সিলেটের ওসমানীনগরে ছেলের বিয়ের সোনা ক্রয় করতে গিয়ে নিখোঁজের চার দিন পর একটি বাড়ির পরিত্যক্ত সেপটিক ট্যাংক থেকে আব্দুল জলিল (৫৫) নামের বৃদ্ধের লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। বুধবার (২৮ আগস্ট) দুপুরে উপজেলার তাজপুর ইউনিয়নের কাদিপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
এর আগে গত রোববার (২৫ আগস্ট) সন্ধ্যার পর থেকে আব্দুল জলিল নিখোঁজ ছিলেন। তিনি উপজেলার উছমানপুর ইউনিয়নের পাঁচপাড়া গ্রামের মৃত জাহির উল্যার ছেলে।
আব্দুল জলিলের পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, সম্প্রতি আব্দুল জলিল তার ছেলের বিয়ের জন্য সোনা ক্রয় করতে তাজপুর বাজারে যান। এ সময় তাসনিম ভেরাইটিজ স্টোরের কর্মচারী কামরান আহমদ (২৫) ও কাদিপুর গ্রামের মাদক ব্যবসায়ী ছালেক মিয়া (৩৫) তাদের কাছ থেকে কম মূল্যে সোনা কেনার প্রস্তাব দেন। এতে তারা রাজি হলে অগ্রিম দেড় লাখ টাকা দেন। গত ২৫ আগস্ট বিকেল ৪টার দিকে আরো দেড় লাখ টাকা দিয়ে চার ভরি সোনা বোঝে নিতে তাজপুর বাজারে আসার পর আব্দুল জলিল নিখোঁজ হন। নিখোঁজের চার দিন পর কাদিপুর গ্রামের তবারক আলী তছিমের ছেলে ছালেক মিয়ার প্রতিবেশী দিলদার হোসেনের বাড়ির একটি টয়লেটের ট্যাংকি থেকে তার লাশ উদ্ধার করা হয়।
স্থানীয়দের ধারণা, নিহত আব্দুল জলিলের কাছে সোনা বিক্রির কথা বলে প্রতারণা করে টাকা আত্মসাতের জন্য সংঘবদ্ধভাবে তাকে হত্যা করে লাশ গুম করে রাখা হয়। এ ঘটনায় ছালেক মিয়া ও তার স্ত্রী তামান্না বেগম, দোকান কর্মচারী কামরান আহমদ ও সানী নামের মোট চারজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশ আটক করেছে বলে স্থানীয় সূত্র নিশ্চিত করেছে।
নিহতের স্ত্রী মাহমুদা বেগম জানান, ভাড়েরা গ্রামের কামরান নামের একজনের কাছ থেকে ৩ লাখ টাকায় ৪ ভরি সোনা কিনতে প্রথমে দেড় লাখ টাকা নিয়ে যান আমার স্বামী আব্দুল জলিল। পরে আরো দেড় লাখ টাকা নিয়ে বাড়ি থেকে বের হলেও তার আর কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি।
ওসমানীনগর থানার ওসি রাসেদুল হক কালবেলাকে বলেন, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে এটি একটি হত্যাকাণ্ড। সেপটিক ট্যাংকের ভেতর থেকে আব্দুল জলিল লাশ পাওয়া যায়। কয়েকদিন আগে তিনি নিখোঁজ হয়েছিলেন। জলিল মূলত একটি প্রতারকচক্রের স্বীকার হয়েছিলেন। প্রতারকচক্রের একজন মেয়ে কম দামে সোনা বিক্রি করবে বলে ওনাকে ফোন দিয়েছিল। ওনি টাকা নিয়ে তা কিনতে গিয়েছিলেন। ত তিনি বলেন, প্রতারকচক্র ওনার কাছ থেকে টাকা ছিনিয়ে নিয়ে হত্যা করে। বিষয়টি লুকানোর জন্য লাশ সেপটিক ট্যাংকের ভেতরে ফেলে চলে যায়। ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য কয়েকজনকে আটক করা হয়েছে। নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় মামলা দায়ের প্রক্রিয়াধীন। এ ব্যাপারে পুলিশের তদন্ত ও অভিযান অব্যাহত আছে।