সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুরে ভয়াবহ বিদ্যুৎ বিপর্যয় চলছে। ফলে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। ঘণ্টার পর ঘণ্টা লোডশেডিংয়ে ব্যবসা বাণিজ্যে ভাটা পড়েছে। একদিকে অসহনীয় বিদ্যুৎবিভ্রাট অন্যদিকে প্রচণ্ড তাপদাহে জনসাধারণ অবর্ণনীয় দুর্ভোগে পড়েছেন। মাত্রাতিরিক্ত লোডশেডিং হওয়ায় ক্ষোভ বিরাজ করছে উপজেলার বাসিন্দাদের মধ্যে।
উপজেলা বিদুৎ অফিস সূত্রে জানা গেছে, নিরবচ্ছিন্নভাবে বিদ্যুৎ দিতে প্রতিদিন গড়ে ৯ মেগাওয়াট বিদ্যুতের প্রয়োজন রয়েছে। এর মধ্যে জগন্নাথপুর ৩ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ পাচ্ছে। বিদ্যুৎ সরবরাহ অর্ধেকে কমিয়ে আনায় ঘাটতি পূরণের জন্য এক ঘণ্টা পরপর লোডশেডিং শুরু হয়। আমদানি করা বিদুৎ ও গ্যাসভিত্তিক কিছু প্ল্যান্টগুলোতে গ্যাস সংকটে উৎপাদন বন্ধ আছে। এই জন্য বেশি সমস্যা হচ্ছে। এ দিকে বিদ্যুৎবিভ্রাটে মোবাইল নেটওয়ার্কও ব্যাহত হচ্ছে। বিশেষ করে রবি ও এয়ারটেলের মতো মোবাইল কোম্পানির নেটওয়ার্ক থাকে না। বিদ্যুৎ না থাকলে অপারেটররা ২-৩ ঘণ্টা পর্যন্ত নিজেদের ব্যবস্থায় নেটওয়ার্ক চালাতে পারে, কিন্তু এর বেশি হলে সাইট সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। এতে করেও দেখা দেয় চরম ভোগান্তি। জগন্নাথপুর বাজারের ব্যবসায়ী সুজন আহমদ শুভ বলেন, প্রচণ্ড গরম আর বিদ্যুতের ভেলকিবাজিতে অতিষ্ঠ হয়ে ক্রেতারা বাজারে আসছেন না। এতে করে আমার মতো বিদ্যুতের ওপর নির্ভর ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ১২টা বেজে যাচ্ছে। আমার মতো ব্যবসায়ীদের ক্ষতিগ্রস্তের শঙ্কা দেখা দিয়েছে।
আরেক বাজার ব্যবসায়ী মো. ওয়ালি উল্লাহ বলেন, লোডশেডিংয়ের কারণে ফ্রিজে থাকা জিনিসপত্র নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। পানি তোলা যাচ্ছে না। অচল হয়ে পড়েছে ইলেকট্রনিক যন্ত্রাংশ। প্রচণ্ড তাপদাহের সঙ্গে বিদ্যুতের অত্যাচারে শিশু ও বয়স্ক মানুষজন অসুস্থ হয়ে পড়েছেন।
উপজেলার গন্ধর্ব্বপুর গ্রামের বাসিন্দা হাজী এখলাছুর রহমান বলেন, ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ৬ ঘণ্টা বিদ্যুৎ পাওয়া যায়। এতো বেশি লোডশেডিং মানা যায় না। আমাদের ছেলেমেয়েদের লেখাপড়ার বিরাট ক্ষতি হচ্ছে।
উপজেলা আবাসিক প্রকৌশলী (বিদ্যুৎ) আজিজুল ইসলাম আজাদ কালবেলাকে বলেন, আমরা জেনেছি ভারত থেকে যে বিদুৎ আমদানি হতো এগুলো বিভিন্নভাবে বন্ধ রয়েছে। এই গরমে বিদ্যুতের চাহিদা বেড়ে গেছে। আমাদের ছয়টি পিলার রয়েছে, এদের মধ্যে তিনটিতে ১ ঘণ্টা করে বিদ্যুৎ দেওয়া হয়। এভাবে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত চলে।
তিনি বলেন, রাতের দিকে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও অফিস বন্ধ থাকায় মোটামুটি সার্ভিস দিতে পারি। আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। মূলত ঢাকা থেকে লোড আসে। শহরের তুলনা আমরা এখানে বিদ্যুৎ কম পাই। আগামী ১১ তারিখ একটি মিটিং আছে, সেখানে লোড বা আবার আগের জায়গায় নিয়ে যেতে আলোচনা করা হবে।
মন্তব্য করুন