চিকিৎসক নেতাদের আশ্বাসে নিরাপত্তা ঝুঁকি ও হামলার আশঙ্কায় খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে অনুপস্থিত থাকা ৫১ চিকিৎসক পুনরায় অফিস করেছেন। খুলনা বিএমএ এবং বিএনপিপন্থি চিকিৎসকদের আশ্বাসে বৃহস্পতিবার (৫ সেপ্টেম্বর) সকাল থেকেই কাজে যোগদান করেন তারা।
এর আগে খুলনা মেডিকেল কলেজ ছাত্রদের একাংশ এই ৫১ চিকিৎসককে আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে হাসপাতালে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করে। একই সঙ্গে জোর করে পদত্যাগপত্রে স্বাক্ষর করানো হয় হাসপাতালের উপপরিচালক ডা. আক্তারুজ্জামানকে। ফলে অবাঞ্ছিত হওয়ায় বুধবার বহির্বিভাগের অধিকাংশ চিকিৎসক হাসপাতলে অনুপস্থিত থাকায় পুরো হাসপাতালের চিকিৎসা ব্যবস্থা ভেঙে পড়ে। দূর দূরান্ত থেকে আসা রোগীরা পায়নি চিকিৎসাসেবা। এ অবস্থায় গণমাধ্যমে হাসপাতালে পরিস্থিতি দেখে নড়েচড়ে বসে বিএমএ ও বিএনপি নেতারা। একই সঙ্গে বিএনপিপন্থি চিকিৎসকদের নাম ব্যবহার করে এক চিকিৎসকের নেতৃত্ব এ ঘটনা ঘটনায় নিন্দা জানিয়ে আলাদা বিবৃতি দেন খুলনা মহানগর বিএনপি, বিএনপিপন্থি চিকিৎসকদের সংগঠন ড্যাব এর খুলনা মেডিকেল কলেজ শাখাসহ খুলনা জেলা ও মহানগর শাখা।
এ ছাড়া খুলনা মহানগর বিএনপি নেতাদের প্রতিনিধি এবং ১৭নং ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি ফারুক হোসেন এবং যুবদল নেতা সাইফুলের নেতৃত্বে হাসপাতালে গিয়ে রোগীদের ভোগান্তি সরেজমিন দেখে অনুপস্থিত চিকিৎসকদের সঙ্গে ফোনে কথা বলেন এবং হাসপাতালে আসতে বলেন। এ সময় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সহসমন্বয়ক সাজিদুল হাসান বাপ্পী হাসপাতালে গিয়ে অনুপস্থিত চিকিৎসকদের হাসপাতালে এসে নির্ভয়ে কাজের জন্য অনুরোধ করেন।
এর প্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার সকাল ৯টায় হাসপাতালে আসেন উপ-পরিচালক ডা. আক্তারুজ্জামান এবং অন্যান্য চিকিৎসকবৃন্দ। সরেজমিন হাসপাতালের বহির্বিভাগ ও আন্তঃবিভাগে বিভিন্ন রুমে চিকিৎসকদের উপস্থিতি দেখতে পেয়েছে সাংবাদিকরা।
ডা. আক্তারুজ্জামান বলেন, আমি মাত্র ১ মাস আগে এ পদে যোগদান করেছি, আমি কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে কোনোকালে জড়িত ছিলাম না। আমার সঙ্গে অন্যায় করা হয়েছে। জোর করে পদত্যাগে স্বাক্ষর করিয়ে নিয়েছে। আমি বিষয়টি মন্ত্রণালয়কে জানিয়েছি। রাতে বিএমএসহ চিকিৎসক নেতা এবং খুলনা মহানগর বিএনপি সভাপতি শফিকুল আলম মনা সাহেব আমাকে কল দিয়ে নির্ভয়ে অফিস করতে বলেছেন। রোগীদের সেবার কথা বিবেচনা করে আমি আবার অফিসে আসছি। আমি আশাকরি যারা আমাদের সঙ্গে এমন করেছে। তাদের সুবুদ্ধির উদয় হবে, রোগীদের স্বার্থে সবাই মিলেমিশে হাসপাতালে কাজ করতে হবে।
মন্তব্য করুন