয়রা বিষয়টি করেরহাট রেঞ্জের কর্মকর্তাদের জানালে তারা সাপটি উদ্ধার করে নিয়ে যায়।
যোগাযোগ করা হলে করেরহাট রেঞ্জ কর্মকর্তা মো. তারিকুর রহমান কালবেলাকে বলেন, সোমবার সকালে অক্ষত অবস্থায় একটি অজগর সাপ উদ্ধার করা হয়। একইদিন সকাল ১১ টায় সাপটি করেরহাট সদর বিট এলাকার গহীন বনে সাপটি অবমুক্ত করা হয়েছে।
তিনি বলেন, সম্প্রতি বয়ে যাওয়া বানের পানিতে অজগরটি বন থেকে লোকালয়ে চলে আসবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। সাপটির দৈর্ঘ্য প্রায় ১৩ ফুট।
বাংলাদেশ অধিদপ্তরের বন্যপ্রাণী ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ কর্মকর্তা এবং তরুণ বন্যপ্রাণী গবেষক জোহরা মিলা জানান, অজগর নির্বিষ সাপ। এটি নিশাচর ও খুবই অলস প্রকৃতির, প্রয়োজন ছাড়া নড়াচড়াও করে না। এই প্রজাতিটি গাছে একাকী বাস করলেও শুধু প্রজননকালে জোড়া বাঁধে। সাধারণত মার্চ থেকে জুনের মধ্যে এদের প্রজননকাল। দেশের ম্যানগ্রোভ বন, ঘাসযুক্ত জমি, চট্টগ্রাম ও সিলেটের চিরসবুজ পাহাড়ি বনে এদের দেখা পাওয়া যায়। সাপটি সাধারণত মানুষের ক্ষতি করে না। খাদ্য হিসেবে এরা ইঁদুর, কচ্ছপের ডিম, সাপ, বন মুরগি, পাখি, ছোট বন্যপ্রাণী ইত্যাদি খায়। সাপটি নিজের আকারের চেয়েও অনেক বড় প্রাণী খুব সহজেই গিলে খেতে পারে।
জোহরা মিলা বলেন, চামড়ার জন্য সাপটি পাচারকারীদের লক্ষবস্তুতে পরিণত হয়েছে। ফলে আমাদের বনাঞ্চল থেকে এটি দিন দিন হারিয়ে যাচ্ছে। বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইন-২০১২ এর তফসিল-২ অনুযায়ী এ বন্যপ্রাণীটি সংরক্ষিত, তাই এটি হত্যা বা এর যে কোনো ক্ষতি করা শাস্তিযোগ্য অপরাধ।