ফরিদপুরে বিএনপি নেতাকে হত্যার অভিযোগে জেলা সদরের ডিক্রিরচর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এবং ইউনিয়ন যুবলীগের সাবেক আহ্বায়ক মো. মেহেদি হাসান মিন্টুসহ তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে । নিহত হিরু শেখ ডিক্রিরচর ইউনিয়নের ২ নং ওয়ার্ড বিএনপির সদস্য ছিলেন।
সোমবার (২ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেন কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. হাসানুজ্জামান।
এর আগে গত ২৯ আগস্ট ফরিদপুর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের ১নং আমলি আদালতে রুমন শেখ বাদী হয়ে হত্যার অভিযোগ করেন। পরে তা শনিবার (৩১ আগস্ট) ফরিদপুর কোতোয়ালি থানায় রুজু হয়।
মামলায় ডিক্রিরচর ইউনিয়নের ২ নং ওয়ার্ড যুবলীগের সাবেক সভাপতি আলমগীর ফকির (৩৮), জাহাঙ্গীর ফকির (৩২), আলমাস ফকির (৪৩), মোহাম্মদ হক ফকির (৫৫), ইলিয়াস ফকির (৩০), সাব্বির ফকির (৩২), রফিক শেখ (৪০), রশীদ শেখ (৬০), বাদশা ফকির (৫০), মুমতাজ বেপারী (৫৫) ও সেলিম বেপারী (৪৬) নামে ১২ জনের নামোল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা আরো ১০ থেকে ১২ জনকে আসামি করা হয়েছে।
মামলার বাদি রুমন শেখ এজাহারে উল্লেখ করেন, ২০২০ সালের ৬ নভেম্বর শুক্রবার রাত ১১টার দিকে তার পিতা হিরু শেখকে ঘুম থেকে ডেকে তুলে মেহেদি হাসান মিন্টু যেতে বলেছে বলে বাড়ি থেকে বের করে নিয়ে যায় রফিক ও সাব্বির নামে দুই আসামী। এরপর সিএন্ডবি ঘাটের টোল ঘরের ফাঁকা রাস্তায় নিয়ে হকিস্টিক ও লোহার রড দিয়ে পিটিয়ে ও পা দিয়ে আঘাত করে মেরে চ্যাংদোলা করে রাস্তার পাশে ফেলে রেখে যায়। এরপর তার ভাই ও অন্যান্যরা আহতাবস্থায় হিরু শেখকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিতে গেলে পথিমধ্যে তাদের ভ্যান আটকে তাদের হত্যার হুমকি দিয়ে বাড়ি পাঠিয়ে দেয়া হয়। স্থানীয় চিকিৎসক দিয়ে চিকিৎসা দেয়া হলেও ঘটনার তিনদিন পরে উপযুক্ত চিকিৎসার অভাবে ৯ নভেম্বর তার পিতা মারা যান। আসামীদের ভয়ে তারা থানা পুলিশকে ঘটনা জানাইতে পারেননি ফলে লাশের সুরতহাল রিপোর্ট কিংবা পোস্টমর্টেমও করা হয়নি।
এ ঘটনায় গত ৩০ আগস্ট কোতোয়ালি থানায় একাটি মামলা রজু করা হয়ে। এর আগে ২৯ আগস্ট ফরিদপুরের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের ১ নং আমলী আদালতে এ ঘটনায় একটি নালিশী দরখাস্ত দাখিল করলে আদালত সেটি আমলে নিয়ে ৭২ ঘন্টার মধ্যে এজাহাররুপে গ্রহণের জন্য কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেন।
মামলার বিষয়ে কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হাসানুজ্জামান কালবেলাকে জানান, আদালতের নির্দেশে এ ঘটনায় থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। আসামীদের গ্রেফতারে জোর চেষ্টা চলছে।