খুলনায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ৮৫ জনের নামে হত্যা মামলা করা হয়েছে। এতে অজ্ঞাত আরও ৪০০ জনকে আসামি করা হয়। গত বৃহস্পতিবার (২৯ আগস্ট) দুপুরে খুলনা জেলা বিএনপির সদস্য সচিব এসএম মনিরুল হাসান বাপ্পী বাদী হয়ে ফুলতলা থানায় এ মামলা করেন।
মামলায় আসামিরা হলেন- সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, শেখ হাসিনার চাচাতো ভাই শেখ হেলাল উদ্দিন, শেখ সালাউদ্দিন জুয়েল, শেখ সোহেল, শেখ রুবেল, শেখ বেলাল উদ্দিন, কেসিসির সাবেক মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক, আ.লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল হোসেন, সাবেক প্রতিমন্ত্রী বেগম মন্নুজান সুফিয়ান, সাবেক সংসদ সদস্য আব্দুস সালাম মুর্শেদী, মহানগর আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক এমডি বাবুল রানা ও জেলা আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. সুজিত কুমার অধিকারী।
মামলার এজাহারে এসএম মনিরুল হাসান বাপ্পী উল্লেখ করেন, ২০২২ সালের ২২ অক্টোবর খুলনা মহানগরীর প্রাণকেন্দ্র ডাকবাংলো মোড়ের সোনালি ব্যাংক চত্বরে রাস্তার ওপর বিএনপির বিভাগীয় সমাবেশে যোগদানের লক্ষ্যে ফুলতলা উপজেলা বিএনপির প্রায় ২ হাজার নেতাকর্মী ফুলতলা থেকে স্থলপথ দিয়ে রওনা দেন। পথিমধ্যে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে আওয়ামী সন্ত্রাসীরা বাধা প্রদান করে। পরে তারা বিকল্প নদীপথে ১০টি ট্রলার যোগে ফুলতলার শিকিরহাট থেকে সমাবেশের উদ্দেশ্যে রওনা হয়ে দিঘলিয়া উপজেলার চন্দনীমহল কাটাবনে বেলা সাড়ে ১১টার সময় পৌঁছায়।
এজহারে আরও উল্লেখ করেন, এ সময় আসামিরা আগে থেকে শটগান, কাটা রাইফেল, বন্দুক, গিডল, রামদা, চাইনিজ কুড়াল, রড, জিআই পাইপ, চাপাতি, বোমা ও লাঠি নিয়ে আক্রমণ করলে নেতাকর্মীরা গুরুতরভাবে আহত হন। অনেকের হাত-পা ও মাথা ফেটে রক্তাক্ত জখম হয়। ওই জায়গায় চরম ভীতিকর অবস্থার সৃষ্টি হয়। আহত কর্মীরা কোনো রকমে প্রাণ নিয়ে ফুলতলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হলে সেখানেও তাদের ওপর হামলা চালানো হয়। ভয়ে আহতদের অনেকে হাসপাতাল ত্যাগ করেন। এদের মধ্যে গুরুতর আহত শেখ সাজ্জাদুজামান জিকোকে অন্যস্থানে চিকিৎসা করানো হয়। চিকিৎসারত অবস্থায় ২৪ নভেম্বর আনুমানিক রাত ১০টার সময় পায়গ্রাম কসবার কাছারিহাটে ডিসপেনসারিতে ডাক্তার দেখিয়ে ওষুধ আনতে গেলে তাকে আবারও আ.লীগের সন্ত্রাসীরা পিটিয়ে হত্যা করে।
অপরদিকে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আযম খান সরকারি কমার্স কলেজের সমন্বয়কারী শেখ রাফসান জানীকে জীবননাশের হুমকি ও গুলি করে হত্যা প্রচেষ্টার অভিযোগে খুলনা মহানগর আ.লীগের সভাপতি সাবেক সিটি মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক ও কেন্দ্রীয় আ.লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এসএম কামাল হোসেন, মহানগর যুবলীগের সভাপতি শফিকুর রহমান পলাশ, মহানগর যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ শাহজালাল হোসেন সুজন ও মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক সভাপতি নাসিমের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরও ৪-৫ জনকে আসামি করে খুলনা থানায় মামলা করা হয়। গত বৃহস্পতিবার আহত রাফসান জানীর বাবা অ্যাডভোকেট শেখ রফিকুজ্জামান বাদী হয়ে এ মামলা করেন।
এদিকে দিঘলিয়া থানায় সাবেক এমপি আব্দুস সালাম মুর্শেদীকে প্রধান আসামি করে ৮৪ জনের নাম উল্লেখসহ বিএনপি নেতাকর্মীদের ওপর হামলার ঘটনায় মামলা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার দিঘলিয়া থানায় করা মামলার বাদী হয়েছেন জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মোল্লা খায়রুল ইসলাম। ২০২২ সালের ২৫ আগস্ট সন্ধ্যায় দিঘলিয়ার পুটিমারী বটতলায় এ ঘটনা ঘটে।
মামলায় তেরখাদা উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান শরফুদ্দিন বিশ্বাস বাচ্চুসহ ৮৪ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত ২৫ জনকে আসামি করা হয়েছে।
মন্তব্য করুন