নওগাঁর পোরশা উপজেলা বিএনপির সাবেক সহসভাপতি ও বর্তমানে তেঁতুলিয়া ইউনিয়ন বিএনপির সদস্য তৌফিক শাহ চৌধুরীর বিরুদ্ধে কৃষকের জমি দখলের অভিযোগে থানায় জিডি করা হয়েছে।
বুধবার (৪ সেপ্টেম্বর) রাতে বিএনপির পক্ষে দলের বিএনপি রাজশাহী বিভাগীয় সহসাংগঠনিক সম্পাদক এএইচএম ওবায়দুর রহমান চন্দন এই জিডি দায়ের করেন।
এর আগে গত ৩ সেপ্টেম্বর ‘বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে কৃষকের জমি দখলের অভিযোগ’ শিরোনামে দৈনিক কালবেলায় সংবাদ প্রকাশ হয়। সেখানে বিএনপি নেতা তৌফিক শাহ্ চৌধুরী বিরুদ্ধে ছয় কৃষকের জমি দখলের অভিযোগ ওঠে। দেশের পটপরিবর্তনের পর ক্ষমতার জোরে ওই ছয় কৃষকের ২৪ বিঘা জমি দখল করেন তিনি। প্রতিকার পেতে ওই ছয় কৃষক পৃথকভাবে থানায় লিখিত অভিযোগ করেন। এরপর দৈনিক কালবেলার অনলাইনসহ অন্যান্য অনলাইন ও প্রিন্ট পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশ হয়। ফলে স্থানীয় বিএনপির নেতাকর্মীদের মধ্যে সমালোচনা শুরু হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশে বিএনপির পক্ষ থেকে বুধবার রাত ৯টায় পোরশা থানায় জিডি এ এইচ এম ওবায়দুর রহমান চন্দন।
জিডিতে উল্লেখ করা হয়, দৈনিক কালবেলায় বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে কৃষকের জমি দখলের অভিযোগ শীর্ষক একটি খবর আমাদের দৃষ্টিগোচর হয়েছে। সেখানে বিএনপি নেতা তৌফিক শাহ্ চৌধুরী বিরুদ্ধে ছয় কৃষকের জমি দখলের অভিযোগ উঠেছে। তিনি বর্তমানে বিএনপির কোনো গুরুত্বপূর্ণ পদে নেই। তার ব্যক্তিগত কর্মকাণ্ডের সঙ্গে বিএনপির কোনো প্রকার সংশ্লিষ্টতা নেই। তাই বিষয়টি ভবিষ্যতের জন্য জিডি করার একান্ত প্রয়োজন বলেও উল্লেখ করা হয়।
পোরশা থানার ওসি আতিয়ার রহমান কালবেলাকে বলেন, কালবেলাতে নিউজ প্রকাশ হওয়ায় বিএনপির পক্ষ থেকে রাজশাহী বিভাগীয় সহসাংগঠনিক সম্পাদক এ এইচ এম ওবায়দুর রহমান চন্দন একটি জিডি করেছেন। বিএনপির ভাবমূর্তি নষ্ট করার কারণে তিনি এই জিডি করেছেন। এ ব্যাপারে পরবর্তীতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
ভুক্তভোগী কৃষকদের দাবি, ৫ আগস্ট আ.লীগ সরকারের পতনের পর উদ্ভূত পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে বিএনপি নেতা তৌফিক শাহ জোর করে তাদের জমি দখল করে নিয়েছেন। অথচ আমরা কেউ দলীয় রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত নই। আর বিএনপি নেতা তৌফিক শাহ দাবি করেছিলেন জমিগুলো তার। বরং ১৫বছর আগে ক্ষমতার জোরে তারাই দখলে নিয়েছিল। তারপরও তিনি জমিগুলো দখল করেন নি। এগুলো মিথ্যা ও ভিত্তিহীন বলে মন্তব্য করেছিলেন তিনি।
ছয় কৃষকের করা লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, উপজেলার পোরশা মিনাবাজার এলাকার বাসিন্দা সাব্বির হামজা চৌধুরী নামে এক ব্যক্তির কাছ থেকে জমি বর্গা নিয়ে তেঁতুলিয়া মঠবাড়ী গ্রামের কৃষক দুর্জয় মন্ডল, গোপালপুর গ্রামের মোকলেসুর রহমান, মাহতাব কাজী, সলেমান ও খায়রুল ইসলাম এবং পোরশা কাঠপুকুর গ্রামের শ্রী রবি চাষাবাদ করে আসছেন। ওই ছয় কৃষকের বর্গা নেওয়া জমির মোট পরিমাণ ২৪ বিঘা। চলতি আমন মৌসুমে তারা ওই সব জমিতে ধান আবাদ করেছেন। কিন্তু আ.লীগ সরকারের পতনের পর বিএনপি নেতা তৌফিক শাহ্ ও তার অনুসারীরা দলবদ্ধ হয়ে ওই ছয় কৃষকের জমি দখল করে নেয়। এরপর থেকে তারা জমিতে যেতে পারছেন না। এমনকি জমির কাছে গেলে তাদেরকে প্রাণে মেরে ফেলা হবে বলে হুমকি-ধামকি দেওয়া হচ্ছে।