স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যার মুখোমুখি হয়েছে কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলা। উজানের টানা ভারি বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে গোমতী নদী এবং সালদা নদীর প্রতিরক্ষা বাঁধ ভেঙে উপজেলার মোট আয়তনের ৯৫ শতাংশ এলাকা প্লাবিত হয়েছে। এতে এ উপজেলায় পানিবন্দি হয়ে পড়েছে ৭০ হাজার পরিবার। বন্যায় ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৮৫০ কোটি টাকা।
মঙ্গলবার (২৭ আগস্ট) রাতে এ তথ্য নিশ্চিত করেন ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) স ম আজহারুল ইসলাম।
তিনি বলেন, আকস্মিক বন্যায় উপজেলার ৮টি ইউনিয়নের ৭৫টি গ্রামের মধ্যে ৬৮টি গ্রাম প্লাবিত হয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এতে পানিবন্দি হয়ে পড়েছে ৭০ হাজার বানভাসী পরিবার। ডুবে গেছে ফসলের মাঠ, মাছের ঘের, মুরগির খামার। ডুবে গিয়ে নষ্ট হয়েছে অধিকাংশ রাস্তাঘাট, কালভার্ট-ব্রিজ। নষ্ট হয়েছে আসবাবপত্র ও গৃহস্থালি সামগ্রী। ক্ষতির মুখে পড়েছে গৃহপালিত গবাদিপশু। যার ফলে বন্যায় এ উপজেলায় প্রায় ৮৫০ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, গত বৃহস্পতিবার রাতে গোমতী নদীর বাঁধ ভেঙে বুড়িচং উপজেলার বুড়বুড়িয়া দিয়ে লোকালয়ে পানি প্রবেশ করে। এতে ওই রাতেই বুড়িচং উপজেলা প্লাবিত হয়। পরে গোমতীর বাঁধভাঙা পানি ঢুকতে শুরু করে ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলায়। একইসঙ্গে উপজেলার শশীদল ইউনিয়নের সালদা নদীর বাঁধ ভেঙেও এ উপজেলায় পানি ঢুকতে শুরু করে। দুই নদীর বাঁধভাঙা পানিতে অল্প সময়েই ব্রাহ্মণপাড়ার প্রায় সব ইউনিয়ন প্লাবিত হয়। এতে ব্রাহ্মণপাড়ায় বন্যা পরিস্থিতি ভয়ংকর রূপ ধারণ করে। যার ফলে পুরো উপজেলায় ৭০ হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়ে। পানিবন্দিদের উদ্ধারে উপজেলা প্রশাসন, সামাজিক সংগঠন, সাংবাদিক ও স্বেচ্ছাসেবকরা দিন-রাত কাজ করছে। উপজেলায় মোট ২৯টি আশ্রয়কেন্দ্রে বানভাসী মানুষদের উদ্ধার করে আনা হচ্ছে। আশ্রয়কেন্দ্রসহ বন্যাদুর্গতদের খাদ্য এবং নিরাপদ পানি ও ওষুধ সরবরাহ করা হচ্ছে।
মন্তব্য করুন