দক্ষিণাঞ্চলে সম্প্রতি ক্ষতিগ্রস্ত বন্যার্তদের নামে পঞ্চগড়ের সদর উপজেলায় চাঁদা তোলার সময় আটজন প্রতারককে আটক করেছে ছাত্র-জনতা। পরে তাদের বিজিবি ও সেনাবাহিনীর হাতে তুলে দেওয়া হয়।
বুধবার (২৮ আগস্ট) দুপুরে উপজেলার সাতমেড়া ইউনিয়নের গোয়ালঝাঁড় বাজারে এ ঘটনা ঘটে। পরে আটককৃতদের সদর থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে সেনাবাহিনী। এ ঘটনায় থানায় আইনি প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।
এ সময় সেনাবাহিনীর ক্যাপ্টেন মেহেদী, সদর থানা পুলিশের কর্মকর্তা ও সেনা সদস্যরাসহ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়করা উপস্থিত ছিলেন।
আটককৃতরা হলেন, পঞ্চগড় জেলা শহরের রামেরডাঙ্গা এলাকার বাবলা (৪২), জালাল (৪০), খালেক ভোক্তারী (৫৫), আবিল (৫৫), জামিরুল ইসলাম (৩১), রমজান আলী (৩২) রাসেল (২৪) ও রেজাউল (৩০)।
সেনাবাহিনী ও প্রত্যক্ষদর্শী এবং ছাত্রজনতার সূত্রে জানা যায়, বুধবার সকাল সাড়ে ১০টায় পঞ্চগড় জেলা শহরের লিচুতলা এলাকা থেকে একটি পিকআপ আড়াই হাজার টাকায় ভাড়া নিয়ে পঞ্চগড় সদর উপজেলার সাতমেরা ইউনিয়নের গোয়ালঝাঁড় বাজারে দক্ষিণাঞ্চলে সম্প্রতি ক্ষতিগ্রস্ত বন্যার্তদের নামে চাঁদা তুলতে যায় ওই প্রতারকের দলটি। তারা নিজেদের দোকান কর্মচারী, শ্রমিক হিসেবে পরিচয় দেয়। পরে তারা কয়েকজন করে একটি দল হিসেবে বের হয়ে চাঁদা তুলতে শুরু করে। প্রায় ৩০০ টাকা চাঁদা ওঠার পরে বাজারের দোকানদারসহ স্থানীয়দের সন্দেহ হয়। পরে তাদের সংগঠনের সভাপতি কে বা অন্যান্য প্রশ্ন স্থানীয়রা জিজ্ঞেস করে স্থানীয়সহ দোকানদাররা। এ সময় আটককৃতদের কথাবার্তা অসঙ্গতিপূর্ণ হওয়ায় তাদের আটক করে রাখে গোয়ালঝাঁড় বাজারের ব্যবসায়ীরা। পরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কসহ সেনাবাহিনীকে খবর দেওয়া হয়। তবে সীমান্তবর্তী এলাকা হওয়ায় বিজিবির ময়নাগুড়ি বিওপির সদস্যদের সহায়তায় প্রতারকদের হেফাজতে নেয় সেনাবাহিনী।
গোয়ালঝাঁড় বাজারের ব্যবসায়ী ফিরোজ আলম বলেন, বুধবার সকালে এই লোকজন বন্যার্তদের জন্য টাকা তোলা শুরু করে। আমিও টাকা দেই। পরে তাদের চেহারা ও আচরণ সন্দেহজনক মনে হলে তাদের বিভিন্ন প্রশ্ন করা হয়। পরে তাদের কথা বার্তা এলোমেলো লাগছিল। তাদের বাসাও নাকি পঞ্চগড়ে। খোঁজ নিয়ে জানতে পারি তারা সবাই গাঁজা ব্যবসায়ী ও সেবী। পরে আমরা ছাত্র সহ সেনাবাহিনীকে খবর দিয়ে তাদের হাতে তুলে দেই।
পঞ্চগড়ে দায়িত্বরত সেনাবাহিনীর ক্যাপ্টেন মেহেদী বলেন, সকাল সাড়ে ১০টার পরে একটি ফোন পাই। পরে জানতে পারি তারা বন্যার্তদের নামে চাঁদা তুলছিল। পরে সীমান্তবর্তী এলাকা হওয়ায় বিজিবির মাধ্যেমে আমরা তাদের সদর উপজেলার জগদল বাজার পর্যন্ত নিয়ে আসি। সেখান থেকে আমিসহ প্রতারকদের থানায় নিয়ে গিয়ে আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যেম পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
পঞ্চগড় সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) রঞ্জু আহম্মেদ বলেন, এ ঘটনায় আটককৃতদের বিরুদ্ধে সদর থানায় আইনি প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।