পীরগাছা উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক আমিনুল ইসলাম রাঙ্গা কর্তৃক গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার বিজয় মিছিলে গুলি এবং ভিত্তিহীন মামলার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে।
শনিবার (৭ সেপ্টেম্বর) পীরগাছা কলেজ চত্বর থেকে ছাত্রজনতার একটি মিছিল বের হয়ে থানার সামনে গিয়ে রাস্তা অবরোধ করে।
শিক্ষার্থীরা বলেন, গত ৫ আগস্ট আমরা বিজয় মিছিল নিয়ে পীরগাছা ইউনিয়ন পরিষদ মোড়ে আসলে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ মিলন তার সন্ত্রাসী বাহিনী নিয়ে আমাদের উপর অতর্কিত আক্রমণ করেন। আমরা তাৎক্ষণিকভাবে প্রতিরোধ করে তাদেরকে কোনঠাসা করি।
তবে এ সময় উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক আমিনুল ইসলাম রাঙ্গা তাদের চাচা-ভাতিজা সম্পর্ক অটুট রাখতে সাধারণ ছাত্র-জনতাকে লক্ষ্য করে চার রাউন্ড গুলি ছোঁড়েন। এতে পীরগাছা বহুভাষী সাঁটলিপি প্রশিক্ষণ একাডেমির একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী একরামুল গুলিবিদ্ধ হয়। তবে সে প্রাণে বেঁচে যায়। বিষয়টি নিয়ে যেন কোনো অরাজকতা সৃষ্টি না হয়। এজন্য আমরা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিশ্চুপ থাকি।
কিন্তু কিছুদিন যাবত ওই বিএনপি নেতা ও তার দলের নাম ব্যবহার করে মুষ্টিমেয় কিছু ব্যক্তি এবং আওয়ামী লীগের কিছু লোকজনকে ব্যবহার করে পীরগাছায় অরাজকতা সৃষ্টির চেষ্টা করলে পীরগাছা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন তাদেরকে বাধা দেই। তারই পরিপ্রেক্ষিতে বিএনপি নেতা ও বর্তমান পীরগাছা বাজার দোকান মালিক সমিতির সভাপতি আমিনুল ইসলাম রাঙ্গা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আমাদের কিছু সহযোদ্ধার নামে মিথ্যা মামলা করেন।
আমরা ছাত্ররা এ নেক্কারজনক ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই এবং অবিলম্বে এই মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানাচ্ছি। সেই সঙ্গে বিএনপির ঊর্ধ্বতন ও শীর্ষ নেতাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। আজকের মধ্যেই যেন বিএনপির মত একটি ঐতিহ্যবাহী দল থেকে তাকে বহিষ্কার করা হয়।
ওই ঘটনায় থানায় মামলা রুজু করে বিএনপি নেতাকে গ্রেপ্তার, পীরগাছা উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক পদ থেকে বহিষ্কারসহ পীরগাছা বাজার দোকান মালিক ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি পদ থেকে আমিনুলকে বহিষ্কারের দাবি জানানো হয় কর্মসূচিতে।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক আমিনুল ইসলাম রাঙ্গার মুঠোফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
পীরগাছা থানার ওসি সুশান্ত কুমার সরকার বলেন, ছাত্র-জনতার পক্ষ থেকে বিএনপি নেতার গুলির ঘটনায় এজাহার দায়েরের প্রক্রিয়া চলছে।
উল্লেখ্য, গত ৫ আগস্ট পীরগাছা বাজার দোকান মালিক সমিতির কার্যালয় ভাংচুর, অগ্নিসংযোগ, চুরি ও লুটপাটের ঘটনায় প্রায় ১৩ লক্ষাধিক টাকার ক্ষয়ক্ষতির অভিযোগে গত ৬ সেপ্টেম্বর ২২ জনের নামে দোকান মালিক সমিতির সভাপতি হিসেবে ওই বিএনপি নেতা পীরগাছা থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। ওই মামলাতে কিছু শিক্ষার্থীকে আসামি করা হয়। যারা বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সক্রিয় ভুমিকা রেখেছিলেন বলে দাবী স্থানীয় সমন্বয়কদের। তবে লোকমুখে শোনা যাচ্ছে, ইতোমধ্যে মামলাটি ওই নেতা প্রত্যাহার করে নিয়েছেন।
মন্তব্য করুন