প্যানেল চেয়ারম্যান নিয়ে দ্বন্দ্বে ঝিনাইদহে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের কক্ষে তালা দেওয়া হয়েছে।
বুধবার (৪ সেপ্টেম্বর) ঝিনাইদহের হরিণাকুন্ডু উপজেলার ২নং জোড়াদহ ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ২নং জোড়াদহ ইউনিয়নের ইউপি সদস্যদের মধ্যে প্যানেল চেয়ারম্যান হওয়া নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে এ ঘটনা ঘটে। ৫আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর অধিকাংশ ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে চেয়ারম্যানদের অনুপস্থিতি লক্ষ করা যায়।
জোড়াদহ ইউনিয়নে বর্তমান প্যানেল চেয়ারম্যান (৮ ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য) বশির উদ্দীনকে সরিয়ে বিএনপিপন্থি একাধিক ইউপি সদস্যের মধ্যে প্যানেল চেয়ারম্যান হওয়া নিয়ে বেশ কিছুদিন ধরে উত্তেজনা বিরাজ করছে। এরই ধারাবাহিকতায় ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ের চেয়ারম্যানের কক্ষে বিএনপিপন্থি ইউপি সদস্য আনিসুর রহমানের নের্তৃত্বে স্থানীয় কয়েকজন তালা লাগিয়েছেন বলে জানা গেছে।
এ সময় পরিষদের সিসি ক্যামেরাও ভাঙচুর করা হয়। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে এলাকায় যে কোনো সময় বড় ধরনের সহিংসতার আশঙ্কা এলাকাবাসীর। যদিও প্রশাসনের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, এলাকার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে সব ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
পরিষদের গ্রাম পুলিশ মোক্তার হোসেন বলেন, মেম্বার আনিস আমার কাছে থাকা চেয়ারম্যানের কক্ষের তালার চাবি নিয়ে আগের লাগানো তালা খুলে নতুন একটি তালা লাগিয়ে চাবি নিয়ে চলে যায়। প্রথমে আমি চাবি দিতে না চাইলেও পরে দিতে বাধ্য হই।
জোড়াদহ ইউনিয়ন পরিষদের সচিব শুভ বলেন, আমি আমার রুমে বসে ছিলাম। আনুমানিক দুপুর ১টা থেকে দেড়টার দিকে পরিষদের গ্রাম পুলিশ এসে আমাকে জানায় মেম্বার আনিস চেয়ারম্যানের রুমে তালা লাগিয়ে দিয়েছে। বিষয়টি আমি ইউএনওকে জানিয়েছি।
জোড়াদহ ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি রনি বিশ্বাস জানান, তালা লাগানোর বিষয়ে তিনি শুনেছেন। তবে কে বা কারা তালা লাগিয়েছে সে বিষয়ে তিনি কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি।
অভিযুক্ত ইউপি সদস্য আনিসুর রহমান অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমি পরিষদের একজন সদস্য। আমরা এমনিতেই সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত পরিষদে থাকি। আমি কেন তালা লাগাব।
জোড়াদহ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান বাবু মিয়া বলেন, আমার কক্ষে তালা লাগানোর বিষয়ে শুনেছি। তাৎক্ষণিক ইউএনওকে অবগত করেছি। তবে রুমের মধ্যে থাকা ল্যাপটপ, গুরুত্বপূর্ণ জিনিসপত্র ও নথি কী অবস্থায় আছে তা জানতে পারিনি। মেম্বারদের মধ্যে প্যানেল চেয়ারম্যান হওয়া নিয়ে যে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে সেই বিষয়ে আমার পক্ষ থেকে সব মেম্বারকে জানিয়েছি আপনারা আপনাদের দলের নেতাদের কাছ থেকে সিদ্ধান্ত নিয়ে যাকে মনোনীত করবেন আমি তাকেই সমর্থন করব।
হরিণাকুন্ডু উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আক্তার হোসেন বলেন, তালা লাগানোর বিষয়টি শুনেছি। পরিষদে তালা লাগানোর এখতিয়ার কারও নেই। এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত করে দোষীদের আইনের আওতায় আনা হবে।