পঞ্চগড়ের আটোয়ারীতে খোঁজ মিলল ছয় বছর পূর্বে হারিয়ে যাওয়া নীলফামারীর এক ভারসাম্যহীন নারীর। তার নাম ফাতেমা বেগম (৫৫)। বাড়ি নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলায়। বৃহস্পতিবার (২৯ আগস্ট) বিকেলে পরিবারের কাছে ওই মহিলাকে তুলে দেওয়া হয়।
জানা যায়, আটোয়ারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেইন গেইটের সামনের গলিতে গত দেড় বছর ধরে অবহেলিত অবস্থায় থাকত এক ভারসাম্যহীন মহিলা। কারও সঙ্গে কথা বলতেন তিনি। যে যা পারতো সামান্য খাবার এনে দিলে তা খেত। বৃষ্টির সময় পাশের ওষুধের দোকানের বারান্দায় ঘুমাতে দেখা যেত তাকে। এভাবে ওই গলিতেই প্রায় দেড় বছর কাটিয়েছেন তিনি।
এর আগে তিনি উপজেলার আলোয়াখোয়া ইউনিয়নের পাল্টাপাড়া বাজারে দীর্ঘদিন ছিলেন বলে জানান এলাকাবাসী। পরে চলে যান আটোয়ারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সামনে। এখানেই অতিবাহিত করেন প্রায় দেড় বছর।
স্থানীয় শামসুল আজম নামে এক স্কুল শিক্ষকের বউ লাভলী বেগম জানান, ওই ভারসাম্যহীন মহিলাকে গলিতে পরে থাকতে দেখে আমাদের দয়া হতো তাই নিজের বাসায় নিয়ে যাই। পরে বিভিন্ন সেবাশুশ্রূষার মাধ্যমে তার পরিচয় জানার চেষ্টা করি। একপর্যায়ে তিনি জানান, তার বাড়ি নীলফামারী জেলার কিশোরগঞ্জ উপজেলায়। ধীরে ধীরে তার সন্তান ও স্থানীয় ইউপি সদস্যের কথা বলেন তিনি। ছেলের নাম না বলতে পারলেও ইউপি সদস্যের নাম দীপু বলে জানান।
একদিকে আমার স্বামীর পরিচিত দৌলত মাস্টারের নীলফামারিতে যাওয়া-আসা ছিল। আমরা তাকে বিষয়টি অবগত করি। পরে তিনি নীলফামারির কিশোরগঞ্জে গিয়ে ইউপি সদস্য দীপু'র খোঁজ করেন। খোঁজের এক পর্যায়ে তাকে পাওয়া যায়। আজকে তার ছেলে ও মেয়ে উপস্থিত হয়ে তাকে নিয়ে যায়।
ভারসাম্যহীন ওই মহিলার মেয়ে মিষ্টি জানান, ২০১৮ সালের নির্বাচনের সময় ভোট দিতে গিয়ে আর বাসায় ফেরা হয়নি মায়ের। আগে থেকে মাথায় একটু সমস্যা ছিল। ভোট দিতে গিয়ে রাস্তা ভুলে হারিয়ে যায়। আমরা গত ছয় বছরে অনেক খোজাখুজি করেছি কিন্তু কোথাও পাইনি। থানায় সাধারণ জিডিও করা হয়েছিল। আজ আমার মাকে পেয়ে আমরা অনেক খুশি। যারা আমার মাকে নিরাপদে ও সেবাযত্নের মাধ্যমে রেখেছিলেন তাদের প্রতি আমরা চিরকৃতজ্ঞ।
মন্তব্য করুন