বগুড়া শহরের বৃন্দাবনপাড়ায় একটি মাজারের খাদেম জামাল উদ্দিন খাজাকে হত্যার ঘটনায় নিহতের ভগ্নিপতিকে মৃত্যুদণ্ড ও স্ত্রীকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে আসামিদের ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (২৭ আগস্ট) দুপুরে বগুড়ার প্রথম অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক হাবিবা মণ্ডল এই রায় ঘোষণা করেন।
দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন বগুড়ার শাজাহানপুর উপজেলার রাণীরহাট বয়রাদিঘি গ্রামের মৃত আছিমুদ্দিন প্রামাণিকের ছেলে নিহতের ভগ্নিপতি মোজাফফর হোসেন ও বগুড়া শহরের পূর্ব বৃন্দাবনপাড়ার নিহত খাদেম জামাল উদ্দিন খাজার স্ত্রী জেসমিন আকতার।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী (পিপি) নাসিমুল বারী হলি কালবেলাকে বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, বাদীর মামলায় কোনো আসামির নাম উল্লেখ না থাকলেও পুলিশের তদন্তে দণ্ডপ্রাপ্ত দুই আসামির সম্পৃক্ততা মেলে। পরে সাক্ষ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে মঙ্গলবার দুজনের বিরুদ্ধে আদালত রায় ঘোষণা করেন।
মামলা সূত্রে জানা গেছে, ২০২২ সালের ২৪ নভেম্বর রাতে শহরতলীর ফুলদিঘি গ্রামে বাদী জেমস রিমনের ফুফু মারা যান। বাদী তার বাবা-মায়ের সঙ্গে পরেরদিন সকালে সেখানে জানাজায় অংশ নিতে যান। জানাজার পরে তিনি ও তার মা বাড়িতে ফিরলেও তার বাবা সেখানেই ছিলেন। তারা বাড়ি ফিরে ঘর তালাবদ্ধ করে পাশের বাসায় চাবি রেখে দুপুর পর সদর উপজেলার হরিপুর গ্রামে তার মা জেসমিনকে নানার বাড়িতে রেখে শ্বশুরবাড়িতে যান রিমন।
পরেরদিন সকালে তিনি বাড়ি ফিরে ভেতর থেকে দরজা বন্ধ দেখতে পেয়ে ডাকাডাকি শুরু করেন। পরে এলাকাবাসীর সহায়তায় ভেতরে ঢুকে তার বাবা জামাল উদ্দিন খাজাকে কম্বল মোড়ানো অবস্থায় মেঝেতে পড়ে থাকতে দেখেন। কম্বল সরিয়ে দেখতে পান তাকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। খবর পেয়ে থানা পুলিশ গিয়ে লাশ উদ্ধার করে।
পুলিশ দুই আসামিকে গ্রেপ্তার করে আদালতে সোপর্দ করলে আসামি মোজাফর হোসেন আদালতে হত্যাকাণ্ডের কথা স্বীকার করেন। তিন বছর ধরে নিহতের স্ত্রীর সঙ্গে পরকীয়ায় জড়িত ছিল মোজাফর। এ নিয়ে তাদের নিহত জামাল উদ্দিন খাজা নিষেধ করেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে আসামি মোজাফ্ফর হোসেন লোহার শাবল দিয়ে হত্যা করে জামালকে।
মন্তব্য করুন