গাজীপুরের টঙ্গীতে সিরাজউদ্দিন সরকার বিদ্যানিকেতন অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষকে ছাত্রদের দিয়ে জোরপূর্বক পদত্যাগে বাধ্য করে অধ্যক্ষের পদে আওয়ামী লীগ নেতাকে দায়িত্ব দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষক, ছাত্রছাত্রী ও অভিভাবকদের মধ্যে অসন্তোষ বিরাজ করছে।
এর আগে বিক্ষোভের মুখে গত ১৯ আগস্ট প্রধান শিক্ষক মো. ওয়াদুদুর রহমান পদত্যাগে বাধ্য হন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, কতিপয় আওয়ামী লীগ নেতা দীর্ঘদিন ধরে প্রতিষ্ঠানটি থেকে অবৈধ উপায়ে সুবিধা নেওয়ার চেষ্টা চালিয়ে আসছিলেন। গত ৫ আগস্ট সরকার পরিবর্তন হওয়ার পর তারা ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে অধ্যক্ষ মো. ওয়াদুদুর রহমানকে সরিয়ে তার স্থানে আওয়ামী লীগ দলীয় শিক্ষককে দায়িত্ব দেওয়ার চেষ্টা চালাচ্ছে।
অভিযোগ রয়েছে, এই ষড়যন্ত্রে ছিলেন প্রতিষ্ঠানটির সহকারী প্রধান শিক্ষক মো. মুজিবুর রহমান। তিনি টঙ্গীর ৫৩ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকে কাজে লাগিয়ে বহিরাগত ছাত্রদের দিয়ে অযৌক্তিকভাবে অধ্যক্ষ ওয়াদুদুর রহমানকে পদত্যাগে বাধ্য করা হয়। এরপর পর থেকেই অনুমতি ছাড়াই অধ্যক্ষের দায়িত্ব পালন করছেন সহকারী প্রধান শিক্ষক মুজিবুর রহমান।
ইতোপূর্বে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক পরিদর্শন ও নিরীক্ষায় মুজিবুর রহমানের সহকারী শিক্ষক পদে ও পরবর্তীতে সহকারী প্রধান শিক্ষক পদে অবৈধভাবে নিয়োগের প্রমাণ পায়। ওই প্রতিবেদনে মুজিবুর রহমানের গৃহীত সমুদয় সরকারি বেতন ভাতা ফেরতযোগ্য বলেও সুপারিশ করা হয়।
অধ্যক্ষ ওয়াদুদুর রহমান কালবেলাকে বলেন, ২০০৮ সাল থেকে আমার বিরুদ্ধে নানা ষড়যন্ত্র চলে আসছে। স্থানীয় স্বার্থান্বেষী একটি মহল আমার কারণে প্রতিষ্ঠানটি লুটপাটের সুযোগ না পেয়ে এ ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। তারাই বহিরাগত কথিত ছাত্রদের দিয়ে আমাকে অফিসকক্ষে অবরুদ্ধ করে জোরপূর্বক পদত্যাগে বাধ্য করেছে। আমি অন্যায় ও বৈষম্যের শিকার।
জানতে চাইলে সহকারী প্রধান শিক্ষক মুজিবর রহমান বলেন, আমি কোনো ষড়যন্ত্রে জড়িত নই। বরং আমার বিরুদ্ধেই ষড়যন্ত্র হচ্ছে। অধ্যক্ষকে অপসারণে আমার কোনো ভূমিকা ছিল না। এটি ক্ষুব্ধ সাধারণ ছাত্রদের কাজ।
গাজীপুর জেলা শিক্ষা অফিসার মো. শাহজাহান বলেন, অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে অভিযোগ পেয়েছি। এ বিষয়ে তদন্ত করা হবে। তদন্ত করে যদি অভিযোগ সত্য প্রমাণিত হয়, তাহলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আর অভিযোগ মিথ্যা প্রমাণিত হলে তাকে পুনরায় স্বপদে বহাল করা হবে।
মন্তব্য করুন