বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে যোগ দিয়ে গুলিতে গুরুতর আহত হয়েছেন জয়পুরহাটের পাঁচবিবি উপজেলার চকশিমুলীয়া গ্রামের আব্দুল হামিদের ছেলে আব্দুল কাদের। তার বাবা, পেশায় একজন পান-বিড়ি বিক্রেতা হলেও ছেলেকে নিয়ে স্বপ্ন দেখতেন আকাশছোঁয়া। এ কারণে ছেলেকে পড়াশোনার জন্য পাঠান ঢাকায়। সেখানকার আহছিনিয়া মিশন ইনস্টিটিউট টেকনোলজির প্যাথলজি বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন তিনি।
গত (৪ আগস্ট) বৈষম্যবিরোধী ছাত্র জনতার আন্দোলনে গিয়ে গুলিবিদ্ধ হন কাদের। আর তাতেই পরিবারের স্বপ্ন ভেঙে চুর্ণবিচূর্ণ হয়। বর্তমানে আহত অবস্থায় বাড়িতেই আছে কাদের।
চিকিৎসকরা বলছেন, কাদেরের সুস্থ হতে উন্নত চিকিৎসার প্রয়োজন। কিন্তু গরিব বাবার পক্ষে তার চিকিৎসার ব্যয়ভার বহন করা সম্ভব হচ্ছে না। এ কারণে সহযোগিতার আবেদন জানিয়েছেন।
গুলিবিদ্ধ আব্দুল কাদের বলেন, আমি ঢাকার আহছিনিয়া মিশন ইনস্টিটিউট টেকনোলজির প্যাথলজি বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আমি একজন সম্মুখযোদ্ধা ছিলাম। আন্দোলনের প্রথম থেকেই আমিসহ আমার প্রতিষ্ঠানের প্রায় সবাই রাজপথে ছিলাম। গত (৪ আগস্ট) মিরপুর-১০ নম্বর এলাকায় ছাত্র আন্দোলনের সময় একটি রবার বুলেট গুলি আমার বুকের ডান পাশে লাগে এবং পিঠের পেছন পর্যন্ত ছিদ্র হয়ে যায়। আমি রাস্তায় পড়ে যাই সহপাঠীরা আমাকে প্রথমে আল-হেলাল হাসপাতালে নেয়। ওই হাসপাতালে গুলি বের করার মতো যন্ত্রপাতি নেই বলে জানায় ডাক্তার। পরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্ররা আমাকে সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে ভর্তি করেন। সেখানকার ডাক্তারও প্রথমে চিকিৎসা করতে অপারগতা প্রকাশ করে বক্ষব্যাধি হাসপাতালে স্থানান্তর করতে চায়। সেখানে আমার শ্বাস-প্রশ্বাস সচল রাখতে অন্য এক মানবিক ডাক্তার বুকের পাশে ছিদ্র করে নল লাগিয়ে দেয়। ৩ দিন পর পিঠ ছিদ্র করে রাবারের গুলিটি বের করেন।
আব্দুল কাদের আরও বলেন, সামনেই আমার ফাইনাল পরীক্ষা হলেও এমন শরীর নিয়ে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করা সম্ভব হবে না। উন্নত চিকিৎসা করার মতো আমার অভাবী পরিবারের পক্ষে সম্ভব নয়। বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কদের প্রতি আমার নিবেদন আমার চিকিৎসার যেন সুব্যবস্থা করা হয়।
ছাত্র কাদেরের মা কামরুন বলেন, আমার ছেলে আমার বুকে জীবিত ফিরে এসেছে আল্লাহর দরবারে লাখ-কোটি শুকরিয়া। গুলিবিদ্ধ হয়ে ঢাকায় হাসপাতালে ১৬ দিন চিকিৎসা শেষে বাড়িতে ফিরে এসেছে। আগের মতো এখন সে সুস্থ সবল চলাফেরা ও জোরে কথা বলতে পারে না। ডা. বলছেন তার আরও উন্নত চিকিৎসার প্রয়োজন। আমরা গরিব মানুষ এত টাকা কোথায় পাব।
মন্তব্য করুন