লক্ষ্মীপুরে চলমান বন্যা পরিস্থিতির এখনও তেমন কোনো উন্নতি হয়নি । প্রতিদিন কোথাও এক ইঞ্চি, কোথাও আবার দুই ইঞ্চি পানি কমেছে। এতে করে বন্যাকবলিত এলাকায় বাসিন্দাদের দুর্ভোগ বেড়েই চলেছে। জেলাজুড়ে প্রায় ৬ লাখ মানুষ পানিবন্দি। এদের কেউ কেউ আশ্রয়কেন্দ্রে থাকলেও বেশিরভাগ মানুষ বাড়িঘর ছেড়ে যায়নি। চরম দুঃখ-কষ্ট নিয়ে বসবাস করছে এ জেলার ৫টি উপজেলার বন্যাকবলিত এলাকার বাসিন্দারা। বন্যায় জেলার প্রায় ৮০ শতাংশের বেশি এলাকা প্লাবিত হয়।
জানা যায়, জেলাতে ৩২ হাজারের বেশি লোকজন আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান নিয়েছেন। এরই মধ্যে দেখা দিয়েছে পানিবাহিত নানান রোগবালাই। সড়ক যোগাযোগব্যবস্থা বেঙে পড়ায় কোমর বা হাঁটুপানি মাড়িয়ে যাতায়াত করতে হচ্ছে। কারও কারও ভেলা বা নৌকাই এখন যাতায়াতের একমাত্র ভরসা। খাল-বিল দখল ও নানা প্রতিবন্ধকতা থাকায় পানি প্রবাহ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় একেবারেই ধীরগতিতে পানি কমছে। ফলে বন্যাকবলিত এলাকার বাসিন্দাদের দুর্ভোগ দিন দিন বেড়েই চলেছে।
এদিকে বন্যায় জেলাতে কৃষি মৎস্য এবং প্রাণিসম্পদ খাতে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোর তথ্য অনুযায়ী, কৃষিখাতে ২২৭ কোটি, প্রাণিসম্পদ খাতে ৮ কোটি ৬৫ লাখ এবং মৎস্য খাতে ২৪০ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। এতে পথে বসায় উপক্রম হয়েছে কৃষক, মৎস্য চাষি ও পশু-পোলট্রি খামারিদের।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী নাহিদ উজ জামান বলেন, জেলার রামগতি এবং কমলনগর উপজেলাতে বন্যার পানি কিছুটা কমতে শুরু করলেও সদর উপজেলার পানি নামতে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। এ কারণে ওই উপজেলার পরিস্থিতি তেমন উন্নতি হয়নি। পানি নিষ্কাশনের খালের বিভিন্ন স্থান দখল ও প্রতিবন্ধকতা থাকায় পানি প্রবাহের গতি নেই।
জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মো. ইউনুস মিয়া বলেন, সোমবার (২ সেপ্টেম্বর) পর্যন্ত সরকারি হিসেবে অনুযায়ী ৫ লাখ ৬৯ হাজার ৫০০ জন লোক পানিবন্দি হয়ে আছে। জেলার ৪১৭টি আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছে ৩২ হাজার ৫১৯ মানুষ। জেলার প্রায় ৩০ শতাংশ এলাকা এখনো পানির নিচে।
তিনি বলেন, দিনে এক থেকে তিন ইঞ্চি করে পানি ধীরগতিতে নামছে।
মন্তব্য করুন