আমি কোনো মারধর করিনি। তার সাদা পাঞ্জাবিতে পানের রস লেগে লাল হয়ে গেছে। এমনটা বলেছেন ভোলার চরফ্যাশনে চাঁদা না দেওয়ায় আইনজীবীর সহকারীকে হামলায় অভিযুক্ত হানিফ জমাদার।
জানা যায়, ভোলার চরফ্যাশনে দাবি করা চাঁদা না দেওয়ায় নাসির (৬০) নামের এক আইনজীবীর সহকারীর (মুহুরি) ওপর হামলা হয়েছে। বিএনপির কথিত নেতা হানিফ জমাদার এ হামলা করেছেন বলে অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী।
রোববার (৮ সেপ্টেম্বর) সকাল সাড়ে নয়টায় উপজেলার কাশেমগঞ্জ বাজার এলাকার জিন্নাগড় ৮নং ওয়ার্ডে হানিফ জমাদারের বাড়ির সামনে এ ঘটনা ঘটে।
আহত নাসির মুহুরিকে স্থানীয়রা উদ্ধার করে চরফ্যাসন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেছেন। এ ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে মামলার প্রস্তুতি চলছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত কয়েকদিন যাবৎ নাসির মুহুরির কাছে চাঁদা দাবি করে আসছিলেন হানিফ জমাদার। মামলা সংক্রান্ত বিষয়ে তিনি নাসির মুহুরির ওপর ক্ষুব্ধ। চাঁদা দিতে অস্বীকার করলে নাসির মুহুরিকে মারধর করা হয়।
গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর থেকে নিজেকে বিএনপি নেতা দাবি করে বিভিন্ন মানুষের কাছে চাঁদা চেয়ে আসছেন কথিত এ যুবদল নেতা। তবে স্থানীয় বিএনপি নেতারা বলছেন, হানিফ জমাদার বিএনপির কোনো পদে নেই। তার অপরাধের দায় বিএনপি নেবে না। একসময় সে আওয়ামী লীগ করেছে, এখন বিএনপি হয়ে গেছে। এরা সুবিধাবাদী।
আহত নাসির মুহুরি বলেন, আমার বাড়ি এওয়াজপুর ৯নং ওয়ার্ডে। প্রায় ১৫ দিন আগে জিন্নাগড় উত্তর মাদ্রাজ ৮নং ওয়ার্ডের হানিফ জমাদার আমার বাড়িতে ৩০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করে লোক পাঠায়। আমি তাকে চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানালে সে আমাকে হুমকি দিয়ে আসছিল। একদিন আমার বাড়িতে গিয়ে ঘরের দরজা জানালা ভাঙচুর করে। তিনি বলেন, আজ সকালে হানিফ জমাদারের বাড়ির সামনে দিয়ে চরফ্যাসনে আমার কর্মস্থলে আসার পথে সে ও তার ছেলে শিমুল (২০) আমার গতিরোধ করে অকথ্য ভাষায় গালাগাল করে আমার কাছে চাঁদা চায়। আমি চাঁদা দিতে অপারগতা জানালে বাপ-ছেলে মিলে আমাকে এলোপাতাড়ি কিল-ঘুষি মেরে জখম করে। স্থানীয়রা আমাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করতে চাইলে হানিফ জমাদার তার দলবল নিয়ে হাসপাতালে এসে চিকিৎসা গ্রহণে বাধা দেন। পরে সাংবাদিকদের সহায়তায় আমি হাসপাতালে ভর্তি হই।
নাসির মুহুরি বলেন, আমি কোনো রাজনীতি করি না। পেশাগত কারণে অনেকেই আমার প্রতি ক্ষুব্ধ থাকতে পারে। তবে হানিফ জমাদারের সঙ্গে আমার ব্যক্তিগত শত্রুতা নেই।
এ ঘটনায় অভিযুক্ত হানিফ জমাদারের বক্তব্য জানতে চাইলে তিনি চাঁদা চাওয়ার কথা অস্বীকার করেন। তবে তিনি দাবি করেন, বিগত সরকারের আমলে তিনি একটি মামলার আসামি হয়েছেন। তাতে নাসির মুহুরির ছেলের ইন্ধন ছিল। তাই মামলার খরচের টাকা নাসির মুহুরীকে দিতে হবে।
হামলার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি কোনো মারধর করিনি। তার সাদা পাঞ্জাবিতে পানের রস লেগে লাল হয়ে গেছে।
মন্তব্য করুন