মানিকগঞ্জের হরিরামপুরের গালা ইউনিয়নের বেড়ী গ্রাম এলাকায় ব্রিজের এ্যাপ্রোচে মাটি না থাকায় এবং ব্রিজের সংযোগ সড়কের প্রায় ৫০০ মিটার দৈর্ঘ্য ইটের সলিং রাস্তা ভেঙে যাওয়ায় হরিরামপুর ও শিবালয় দুই উপজেলার প্রায় ১০টি গ্রামের জনগণ প্রায় ২০ বছর ধরে ভোগান্তিতে রয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, হরিরামপুর উপজেলার গালা ইউনিয়নের বেড়ী গ্রাম ও শিবালয় উপজেলার শিমুলিয়া ইউনিয়নের পাড়াগ্রাম এলাকার মাঝ দিয়ে প্রবাহিত দুই উপজেলার সীমান্তবর্তী এলাকায় কান্তাবতী নদীর ওপর দিয়ে ২০০২ সালে ব্রিজটি নির্মাণ করা হয়। ব্রিজ নির্মাণের প্রায় বছর দুই পরে ব্রিজের দুই পাশে এ্যাপ্রোচের মাটি ধসে যাওয়ায় বিপাকে পড়ে দুই উপজেলার ১০টি গ্রামের মানুষ।
এই ব্রিজ দিয়ে শিবালয় উপজেলার শিমুলিয়া ইউনিয়নের পাড়াগ্রাম, ফেচুয়াধারা, কাছিধারা, ব্যাচপাড়া, সর্পধারা, বুতুনী, কোটাধারা, খালিশা, চালতাবাড়ি ও হরিরামপুর উপজেলার গালা ইউনিয়নের বেড়ী, বিনোদগালা, গাংধুসুরিয়া, মধ্যধুসুরিয়া, ছয়আনি গালারসহ দূরদূরান্ত থেকে প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষসহ ৫টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কোমলমতি শিক্ষার্থীরা চলাফেরা করে। কিন্তু ব্রিজের এ্যাপ্রোচে মাটি ধসে গর্ত হওয়ায় এবং সংযোগ সড়কের বিভিন্ন স্থানে ভেঙে যাওয়ায় চলাচল মানুষজন চলাফেরা করতে পারছে না।
সরেজমিনে দেখা গেছে, ব্রিজের দক্ষিণ পাশে প্রায় ৫০০ ফিট দৈর্ঘ্য ইট সোলিং রাস্তা ভেঙে সরু হয়ে গেছে। ব্রিজের এ্যাপ্রোচে মাটি ধসে গর্ত হয়ে যাওয়ায় একটু বৃষ্টি হলেই যানবাহন তো দূরের কথা মানুষজন পায়ে হেঁটেই যেতে পারে না। এতে করে শিবালয় উপজেলার প্রায় ৮ গ্রামের মানুষ কৃষিপণ্য নিয়ে ঝিটকা বাজারে যেতে পারে না।
একটু বৃষ্টি হলেই ব্রিজে ওঠা-নামার পথে পিচ্ছিল হয়ে পরায় মালামাল আনা নেওয়াসহ জরুরি রোগী নিয়েও বিপাকে পড়তে হয় বলে একাধিক এলাকাবাসী অভিযোগ করেন। দীর্ঘ আট বছর যাবৎ চলাচলে একেবারেই অনুপযোগী হয়েছে। স্থানীয়রা মাটি ফেলে সাময়িকভাবে যাতায়াতের ব্যবস্থা করলেও কোনো জনপ্রতিনিধির সুদৃষ্টি নেই বলেও অভিযোগ এলাকাবাসীর।
কাছিধারা গ্রামের গফ্ফার মোল্লা বলেন, দীর্ঘ আট/ দশ বছর ধরে আমরা এই জায়গা নিয়ে আমরা খুব বিপদে আছি। একটু বৃষ্টি নামলেই আমরা কোনো প্রকার যানবাহন তো দূরের কথা পায়ে হেঁটেই যাতায়াত করতে পারি না। বয়স্ক মানুষদের তো আরও অসুবিধা। বৃষ্টি নামলেই ব্রিজের গোড়ায় কাদা ও পিচ্ছিল হয়ে যায়। এতে বাইকেল, মোটরসাইকেলসহ অন্যান্য যানবাহনও চলাফেরা করতে পারে না।
ইজিবাইকচালক আনোয়ার হোসেন জানান, আমাদের এই ব্রিজের গোড়ায় মাটি না থাকায় আমরা খুব বিপদে আছি। ব্রিজের গোড়ার অর্ধেক ভেঙে মাটি ধসে খালে চলে গেছে। এই রাস্তাসহ ব্রিজের গোড়া মেরামত না করা পর্যন্ত আমরা গাড়ি চালাইতে পারছি না। একটু বৃষ্টি হলে তো পায়ে হেঁটেই যাতায়াত করা যায় না। আমাদের দাবি যতদ্রুত সম্ভব ব্রিজের গোড়াসহ রাস্তাটা মেরামত না করে দিলে আমরা ঠিক মতো মালামাল আনা নেওয়াসহ যাতায়াত করতে পারছিনা। আমরা খুব অসুবিধার মধ্যে আছি।
গালা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শফিক বিশ্বাস কালবেলাকে জানান, আমি ব্রিজের এ্যাপ্রোচের বিষয়ে অনেক বার উপজেলা মাসিক সমন্বয় সভায় বিষয়টি তুলে ধরেছি। এই রাস্তাটি খুবই জনগুরুত্বপূর্ণ। তবে ব্রিজটি দুই উপজেলার সীমান্তবর্তী হওয়ায় জটিলতাটা একটু বেশি। তারপরেও এটা নিয়ে আমার চেষ্টা অব্যাহত আছে। দেখি কতদূর কি করা যায়।