পলাশ উপজেলার জনতা জুটমিলে কিছু উচ্ছৃঙ্খল শ্রমিকের হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাটের পর কর্তৃপক্ষ অনির্দিষ্টকালের জন্য মিলটি বন্ধ ঘোষণা করেছে। গতকাল শনিবার সকালে মিলের প্রধান ফটকে মিল কর্তৃপক্ষ এ সংক্রান্ত ঘোষণার একটি নোটিশ সাঁটিয়ে দেয় এবং মাইকিংয়ের মাধ্যমে শ্রমিকদের জানায়। এ মিলে প্রায় ৭ হাজার শ্রমিক কর্মরত।
ফের চালু করার সুনির্দিষ্ট তারিখ না থাকায় শ্রমিকদের মধ্যে অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। বন্ধ ঘোষণার পর মিলের কলোনিতে বসবাসরত সহস্রাধিক পরিবার কলোনি ছেড়ে চলে যেতে বাধ্য হচ্ছে।
জনতা জুট মিলস লিমিটেডের পক্ষে জেনারেল ম্যানেজার মো. মতিউর রহমান স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে বলা হয়, জনতা জুট মিলস লিমিটেডে গত ৩ থেকে ৬ সেপ্টেম্বর মধ্যবর্তী বিভিন্ন সময়ে কিছুসংখ্যক দুষ্কৃতকারী প্রতিষ্ঠানের অভ্যন্তরে দাঙ্গা-হাঙ্গামা, বেআইনি ভয়ভীতি প্রদর্শন এবং মিল ভাঙচুরে লিপ্ত ছিল।
এ অবস্থায় প্রতিষ্ঠানের স্বাভাবিক উৎপাদন কার্যক্রম পরিচালনা অসম্ভব হয়ে পড়ায় কর্তৃপক্ষ বাংলাদেশ শ্রম আইন ২০০৬-এর ধারা ১২(১) অনুযায়ী সব উৎপাদন কার্যক্রম ৭ সেপ্টেম্বর ‘এ’ শিফট থেকে সম্পূর্ণভাবে বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে।
মিল বন্ধকালীন দীর্ঘসূত্রতার পরিপ্রেক্ষিতে শ্রম আইন এবং শ্রম বিধিমালা অনুযায়ী শ্রমিকরা ধারা ১২(৬), ১২(৭) বা ১২(৮) অনুসারে মজুরি প্রাপ্য হবেন। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত সব শ্রমিককে জনতা জুট মিলস লিমিটেডের কর্মক্ষেত্রে যোগদান থেকে বিরত থাকার নির্দেশ প্রদান করা হলো। গত বৃহস্পতিবার রাতে পলাশের বাগপাড়া গ্রামে অবস্থিত আকিজ-বশির গ্রুপের মালিকানাধীন জনতা জুট মিলস লিমিটেডের কিছু উচ্ছৃঙ্খল শ্রমিক ১৪ দফা দাবিতে হামলা চালায়।
এতে মিলের প্রশাসনিক ভবন, লেবার অফিস, নিরাপত্তা অফিস, গেস্ট হাউসসহ বিভিন্ন অফিস কক্ষে ব্যাপক ভাঙচুর ও লুটপাট করা হয়। এ সময় বাধা দিতে গিয়ে মিলের ছয় নিরাপত্তাকর্মী আহত হয়েছেন। খবর পেয়ে র্যাব, পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। এদিকে মিলের নিরাপত্তায় পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।
এ ব্যাপারে মিলের জেনারেল ম্যানেজার মো. মতিউর রহমান কালবেলাকে জানান, কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্তে মিলটি অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ করা হয়েছে। পরবর্তী নির্দেশ না পাওয়া পর্যন্ত মিলের উৎপাদন বন্ধ থাকবে।