গোপালপুর (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৫:১০ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

নিয়োগবাণিজ্য ও অনিয়মে মাদ্রাসা অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে গণশুনানি

নিয়োগবাণিজ্য ও অনিয়মে মাদ্রাসা অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে গণশুনানি

নিয়োগবাণিজ্যের মাধ্যমে অর্ধকোটি টাকার বেশি আত্মসাৎ ও মাদ্রাসায় অনুপস্থিত থাকাসহ নানা অনিয়মের অভিযোগে এক অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে গণশুনানি অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার (৮ সেপ্টেম্বর) সকাল ১০টায় চর মাদ্রাসার হলরুমে গণশুনানি অনুষ্ঠিত হয়।

অভিযুক্ত ওই অধ্যক্ষের নাম মো. শফিকুল ইসলাম। তিনি টাঙ্গাইলের গোপালপুর উপজেলার চর চতিলা আলিম মাদ্রাসায় কর্মরত।

গণশুনানিতে অংশ নেন এ মাদ্রাসার গভর্নিং বডির সাবেক সভাপতি শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সাবেক বিভাগীয় প্রধান ডা. মো. রফিকুল ইসলাম, উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. জাহাঙ্গীর হোসেন, স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তি, মাদ্রাসার শিক্ষকসহ চতিলা, বিলডগা, বনমালী, জোতবাগল, চক্কাশী গ্রামের শতাধিক মানুষ।

সরেজমিনে গত ৮ জুলাই থেকে ৭ সেপ্টেম্বর গণশুনানির আগ পর্যন্ত মাদ্রাসার হাজিরা খাতায় অধ্যক্ষের স্বাক্ষর পাওয়া যায়নি।

গণশুনানিতে অংশ নেওয়া মাদ্রাসার উপাধ্যক্ষ পদে চাকরিপ্রত্যাশী, চাতুটিয়া গ্রামের মো. মুরতুজা, আজগড়া গ্রামের মো. এনামুল হক এবং গ্রন্থাগার পদে চাঁনপুর গ্রামের সাইফুল ইসলাম দাবি করেন- অধ্যক্ষ তাদের ৩ জনের কাছ থেকে মাদ্রাসা উন্নয়ন ফান্ডের কথা বলে মোট ১৭ লাখ ৮০ হাজার টাকা নিয়েছেন। অথচ চাকরি বা টাকা ফেরত কোনোটাই দেননি। এ বিষয়ে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার বরাবর লিখিত অভিযোগও দিয়েছেন তারা।

এ ছাড়াও গণশুনানিতে মাদ্রাসায় নিয়োগপ্রাপ্ত উপাধ্যক্ষ মো. আ. হাই ৯ লাখ টাকা, আয়া পদে খাদিজা খাতুন ৬ লাখ ৮৫ হাজার টাকা, নিরাপত্তা প্রহরী পদে মো. রিফাত ৮ লাখ টাকা, নৈশপ্রহরী পদে মো. ঠান্ডু ৬ লাখ টাকা অধ্যক্ষ এবং গভর্নিং বডির একাধিক সদস্যকে দেওয়ার দাবি করেন।

অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে টিউশন ফি, মাদ্রাসার মাঠে গাছ বিক্রির টাকাসহ বিভিন্ন খাতে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ ওঠে গণশুনানিতে।

এ মাদ্রাসার গভর্নিং বডির সাবেক সদস্য মো. সাফিকুল অভিযোগ করেন, আমার বাড়ির পাশেই মাদ্রাসাটি অবস্থিত, দীর্ঘদিন ধরে অধ্যক্ষ মাদ্রাসায় নিয়মিত আসেন না। মাদ্রাসা মাঠে মেহগনি গাছ ছিল, তিনি বিক্রি করে টাকা কী করছে জানি না। নিয়োগে দুর্নীতির আভাস পেয়ে পরবর্তী কোনো কাগজে আমি স্বাক্ষর করিনি।

মাদ্রাসার ম্যানেজিং কমিটির সাবেক সভাপতি ডা. মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, এলাকার মানুষের অভিযোগের প্রেক্ষিতে অধ্যক্ষকে নিয়ে বসেছিলাম। প্রিন্সিপালের বিরুদ্ধে অর্ধকোটি টাকার বেশি অর্থ নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এখানে অর্থ আত্মসাৎ ও বড় ধরনের দুর্নীতি হয়েছে। বিশেষ করে নিয়োগবাণিজ্যে, একজন নিয়োগের বিপরীতে একাধিক মানুষের থেকে টাকা নিয়ে প্রিন্সিপাল তার সহযোগীদের সঙ্গে ভাগাভাগি করে নিয়েছেন।

অভিযোগের বিষয়ে গণশুনানিতে অধ্যক্ষ মো. শফিকুল ইসলাম গাছ বিক্রি ও সবার থেকে টাকা নেওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করেন। তিনি বলেন, কিছু টাকা নিয়ে মাদ্রাসার উন্নয়নের কাজে লাগানো হয়েছে। আমি কমিটির সাবেক সদস্যদের নোটিশ করব, তারা এলে হিসাবনিকাশ করে সব পরিষ্কার করব।

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা জুলফিকার হায়দার বলেন, ওই মাদ্রাসার অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাতের লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি তদন্ত করা হবে।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

ভৈরবে আ.লীগ কার্যালয় থেকে যুবকের মরদেহ উদ্ধার

আন্দোলন-ধর্মঘটে ‘কার্যত অচল’ রাবি, ব্যাহত শিক্ষার পরিবেশ

রাজবাড়ীতে জমি বন্ধক নিয়ে গাঁজা চাষ, চাষি আটক

টিউলিপের বিরুদ্ধে ব্রিটিশ তদন্ত প্রতিবেদনে যা ছিল

নারী উদ্যোক্তা তনির স্বামী মারা গেছেন

ভারত থেকে এলো ২৪৫০ টন চাল

নারায়ণগঞ্জে আগুনে পুড়ল দুই কারখানা

উপসচিব বিতর্ক এবং আন্তঃক্যাডার বৈষম্যের বাস্তবতা 

কিশোরগঞ্জে হাসপাতালে ভুল ইনজেকশনে ২ রোগীর মৃত্যু

আবারও আসছে শৈত্যপ্রবাহ

১০

দক্ষিণ এশিয়ায় সবচেয়ে শক্তিশালী মালদ্বীপের পাসপোর্ট

১১

কুয়াশা ও তাপমাত্রা নিয়ে আবহাওয়া অধিদপ্তরের নতুন বার্তা

১২

দূষণ ও জলবায়ু পরিবর্তন দাবানলকে ভয়াবহ করছে আরও

১৩

ধুম ৪-এ রণবীর

১৪

আমি কারাগারে বৈষম্যের শিকার : পলক

১৫

পয়েন্ট হারানোর পর গোলকিপারের ওপর ক্ষোভ ঝাড়লেন গার্দিওলা

১৬

লালমনিরহাটে পেট্রল পাম্প থেকে বাস চুরি

১৭

অন্তর্বর্তী সরকার পুলিশকে রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত রেখে কাজ করছে : আইজিপি

১৮

পুলিশের সাবেক সোর্সকে পিটিয়ে হত্যা

১৯

অপরাধ-বিতর্কিত ভূমিকায় জড়িত কর্মকর্তাকে ধরা হবে : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

২০
X