চট্টগ্রামে ২৮ সাংবাদিকের বিরুদ্ধে মিথ্যা ও হয়রানিমূলক মামলা দায়েরের নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে সাংবাদিকদের আটটি সংগঠনের নেতারা। এ মামলাকে পেশাদার সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে স্বার্থান্বেষী মহলের ষড়যন্ত্রের অংশ আখ্যায়িত করে অবিলম্বে তা প্রত্যাহারের দাবি জানান সাংবাদিক নেতারা।
এর বুধবার (৪ সেপ্টেম্বর) আ.লীগ সরকারের তথ্য প্রতিমন্ত্রীসহ ৪৯ জনের বিরুদ্ধে চট্টগ্রামের মহানগর হাকিম জুয়েল দেবের আদালতে একটি মামলার আবেদন করেন এক নারী।
বিএফইউজে-বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সহসভাপতি শহীদ উল আলম, চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সভাপতি সালাহউদ্দিন মো. রেজা ও সাধারণ সম্পাদক দেবদুলাল ভৌমিক, চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি তপন চক্রবর্তী ও সাধারণ সম্পাদক ম. শামসুল ইসলাম, বিএফইউজের যুগ্ম মহাসচিব হসিন কাজী, চট্টগ্রাম সাংবাদিক কো-অপারেটিভ হাউজিং সোসাইটির সভাপতি খোরশেদ আলম ও সম্পাদক যীশু রায় চৌধুরী, চট্টগ্রাম টিভি জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি নাসির উদ্দিন তোতা ও সাধারণ সম্পাদক লতিফা আনসারী রুনা, চট্টগ্রাম ফটোজার্নালিস্ট এসোসিয়েশনের সভাপতি রাশেদ মাহমুদ ও সাধারণ সম্পাদক রাজেশ চক্রবর্তী, বাংলাদেশ ফটোজার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশন চট্টগ্রামের সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক মিয়া আলতাফ, টিভি ক্যামেরা জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি শফিক আহমেদ সাজিব ও সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল আলম মামুন এক যৌথ বিবৃতি দিয়েছে।
বিবৃতিতে সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে এ ধরনের মিথ্যা ও হয়রানিমূলক মামলা দায়েরের তীব্র নিন্দা জানিয়ে তারা বলেন, এর পেছনে স্বার্থান্বেষী মহলের দুরভিসন্ধি ও হীন উদ্দেশ্য রয়েছে। সাজানো এ মামলা সাংবাদিকদের সামাজিকভাবে অপদস্ত ও হেয়প্রতিপন্ন করা অপচেষ্টার অংশ।
মামলার আবেদনে হাসিনা মমতাজ নামে ওই নারী বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মধ্যে শিক্ষার্থীদের অপহরণ-নির্যাতনসহ ১০ ধরনের অভিযোগ আনেন। ওই মামলায় তিনি যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ এনেছেন, তাদের ২৮ জনই বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের সাংবাদিক।
সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়, তারা প্রকৃত ঘটনাগুলো রিপোর্ট না করে উদ্দেশ্যমূলক সংবাদ প্রকাশ করেছেন।
বিবৃতিতে সাংবাদিক নেতারা বলেন, চট্টগ্রামের সাংবাদিক সমাজ সবসময় যে কোনো গণতান্ত্রিক আন্দোলনে পেশাদারিত্বের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেছে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্রজনতার আন্দোলনের সঠিক চিত্র দেশবাসীর কাছে তুলে ধরেছে এই সাংবাদিকরাই। রক্তস্নাত একটি আন্দোলনের পর দেশের মানুষ যেখানে একটি নতুন বাংলাদেশ এর স্বপ্ন দেখছে, সেখানে মিথ্যা ও উদ্ভট নানা অভিযোগ এনে সাংবাদিকদের মামলার আসামি করার ঘটনা ছাত্রজনতার আন্দোলনের ফসলকে প্রশ্নবিদ্ধ করে তুলবে।
নেতারা অবিলম্বে এ ধরনের সাজানো মামলা থেকে সাংবাদিকদের নাম প্রত্যাহার এবং ষড়যন্ত্রকারী মহলকে চিহ্নিত করে উপযুক্ত শাস্তির দাবি জানিয়েছেন। অন্যথায় সাংবাদিক সংগঠনগুলো এ ব্যাপারে কঠোর কর্মসূচি দিতে বাধ্য হবে বলে হুঁশিয়ারি করেন।
মামলার বাদী হাসিনা মমতাজ (৫৫) নগরীর কোতোয়ালি থানার নজির আহমদ চৌধুরী রোড বাই লেইন চেয়ারম্যান গলির বাসিন্দা সৈয়দ আবুল হাসেমের মেয়ে। সৈয়দ আবুল হাসেম চট্টগ্রাম নগর বিএনপির নেতা ছিলেন। হাসিনা মমতাজ চট্টগ্রামের মোহরা ছায়েরা খাতুন খাদেরিয়া স্কুল অ্যান্ড কলেজের প্রিন্সিপাল ছিলেন।
মামলা বিষয়ে জানতে বাদী হাসিনা মমতাজকে কল করা হলে তিনি মোবাইল রিসিভ করেননি। তবে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গত ১৯ আগস্ট নানা দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে তিনি পদত্যাগ করেন।
মন্তব্য করুন