কুমিল্লার নাঙ্গলকোটে বন্যায় প্রায় ৬শ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। গত আগস্ট মাসে ভয়াবহ বন্যা, ভারি বৃষ্টি ও ভারতের পানি প্রবেশ করায় একটি পৌরসভাসহ ১৬টি ইউনিয়ন প্লাবিত হয়।
উপজেলা জনস্বাস্থ্য কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, গত মাসে বন্যায় সরকার থেকে নেওয়া গভীর নলকূপ ২ হাজারটি, ব্যক্তিগত ১ হাজার ৭শটি, টয়লেট ৪ হাজার ৩শটি নষ্ট হয়ে প্রায় ২১৯ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। যেসব নলকূপ ডুবে গেছে, তা জনস্বাস্থ্য বিভাগের পক্ষ থেকে মেরামত করে দেওয়া হবে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সহকারী প্রকৌশলী মো. সাইফুল ইসলাম।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, রোপা আমন বীজ, রোপা আমন, খরিপ-২, শাকসবজি, রোপা আউশ, বোনা আমন, আখসহ বন্যায় প্রায় ১১৩ কোটি ২৪ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কৃষি কর্মকর্তা মো. নজরুল ইসলাম।
তিনি জানান, ক্ষতি পুষিয়ে নেওয়ার জন্য নাঙ্গলকোট উপজেলায় ৩ হাজার কৃষককে কৃষি প্রণোদনার আওতায় উপকরণ সহায়তা দেওয়া হয়েছে। সিনজেনটা কোম্পানির মাধ্যমে ২০০ কৃষককে বীজ দেওয়া হয়েছে। বিভিন্ন জায়গায় যোগাযোগ করা হচ্ছে ধানের চারা এনে কৃষকদের মধ্যে বিতরণ করার জন্য।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, বন্যায় একটি পৌরসভা ও ১৬টি ইউনিয়নে খুদে, মাঝারি, খামারিসহ ২৫ হাজার গরুর খামারে ২০টি গরু মারা গেছে। ৮ হাজার হাঁস-মুরগি খামারে ৪ লাখ হাঁস-মুরগি মারা গেছে। বিভিন্ন খাদ্যসামগ্রী ও আসবাবপত্র, ঘর প্লাবিত হয়ে প্রায় ৪৪ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন, উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ও ভেটেরিনারি প্রধান ডা. মো. আশরাফুজ্জামান।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কার্যালয় (পিআইও) অফিস সূত্রে জানা যায়, বন্যায় ১৫ হাজার আংশিক, ৫০০ পুরো কাঁচা বাড়িঘর প্লাবিত হয়ে ৮০ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। তালিকা তৈরি করে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার কার্যালয়ে পাঠানো হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা শামীমা আক্তার।
উপজেলা মৎস্য অফিস সূত্রে জানা যায়, একটি পৌরসভাসহ ১৬টি ইউনিয়নে ৬ হাজার ৮০৫টি মৎস্য খামার রয়েছে। বন্যায় পুকুর, দিঘি ও খামারের মাছ ভেসে যাওয়ায় প্রায় ৫০ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা ইসরাত জাহান।
উপজেলা প্রকৌশলী অহিদুল ইসলাম সিকদার কালবেলাকে বলেন, বন্যায় প্রাথমিকভাবে জানা গেছে ৪০ কিলোমিটার পাকা সড়ক খানাখন্দ ও গর্ত হয়ে প্রায় ৪০ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে।