হরিরামপুর (মানিকগঞ্জ) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৭:৩১ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

পদ্মায় বিলীন ৫ হাজার শতক ফসলি জমি

পদ্মার ভাঙনে বিলীন ফসলি জমি। ছবি : কালবেলা
পদ্মার ভাঙনে বিলীন ফসলি জমি। ছবি : কালবেলা

মানিকগঞ্জের হরিরামপুরে পদ্মার তীব্র স্রোতে উপজেলার নদী তীরবর্তী এলাকার প্রায় ৫ হাজার শতক ফসলি জমি পদ্মায় বিলীন হয়েছে।

আজিমনগর ইউনিয়নের হাতিঘাটা এলাকা থেকে লেছড়াগঞ্জ ইউনিয়নের সেলিমপুর পর্যন্ত প্রায় ২০ কিলোমিটার এরিয়ায় বর্ষা মৌসুমের শুরুতেই ভাঙন দেখা দেয়, যা এখন পর্যন্ত চলমান। ফলে লেছড়াগঞ্জের লটাখোলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছয় রুম বিশিষ্ট কোটি টাকার একতলা ভবনসহ ফসলি জমি পদ্মায় বিলীন হয়ে গেছে। ভাঙন আতংকে বিপদগ্রস্ত চরাঞ্চলে বসবাসকারী কয়েক হাজার মানুষ।

জানা গেছে, প্রায় পঞ্চাশ দশক থেকে অনবদ্য পদ্মার ভাঙনে এ উপজেলার আজিমনগর, সুতালড়ী ও লেছড়াগঞ্জে তিনটি ইউনিয়ন সম্পূর্ণরূপে নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায়। সত্তর দশকের শেষের দিকে চর জেগে উঠলে তিনটি ইউনিয়নে আবার জনবসতি শুরু হয়। বর্তমানে চরাঞ্চলের তিনটি ইউনিয়নে প্রায় ৫০ হাজারেরও অধিক মানুষের বসবাস। তবে এখনো ভাঙাগড়ার মধ্য দিয়ে বসবাস করছেন চরাঞ্চলের জনগণ।

চলতি বর্ষা মৌসুমের শুরুতেই পদ্মার পানি বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গেই প্রবল স্রোত আর ঢেউয়ে আজিমনগরের হাতিঘাটা এলাকা থেকে লেছড়াগঞ্জ ইউনিয়নের সেলিমপুর পর্যন্ত ভাঙন দেখা দেয়। এতে করে দুই মাসে প্রায় ৫ হাজার শতাংশ ফসলি জমি পদ্মায় বিলীন হয়েছে বলে উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে।

লেছড়াগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের ৪নং ওয়ার্ডের মেম্বার মোতালেব হোসেন জানান, নদীতে পানির তীব্র স্রোতে লেছড়াগঞ্জ ইউনিয়নের প্রায় ৬ কিলোমিটার এরিয়া নিয়ে চরাঞ্চলের ফসলি জমি নদীতে চলে যাচ্ছে। চলতি বর্ষায় প্রায় ১ কিলোমিটারের অধিক প্রস্থ এরিয়া নিয়ে জমিজমা নদীতে চলে গেছে। চলতি বর্ষা মৌসুমে আমার ওয়ার্ডের অনেকের বসতবাড়ি ও একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নদীতে চলে গেছে। এখন পর্যন্ত ভাঙন অব্যাহত আছে। এভাবে ভাঙলে হয়তো চরই থাকবে না। অনেক কৃষক জমিজমা হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে পড়ছে। তাই জরুরি ভিত্তিতে ভাঙন রোধে স্থায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ জরুরি হয়ে পড়েছে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা তৌহিদুজ্জামান খান কালবেলাকে জানান, হরিরামপুরে নদীভাঙনের ফলে বছরের পর বছর কৃষি জমি বিলীন হয়েছে যাচ্ছে। চরাঞ্চলে বসবাসের উপযোগী হওয়ার পর থেকেই এ অঞ্চলের বাসিন্দারা কৃষির ওপর নির্ভরশীল। কালের পরিক্রমায় চরাঞ্চলে পর্যাপ্ত কৃষি পণ্য উৎপাদিত হচ্ছে, যা দেশের বিভিন্ন জেলায় রপ্তানি করে অর্থনৈতিকভাবে ব্যাপক ভূমিকা রাখছে। তাই নদীভাঙন রোধ করতে না পারলে এ অঞ্চলের কৃষি জমি বিলীন অব্যাহত থাকবে এবং অর্থনীতিতে ব্যাপক প্রভাব পড়বে। এজন্য নদী ভাঙনরোধ করাটা জরুরি হয়ে পড়েছে।

মানিকগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মুহাম্মদ আক্তারুজ্জামান কালবেলাকে বলেন, পানি উন্নয়ন বোর্ড সবসময়ই মানুষের কল্যাণে কাজ করে থাকে। এ জন্য মানুষের ভিটেবাড়িসহ জমিজমা রক্ষার্থে নদীভাঙনরোধে সর্বাত্মক কাজ করে যাচ্ছে। আমি এখানে নতুন যোগদান করেছি। । আমার আগে যিনি এখানে দায়িত্বে ছিলেন, তিনি যে সব প্রকল্পের প্রস্তাবনা মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছেন, সেগুলো দ্রুত বাস্তবায়নের চেষ্টা করব। এ ছাড়াও ভাঙন কবলিত স্থানগুলো পরিদর্শন করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের চেষ্টা করব।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

শিক্ষার্থীদের শান্ত থাকার আহ্বান সরকারের

সংঘর্ষে রণক্ষেত্র যাত্রাবাড়ী, ৬ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন

নজরুল-সোহরাওয়ার্দী ও মোল্লা কলেজ সংঘর্ষ / ন্যাশনাল মেডিকেলে চিকিৎসা নিচ্ছে ৩০ শিক্ষার্থী

স্বাভাবিক চিকিৎসাসেবায় ফিরেছে ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ

গণভবন স্টাইলে লুট হলো মোল্লা কলেজ

বকেয়া বেতনের দাবিতে শ্রম ভবনের সামনে শ্রমিকদের আন্দোলন

বিকেলে ৩ কলেজের সঙ্গে বসবে ডিএমপি

জমি নিয়ে বিরোধে বৃদ্ধার মরদেহ দাফনে বাধা

‘শেখ হাসিনাসহ পালিয়ে যাওয়া নেতারা দেশে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি করছে’

সোহরাওয়ার্দী কলেজ বন্ধ ঘোষণা

১০

আন্দোলনের ‘অ্যাপ’ চান শাওন

১১

আন্দোলনে গেলেই মিলবে এক লাখ টাকা

১২

ঢাকা যেন সংঘাত-সহিংসতার শহর!

১৩

মোল্লা কলেজে হামলায় ৩ জন নিহতের দাবি

১৪

ঢাকায় অটোরিকশা চলাচল নিয়ে হাইকোর্টের আদেশের স্থিতাবস্থা

১৫

ইসরায়েলে বৃষ্টির মতো রকেট হামলা, চোখে অন্ধকার দেখলেন নেতানিয়াহু

১৬

পার্থে অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়ে ভারতের দুর্দান্ত জয়

১৭

তিন কলেজের শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষে রণক্ষেত্র ডেমরা-যাত্রাবাড়ী

১৮

টাকার বিনিময়ে শাহবাগে বাসভর্তি মানুষ নিয়ে আসে আ.লীগ নেতা

১৯

লেবাননের সঙ্গে যুদ্ধবিরতিতে সম্মত ইসরায়েল

২০
X