সাতক্ষীরা সদ্য যোগদান করা পাসপোর্টের সহকারী পরিচালক উত্তম কুমার দেবের বিরুদ্ধে অফিসের রুমের দরজা ভেতর থেকে বন্ধ রাখার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে সেবা গ্রহীতাদের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২৯ আগস্ট) বেলা ১২টার দিকে সাতক্ষীরা পাসপোর্ট অফিসে গিয়ে ঘটনার সত্যতা পায় গণমাধ্যম কর্মীরা।
এদিকে গণমাধ্যমকর্মীদের উপস্থিতির বিষয়টি জেনেও প্রায় ঘণ্টাখানেক অফিস রুমের দরজা বন্ধ রাখেন তিনি। পরে অফিস স্টাফদের মধ্যে একজন দীর্ঘ সময় দরজায় কড়া নাড়লে একপর্যায়ে তিনি দরজা খুলে বাইরে আসেন। সাংবাদিকরা গত এক সপ্তাহে সেবা গ্রহীতাদের সংখ্যা জানতে চাইলে উপপরিচালক উত্তম কুমার জানান, কোনো তথ্য দিতে পারবেন না।
তিনি বলেন, কোনো তথ্য নিতে হলে ঢাকা অফিসে যোগাযোগ করতে হবে। তাছাড়া এ সময় তিনি অফিস কক্ষে উপস্থিত সাংবাদিকদের প্রবেশ করতে দেননি।
সাতক্ষীরা পাসপোর্ট অফিসে সেবা নিতে আসা অমল চন্দ্র জানান, সকাল ১১টার দিকে অফিস প্রধানের রুমের সামনে যাওয়ার পর রুমের দরজা ভেতর থেকে বন্ধ দেখা যায়। অনেক চেষ্টা করেও তার সঙ্গে দেখা করা যায়নি। পাসপোর্ট হারিয়ে যাওয়ায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করে আসতে বলেছে, প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে আসার পর অফিসের অন্য স্টাফরা বলছে জিডি হয়নি। সেবার নামে ভোগান্তিতে পড়েছে আমার মতো শত শত সেবা গ্রহীতা।
আল আমিন নামে অপর এক সেবা গ্রহীতা জানান, তার জাতীয় পরিচয়পত্রের ত্রুটি আছে জানিয়ে বের করে দিয়েছেন পাসপোর্টের উপপরিচালক উত্তম কুমার। সব ঠিক থাকার পরেও তার আবেদন জমা নিচ্ছে না দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা।
এসব বিষয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব (সুরক্ষা সেবা বিভাগ) মো. মশিউর রহমান বলেন, চলতি সপ্তাহের রোববারে নারী সাংবাদিক সঙ্গে সাতক্ষীরা পাসপোর্টের সহকারী পরিচালকের অশোভন আচারণের বিষয়ে অবগত রয়েছি। আজকের বিষয়টিও শুনলাম। এসব বিষয় খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
প্রসঙ্গত, তথ্য চাওয়ায় সাংবাদিকদের সঙ্গে অসদাচরণ করাসহ বেশ কয়েকটি অভিযোগে জামালপুর থেকে সাতক্ষীরা আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসে গত রোববার (২৫ আগস্ট) যোগ দিয়েছেন সহকারী পরিচালক উত্তম কুমার দেব। যোগদানের প্রথম দিনেই পাসপোর্ট অফিসে সংবাদ সংগ্রহকালে তথ্য চাওয়ায় চ্যানেল টুয়েন্টিফোরের সাতক্ষীরা জেলা প্রতিনিধি আমিনা বিলকিস ময়নাকে লাঞ্ছিত করেন তিনি। এ ঘটনায় বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়। তাৎক্ষণিকভাবে বিষয়টি জানতে পেরে গণমাধ্যমকর্মী আমিনা বিলকিস ময়নার কাছে ফোন দিয়ে দুঃখ প্রকাশ করেন পাসপোর্ট অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক জসিম উদ্দিন। তিনি ঘটনায় জড়িত ব্যক্তির দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আশ্বাস দেন।
মন্তব্য করুন