নরসিংদী সফর করেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় নেতারা। তবে আন্দোলনে নিহতদের পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাৎ এবং সন্ত্রাস, চাঁদাবাজ ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে পূর্বনির্ধারিত মতবিনিময় সভার অনুষ্ঠানস্থলে যেতে পারেননি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক সারজিস আলম। সেখানকার সমন্বয়কদের দুই গ্রুপের মধ্যে মতৈক্য দেখা দেওয়ায় সমাবেশ না করেই সারজিস ও তার সফর সঙ্গীরা ঢাকায় ফিরেছেন। এ নিয়ে নরসিংদীর ছাত্র-জনতার মধ্যে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা সৃষ্টি হয়েছে।
সোমবার (৯ সেপ্টেম্বর) বিকেল ৫টার দিকে সমাবেশটি স্থগিত ঘোষণা করেন আয়োজকরা।
জানা গেছে, পূর্ব নির্ধারিত কর্মসূচি অনুযায়ী নরসিংদী শহরের সাটিরপাড়া কালী কুমার ইনস্টিটিউশন স্কুল অ্যান্ড কলেজ মাঠে বিকেলে ৩টা থেকে ৬টা পর্যন্ত সর্বস্তরের ছাত্র-জনতার সঙ্গে সভা হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু নরসিংদীর সমন্বয়কদের মধ্যে এই সভার ভেন্যু নিয়ে মতপার্থক্য সৃষ্টি হয়। এতে বিব্রত হয় কেন্দ্রীয় সমন্বয়করা। বিকেল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত তারা নরসিংদীতে অবস্থান করলেও শেষ পর্যন্ত এই সভাটি করা যায়নি।
তবে নরসিংদী ছাড়ার আগে কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক সারজিস আলম বলেন, আগামী ১০ দিনের মধ্যে যদি বিভাজন নিরসন হয়, তাহলে পরবর্তীতে এই সভা করা হবে। এর আগে তিনি নরসিংদী ক্লাবে সকাল ৯টা থেকে ১০ পর্যন্ত স্থানীয় সমন্বয়কদের সঙ্গে ঘরোয়া সভা এবং সাড়ে ১০টা থেকে সাড়ে ১১টা পর্যন্ত শহীদ ও আহতদের পরিবারের লোকজনদের সঙ্গে স্বাক্ষাৎ করেন ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় নেতারা। দুপুর ১২ টা থেকে ১টা পর্যন্ত স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে সভা অনুষ্ঠিত হয়। তবে এসব সভায় কোনো সংবাদকর্মীকে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি।
জানা যায়, সোমবার দুপুরের পর থেকেই ঘোষিত সমাবেশস্থল পৌর শহরের সাটিরপাড়া কালিকুমার ইনস্টিটিউট মাঠে শিক্ষার্থীসহ সব শ্রেণিপেশার মানুষদের উপস্থিতি বাড়তে থাকে। বিকাল ৪টা নাগাদ সেটি লোকে লোকারণ্য হয়ে ওঠে।
সভাস্থলে উপস্থিত হওয়া অনেকেই ক্ষুদ্ধ হয়ে বলেন, আমরা এই ভাদ্র মাসের প্রচণ্ড রোদ উপেক্ষা করে নরসিংদী জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে ছাত্র-জনতা উপস্থিত হয়েছি। কিন্তু বিকেলে পৌনে ৫টা পর্যন্ত অপেক্ষার পর আমরা জানলাম এ সভা বাতিল করা হয়েছে। এতে চরম হতাশ হয়েছি। এ জন্য তীব্র অসন্তুষ্ট প্রকাশ করছি।
শিক্ষার্থী আল আমিন জানান, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক সারজিস আলম নরসিংদীতে বিভিন্ন প্রোগ্রামের উদ্দেশে প্রথমে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের পাশে নরসিংদী ক্লাবে ওঠেন। সেখানে সমন্বয়কদের সঙ্গে কথা বলেন। এ সময় সমন্বয়কদের পৃথক দুটি গ্রুপ তৈরি হয়। একটি গ্রুপ সারজিস আলমকে সাটিরপাড়া কালী কুমার ইনস্টিটিউশন স্কুল অ্যান্ড কলেজ মাঠে প্রোগ্রাম করার প্রস্তাব দেন, অপর একটি গ্রুপ নরসিংদী সরকারি কলেজ মাঠে সভা করার কথা বলেন। একপর্যায়ে নরসিংদীর সমন্বয়কদের মধ্যে গ্রুপ সৃষ্টি হলে তিনি সাটিরপাড়ার সভাস্থলে না গিয়ে ঢাকায় ফিরে যান।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নরসিংদীর সমন্বয়ক ও স্বেচ্ছাসেবক মো. শাহজালাল রহমতুল্লাহ জানান, সারজিস ভাই চলে যাওয়ার আগে আমাকে বলেছেন, আগামী ১০ দিনের মধ্যে যদি দুগ্রুপ এক হয়ে ওনাকে জানাতে পারে তবেই তিনি নরসিংদীতে পুনরায় প্রোগ্রাম রাখবেন।
মন্তব্য করুন