সাভারের আশুলিয়ায় উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের দ্বারা অসৌজন্যমূলক আচরণ, ন্যায্যতার ভিত্তিতে ওভারটাইমের মজুরিপ্রাপ্তিসহ বিভিন্ন দাবিতে নবীনগর-চন্দ্রা মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন কারখানার শ্রমিকরা।
মঙ্গলবার (২৭ আগস্ট) সকাল ৮টা থেকে পলাশবাড়ী এলাকায় মহাসড়কের উভয় লেন অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন স্কাইলাইন গ্রুপ নামের পোশাক কারখানাটির শ্রমিকরা। তাদের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন আরও অন্তত ৩টি কারখানার সহস্রাধিক শ্রমিক। এ সময় মহাসড়কটির উভয় লেনে কয়েক কিলোমিটার দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়।
শ্রমিকরা জানান, গত কয়েক মাস ধরেই নির্ধারিত সময়ের পরেও সরকারি ছুটির দিনসহ অন্যান্য দিনে তাদের কাজ করানো হলেও তাদের ন্যায্য ওভারটাইমের টাকা পরিশোধ করছে না কারখানা কর্তৃপক্ষ। এ ছাড়া কর্মকর্তারা তাদের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ করেন। এতে দীর্ঘদিন ধরে শ্রমিকরা মানসিক ও শারীরিকভাবে আক্রান্ত হচ্ছেন। দীর্ঘদিন বঞ্চিত হওয়ায় বাধ্য হয়ে তারা আজ মহাসড়ক অবরোধ করেছেন।
পরে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে সেনাবাহিনী ও পুলিশ সদস্যরা ঘটনাস্থলে এসে শ্রমিকদের বুঝিয়ে মহাসড়ক থেকে সরিয়ে দিলে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।
এদিকে মহাসড়কে পাশে সাদমান টাওয়ার থেকে জনৈক ব্যক্তি মোবাইল দিয়ে আন্দোলনের ফুটেজ সংগ্রহ করলে বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা ওই ভবনের ২য় তলায় অবস্থিত আশুলিয়া সহকারী (ভূমি) রাজস্ব সার্কেলের কার্যালয়ের ভবনের বাইরের গ্লাস ভাঙচুর করেন।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে কালবেলাকে সহকারী কমিশনার (ভূমি) শাহ মো. জুবায়ের বলেন, এটা বিচ্ছিন্ন ঘটনা। আমার মনে হচ্ছে। শ্রমিকরা উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে এ হামলার ঘটনা ঘটায়নি। আমাদের ভবন থেকে কেউ একজন ভিডিও করছিল সে কারণে বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা কিছু ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করলে আমাদের ভবনের কাচ ভেঙে যায়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্কাইলাইন কারখানার এক নারী শ্রমিক বলেন, কারখানার ৭ তলায় শ্রমিকদের নিয়মিত নির্যাতন করা হয়। কাজের টার্গেট পূরণ করতে ব্যর্থ হলেই শ্রমিকদের মারধর করে। এ ছাড়া জোরপূর্বক ওভারটাইম করানো হলেও ন্যায্যতার ভিত্তিতে কোনো পারিশ্রমিক দেওয়া হয় না।
এ বিষয়ে স্কাইলাইন পোশাক কারখানা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাদের পাওয়া যায়নি।
শিল্পপুলিশ-১ এর পুলিশ সুপার সারোয়ার আলম কালবেলাকে বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, শ্রমিকরা মহাসড়কের দুই পাশে কয়েক ঘণ্টা সড়ক অবরোধ করে রাখে। পরে সেনাবাহিনী এবং পুলিশের মধ্যস্থতায় শ্রমিকদের বুঝিয়ে সড়ক থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। এখন যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে।
মন্তব্য করুন