খুলনায় মহানগর শ্রমিক লীগের সহসভাপতি ফরহাদ হোসেনের বিরুদ্ধে জ্বালানি তেল ব্যবসায়ীদের জিম্মি, তেল লুট ও পরিবহন দখলের অভিযোগ উঠেছে। থানায় অভিযোগ করেও প্রতিকার মিলছে না। তার এ কর্মকাণ্ডে সরকারি ডিপোর কর্তাও জড়িত বলে জানা গেছে। যা নিয়ে জ্বালানি সেক্টরে অস্থিরতা দেখা দিয়েছে।
ব্যবসায়ীরা জানান, খুলনার খালিশপুরে অবস্থিত যমুনা ডিপো থেকে, গত মঙ্গলবার দুপুরে জ্বালানি তেল নিতে যান সাতক্ষীরার তেল ব্যবসায়ী মো. জাকির হোসেন লস্কর। তখন জাকির হোসেনের মালিকানাধীন লস্কর ফিলিং লরি আটক করে আ.লীগ নেতা ফরহাদ হোসেন। ড্রাইভার জাকির হোসেন গাড়ি ছাড়ার অনুরোধ করলে তাকেও আটকে রাখার হুমকি দেন।
যমুনা ডিপোর সিসিটিভি ক্যামেরা পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, দুপুর দেড়টার দিকে লস্কর ফিলিং লরিটি তেলবোঝাই করে ছেড়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। এ সময় সাদা রঙের একটি মাইক্রোবাসে ফরহাদসহ ৪ থেকে ৫ জন লোক যমুনা ডিপোর অভ্যন্তরে যায়। তাদের মধ্যে আ.লীগ নেতা ফরহাদ হোসেন ছিলেন। গাড়ি থেকে নেমে ফরহাদ ডিপোর উপব্যবস্থাপকের কক্ষের বারান্দায় ড্রাইভার ডেকে নিয়ে যাওয়া হয়। তারা ড্রাইভারকে উদ্দেশ্য করে কথা বলেন। কিছুক্ষণ পরই লস্কর ফিলিংয়ের গাড়িটি যমুনা ডিপোর পাশে পার্কিং করে রাখা হয়। এর আধাঘণ্টা পর তেল বোঝাই গাড়িটি নিয়ে ডিপোর বাইরে রাস্তার পাশে আটক রাখা হয়। বুধবার সন্ধ্যা পর্যন্ত গাড়িটি সেখানেই ছিল।
জানতে চাইলে ড্রাইভার জালাল উদ্দিন কালবেলাকে বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, আমি গাড়ি নিয়ে বের হয়ে যাচ্ছিলাম। তখন ফরহাদ ও তার দলবল আমাকে গাড়ি রেখে চলে যেতে বলে। তাদের প্রত্যেকের কাছে অস্ত্র ছিল। আমি ভয়ে অনুনয় বিনয় করলে আমাকে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দেয় ফরহাদ। পরে আমি বিষয়টি আমার মালিককে জানাই।
এ ব্যাপারে লষ্কর ফিলিং স্টেশনের মালিক জাকির হোসেন বলেন, ফরহাদ দীর্ঘদিন ধরেই আমার গাড়িটি দখলের চেষ্টা করছে। ব্যবসায়ের কারণে আমার ভাই জোনায়েদ হোসেনের সঙ্গে ফরহাদের শত্রুতা রয়েছে। এর জেরে আমার গাড়ি দখলে নিয়ে ব্যাবসায়িক ক্ষতি সাধনের চেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। আগে বিভিন্ন সময় টাকা পয়সা দিয়ে আপস করা হয়।
তিনি জানান, বিষয়টি নিয়ে আমি খালিশপুর থানায় অভিযোগ দায়ের করতে গেলেও থানা মামলা নেয়নি। বাধ্য হয়ে আদালতের শরণাপন্ন হতে হচ্ছে। বিষয়টি আমি জ্বালানি তেল পরিবেশক সমিতির সভাপতি-সম্পাদককেও জানিয়েছি।
এ বিষয়ে যমুনা ডিপোর উপমহাব্যবস্থাপক তানভীর হাসান ডালাস কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি। সাংবাদিক পরিচয় পেয়ে তিনি তার কক্ষ থেকে বের হয়ে যান।
তবে ফরহাদ হোসেন কালবেলাকে বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, আমি লস্কর ফিলিং স্টেশনের মালিক জোনায়েদের কাছে টাকা পাব। সে জন্য তার ড্রাইভারকে আমি বলেছিলাম যেন তিনি তার মালিককে বলে। অন্য কেউ তো আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ করে নি।
বাংলাদেশ পেট্রোলিয়ম করপোরেশনের সুপারিশের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমার প্রতিপক্ষরা মিথ্যা অভিযোগ করেছে। আমি অস্ত্রের মহড়া দিলে তো সিসিটিভিতে ফুটেজে দেখা যাবে। তেমন কিছু তো দেখা যায় নি।
মন্তব্য করুন