বন্যার পানিতে প্লাবিত হয়েছে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ১১টি জেলা। এতে প্রাণহানির সঙ্গে পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন লাখ লাখ মানুষ। অন্যদের মতো এ বিপুল বন্যাদুর্গত মানুষের পাশে দাঁড়াতে ছবি বিক্রি করছে বরিশাল চারুকলার এক দল শিল্পী। তাদের বিক্রি করা অর্থের ৩২ হাজার টাকা এরই মধ্যে বরিশাল জেলা প্রশাসক শহিদুল ইসলামের মাধ্যমে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার ত্রাণ তহবিলে জমা দিয়েছেন শিল্পীরা।
রোববার (১ সেপ্টেম্বর) দুপুরে বরিশাল জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে এ টাকার চেক প্রদান করা হয়।
জানা গেছে, চারুকলা বরিশাল নামে একটি ফাইন আর্টস প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী ও শিল্পী চলমান বন্যাদুর্গতের জন্য কিছু করার মানসিকতা নিয়ে তারা নিজেরা ছবি একে বাঁধাই করে তা বিক্রি করছেন। এই ছবি বিক্রয়লব্ধ অর্থের ৩২ হাজার টাকা প্রধান উপদেষ্টার তহবিলে পাঠানো হয়েছে।
শিল্পীরা জানান, আমরা টিভিতে বন্যার ছবি দেখেছি, আর তা দেখেই প্যাস্টেল রং দিয়ে এমন ছবি আমাদের ক্যানভাসে ফুটিয়ে তুলেছি। আমাদের আঁকা ছবি সবাই স্বতঃস্ফূর্তভাবে কিনছেন। এর আগেও সিলেটে বন্যায় আমরা ছবি এঁকে বিক্রয়লব্ধ অর্থ ত্রাণ তহবিলে প্রদান করেছি। মানুষের এই বিপদের দিনে আমরা শিল্পীরাও পাশে আছি।
ফাইন আর্টস শিল্পী তাপস কর্মকার জানান, বন্যার্তদের সাহায্যের জন্য এই প্রতিষ্ঠানের ৫০ জন শিল্পী ৫০টি ছবি এঁকেছেন। এসব ছবিই আমরা ঘুরে ঘুরে বিক্রি করছি। এরই মধ্যে আমাদের ফান্ডে ছবি বিক্রয়লব্ধ ৩২ হাজার টাকা জমা হয়েছে। আমাদের এই ছবি বিক্রির ক্যাম্পিং আরও কয়েকদিন চলবে। আমরা জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধান উপদেষ্টার ত্রাণ তহবিলে এই টাকা প্রথম পর্যায়ে পাঠাচ্ছি। এ কাজে চারুশিল্পীরা তাদের তৃপ্তি নিয়ে এগিয়ে এসেছেন বলে জানান তিনি।
চারুকলা বরিশালের সভাপতি দীপংকর চক্রবর্তী জানান, ভয়াবহ বন্যা মোকাবিলায় শিল্পীদেরও করণীয় রয়েছে। এই মনোভাব সবার মধ্যে কাজ করছে। সে কারণে দ্বিতীয় শ্রেণি থেকে বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া শিল্পীরা সবাই এগিয়ে এসেছে। সবাই অসহায় মানুষগুলোর পাশে দাঁড়াতে চায়; তাদের জন্য কিছু করতে চায় এই অনুভূতি এগিয়ে নিতেই আমরা বন্যার্তদের জন্য এ কর্মসূচি ঘোষণা করে ব্যাপক সাড়া পাচ্ছি।
জেলা প্রশাসক শহিদুল ইসলাম জানান, শিল্পীরা তাদের আঁকা ছবি বিক্রি করে যে অর্থ বন্যার্তদের সহায়তায় দেওয়ার জন্য এগিয়ে এসেছেন, তা একটি মহৎ উদ্যোগ। আমি এটিকে সাধুবাদ জানাই। পাশাপাশি আরও যেসব সংগঠন রয়েছে তারাও যেন এভাবে এগিয়ে আসে। আমরা একে অন্যের সাহায্যে এভাবেই এগিয়ে আসি এটাই বাংলাদেশের সৌন্দর্য। বরিশাল জেলায় আমরা বিভিন্ন সংগঠনকে দেখেছি তারা তাদের সাধ্যমতো এগিয়ে এসেছে বানভাসিদের সহায়তায়। বিশেষ করে ত্রাণ সহায়তা থেকে শুরু করে এখন তাদের পুনর্বাসনের জন্য এগিয়ে এসেছে। আমিও আমার মতো করে তাদের সহায়তা করছি এবং সবাইকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানাচ্ছি।
মন্তব্য করুন