রংপুরে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে মাহামুদুল হাসান মুন্না নিহতের ঘটনায় ১২৮ নামে হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২৯ আগস্ট) দুপুরে রংপুর মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট কোতোয়ালি আমলি আদালতে মামলাটি করেন মুন্নার বাবা আবদুল মজিদ।
মামলায় সাবেক সমাজকল্যাণমন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদ, তার ছেলে কালীগঞ্জ উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান রাকিবুজ্জামান আহমেদ, সাবেক প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মোতাহার হোসেন, সাবেক স্থানীয় সরকার ও পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী মসিউর রহমান রাঙ্গা, লালমনিরহাট জেলা আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক এমপি মতিয়ার রহমান, সাবেক এমপি অ্যাড. সফুরা খাতুন ও রংপুর মহানগর আ.লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক তুষার কান্তি মন্ডল, রংপুর সদরের মমিনপুর ইউনিয়ন চেয়ারম্যান মোত্তালেবুল হক, সদ্যপুষ্করিনী ইউপি চেয়ারম্যান সোহেল রানা, মমিনপুর ইউপি চেয়ারম্যান মিনহাজুল হক, যুবলীগ নেতা ও মিঠাপুকুরের কাফ্রিখাল ইউপি সদস্য ফুয়াদ মণ্ডলসহ ১২৮ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। মামলায় অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে ৫০০ থেকে ৬০০ জনকে।
মামলার আবেদনে বলা হয়, সাবেক সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের গত ৩ আগস্ট প্রেস ব্রিফিংয়ে ঘোষণা দেন যে, সারাদেশে রাজপথে থাকবে আ.লীগ। ওই ঘোষণা মোতাবেক ১ থেকে ৫ নং আসামির নেতৃত্বে লালমনিরহাট থেকে ১০-১৫টি বাস অন্যান্য আসামিরাসহ অজ্ঞাতনামা ১০০ থেকে ১৫০ জন আসামি ৬ নং আসামির আহ্বানে ডাকা রংপুর শহরে বৈষম্য বিরোধী আন্দোলন প্রতিহত কর্মসূচিতে যোগ দেয়। ওই কর্মসূচিতে রংপুরের অন্যান্য আসামিরাও যোগ দেয়।
ঘটনার দিন ৪ আগস্ট বেলা সাড়ে দশটার দিকে মাহামুদুল হাসান মুন্না তার বাবার জন্য দুপুরের খাবার নিয়ে কাউনিয়া উপজেলার বরুয়াহাট এলাকার বাড়ি থেকে যাওয়ার সময় পথিমধ্যে রংপুর শহরের মিনি সুপার মার্কেটের পাশে ভাঙ্গা মসজিদের সামনে পৌঁছালে ১-৬ নং আসামির নেতৃত্বে ৭ থেকে ১২৮ নং আসামিসহ অজ্ঞাতনামা ৫০০-৬০০ জন আসামি ছাত্র-জনতার মিছিলে হামলা করেন। আসামিদের হামলার মুখে ছাত্র-জনতার মিছিল ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়। তখন ওই স্থান পার হওয়ার সময় ১ থেকে ৬ নং আসামির নেতৃত্বে ৭ থেকে ১২৮ নং আসামিসহ অজ্ঞাতনামা ৫০০-৬০০ জন মাহামুদুল হাসান মুন্নাকে বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনকারী মনে করে দেশীয় অস্ত্র দিয়ে বেধড়ক মারধর করেন। এতে গুরুতর আহত হয়ে রাস্তায় পড়ে থাকেন মুন্না। এ সময় অজ্ঞাতনামা দোকানদাররা তাকে উদ্ধার করে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করালে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
মামলা দায়েরের বিষয়টি নিশ্চিত করে বৈষম্য বিরোধী আইনজীবী আন্দোলনের সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট পলাশ কান্তি নাগ বলেন, বিচারক জাহাঙ্গীর হোসেন মামলাটি এজাহার হিসেবে রেকর্ড করার জন্য সংশ্লিষ্ট থানাকে নির্দেশ দিয়েছেন।
অন্যদিকে ১৯ জুলাই ছাত্রজনতা আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী রংপুর সরকারি কলেজের ছাত্র জিম গুলিবিদ্ধ হওয়ায় ঘটনায় আরও একটি মামলা হয়েছে একই আদালতে। এই মামলায় সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, আইজিপি,পুলিশ কমিশনারসহ ৪৬ জনের নাম উল্লেখ অজ্ঞাতনামা ১০০-১৫০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
আইনজীবী আলাউদ্দিন আহমেদ বলেন, আমরা আশা করি এর সঠিক বিচার এবং জড়িতদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত হবে।
মন্তব্য করুন