টানা বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে গোমতী নদীর বাঁধ ভেঙে প্লাবিত হয় কুমিল্লার বিস্তীর্ণ এলাকা। পানিতে ভেসে যায় বিভিন্ন উপজেলার বাসস্থান, কৃষি জমি, খাল বিল ও মাছের ঘের।
প্লাবিত বিস্তীর্ণ এলাকায় পানির সঙ্গে বৃদ্ধি পেয়েছে দেশীয় প্রজাতির ছোট বড় বিভিন্ন প্রজাতির মাছ। এতে এসব এলাকায় কদর বেড়েছে দেশীয় প্রজাতির মাছ ধরার ফাঁদ চাঁইয়ের।
স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সম্প্রতি টানা বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে প্লাবিত হয় উপজেলার এলাকা। গত কয়েক দিন ধরে এসব এলাকা থেকে পানি নামতে শুরু করেছে। তাই স্থানীয় বাসিন্দারা বাঁশের তৈরি ফাঁদ দিয়ে মাছ ধরতে শুরু করেছেন। এতে কদর বেড়েছে বাঁশের তৈরি চাঁই, বুরুন, টইয়া ও পলোসহ মাছ ধরার বিভিন্ন সরঞ্জামের।
সরেজমিনে কুমিল্লা সদর দক্ষিণ উপজেলার চৌয়াড়া বাজারে গিয়ে দেখা যায়, মাছ ধরার উপকরণের পসরা সাজিয়ে বসেছেন বিক্রেতারা।
বিক্রেতা জামশেদ মিয়া বলেন, বর্ষাকাল আসলে ব্যবসা ভালো হয়। পাহাড়ি ঢল ও টানা বর্ষণের কারণে বিভিন্ন এলাকায় পানি ওঠায় নতুন পানিতে মাছ ধরতে এখন শৌখিন মাছ শিকারিরা কিনে নিচ্ছে মাছ ধরার এসব সরঞ্জাম। আকার অনুযায়ী এসব চাঁই ২০০ থেকে ৩০০ টাকা দামে বিক্রি হয়। তবে টইয়া আর পলো ৫০০ থেকে ১০০০ টাকা দামে বিক্রি হয়।
তিনি বলেন, বর্ষা মৌসুমের ছয় মাস তারা এ মাছ ধরার সরঞ্জাম তৈরির কাজে ব্যস্ত থাকেন। চাঁই তৈরিতে ব্যবহৃত হয় তল্লাও কালী জিরা নামে বাঁশ। একটি বাঁশ দিয়ে ৬-৭টি চাঁই তৈরি করা যায় এবং একজন কারিগর দৈনিক ৫-৬ টির বেশি চাঁই তৈরি করতে পারেন না। কারিগররা চাঁই তৈরির জন্য একটি বাঁশ তিনশ’ থেকে চারশ’ টাকায় কিনে থাকেন।
চৌয়াড়া বাজারে চাঁই কিনতে আসা আতাউল গনি জানান, পাহাড়ি ঢলে বাড়ির পাশের জমি ও পুকুর পানিতে ডুবে যায়। এখন পানি নামতে শুরু করায় দেশীয় প্রজাতির মাছ ধরা পড়ছে। রাতের বেলা চিংড়ি এবং দিনে পুঁটিমাছ ধরা পড়ছে বেশি। দেশীয় প্রজাতির মাছ ধরতে তিনি বাজারে চাঁই কিনতে এসেছেন।
কুমিল্লা সদর দক্ষিণ উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. রেজাউল করিম কালবেলাকে বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, চাঁই দিয়ে মাছ ধরা নিষেধ নেই। তবে নিষিদ্ধ জাল দিয়ে ফাঁদ পেতে মাছ ধরা আইনত অপরাধ। কেউ এভাবে মাছ ধরলে তাকে আইনের আওতায় আনা হবে। এ ব্যাপারে প্রশাসনের পক্ষ থেকে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
মন্তব্য করুন