ত্রিশাল (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ২৬ আগস্ট ২০২৪, ০৫:৩৫ পিএম
আপডেট : ২৬ আগস্ট ২০২৪, ০৮:১৮ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

‘মা দেশ স্বাধীন করে আসছি’ বলে বের হয়েছিলেন ইনতিশার

নিহত আসীর ইনতিশারুল হক ছবি : কালবেলা ।
নিহত আসীর ইনতিশারুল হক ছবি : কালবেলা ।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে কোটা সংস্কারের দাবিতে ছাত্রসমাজের ডাকে আন্দোলনে ঝাপিয়ে পড়েছিলেন ময়মনসিংহের ত্রিশালের ইনতিশার। আন্দোলনের শুরু থেকেই অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন তিনি।

৫ আগস্ট ‘মার্চ টু ঢাকা’ অংশগ্রহণের জন্য মা-বাবার কাছ থেকে বিদায় নিয়ে যান ইনতিশার। পথে মাওনা পৌঁছালে তাদের বাধা দেয় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। ঢাকায় যাওয়ার পথে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর গুলিতে প্রাণ হারান ইনতিশার।

এদিকে ছাত্র আন্দোলনের বিজয়বার্তায় যখন সারা দেশ আনন্দে উদ্বেলিত ঠিক সেই সময় ইনতিশারের বাড়িতে খবর আসে তিনি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর গুলিতে নিহত হয়েছেন তিনি। এ খবরে তার মা-বাবা পাগলপ্রায়। ছেলের কথা মনে হলেই বার বার মূর্ছা যান মা।

মা নাজমুন্নাহার বলেন, আমার ছেলে বলে গেল মা ‘দেশ স্বাধীন’ করে আসছি। কিন্ত, আর ফিরল না। আমি এখন কাকে আদর করে বাবা বলে ডাকব।

ইনতিশারের বাড়ি ত্রিশাল উপজেলার বইলর ইউনিয়নের উজান বইলর গ্রামে। তিনি ওই গ্রামের আ হ ম এনামুল হক লিটনের বড় ছেলে। এইচএসসি পাস ইনতিশারুল হক ইনতিশার বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন।

এদিকে ৭ জুন কোটা সংস্কারের দাবিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে যোগ দেন তিনি। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আবু সাঈদের মৃত্যুর পর আন্দোলনকারীরা জীবন মৃত্যুবাজি রেখে আন্দোলনে ঝাপিয়ে পড়েন।

আমাদের আদরের সন্তান চিরদিনের জন্য সব মায়া-মমতা ফেলে দেশের জন্য যুদ্ধ করে না ফেরার দেশে চলে গেছে, তাকে যেন জাতীয় বীরের মর্যাদা দেওয়া হয়, এমন দাবি বর্তমান সরকারের কাছে করেছেন ইনতিশারের মা-বাবা।

ইনতিশারের ছোট ভাই বাশিরুল হক মাহির বলেন, আমার ভাই আমার বন্ধু ছিল, কোটা সংস্কার আন্দোলনে আমার ভাই নিহত হয়েছেন। আমার ভাই যেন আবু সাঈদের মতো জাতীয় বীরের মর্যাদা পান।

চাচা অধ্যক্ষ মাওলানা নাজমুল হক বলেন, আমাদের পরিবারের সবার বড় ইনতিশার কোটা আন্দোলনে লং মার্চ টু ঢাকায় যাওয়ার পথে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর গুলিতে নিহত হয়। বর্তমান সরকারের কাছে আমাদের পরিবারের আবেদন তাকে যেন জাতীয় বীরের মর্যাদা দেওয়া হয়। বইলর ধানীখোলা সড়কক ইনতিশারের নামে নামকরণ করার দাবি জানান তিনি।

বৈষম্যবিরোধী কোটা সংস্কারের দাবিতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর গুলিতে শহিদ ইনতিশারের মা-বাবাকে সান্ত্বনা ও তার আত্মার মাগফিরাত কামনায় কবর জিয়ারত করতে ছুটে যান ত্রিশাল উপজেলা নির্বাহী কর্মকতা জুয়েল আহমেদ।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ছাত্ররা ইনতিশারকে জাতীয় বীরের মর্যাদা দেওয়ার জন্য বর্তমান সরকারেরকাছে জোর দাবি জানান।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক রবিউস সানি কালবেলাকে বলেন, ইনতিশার আন্দোলনের প্রথম থেকেই অগ্রণী ভূমিকা পালন করে আসছিলেন। মার্চ টু ঢাকায় যাওয়ার পথে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর গুলিতে নিহত হন তিনি। আমরা এ হত্যার বিচার চাই। জাতীয় বীরের নামের তালিকায় ইনতিশার যেন স্বর্ণ অক্ষরে লেখা থাকে এ দাবি জানাই।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

দেশীয় সংস্কৃতি রক্ষায় অগ্রণী ভূমিকা পালন করছে জাসাস : মীর হেলাল

টিভিতে আজকের খেলা

টাঙ্গাইলে আ.লীগ নেতা গ্রেপ্তার

রোববার রাজধানীর যেসব এলাকার মার্কেট বন্ধ

২২ ডিসেম্বর : কী ঘটেছিল ইতিহাসের এই দিনে

২২ ডিসেম্বর : আজকের নামাজের সময়সূচি

নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত করতে হবে : জোনায়েদ সাকি

গভীর রাতে শীতার্তদের গায়ে কম্বল জড়িয়ে দিলেন ইউএনও

জামালপুরে উপজেলার ভাইস চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা গ্রেপ্তার

বাকৃবিতে প্রথম বর্ষের ক্লাস শুরু ৬ জানুয়ারি

১০

চাঁদাবাজির মামলায় ছাত্রলীগ নেতা গ্রেপ্তার

১১

ধানমন্ডি লেকে চিলড্রেন ওয়াচের পরিচ্ছন্নতা কর্মসূচি

১২

ফুলবাড়ীতে ছাত্রলীগ ও যুবলীগের দুই নেতা গ্রেপ্তার

১৩

নিরাপদ মাতৃত্ব ও সুস্থ শৈশবের বার্তা দিতে ময়মনসিংহে ‘ফ্যাক্টস ফর লাইফ’ কর্মশালা

১৪

কালবেলার কুমিল্লা ব্যুরো প্রধান দিলিপ মজুমদারের মা মারা গেছেন

১৫

ছাত্র আন্দোলনে হামলাসহ বিভিন্ন অপরাধে রাবির ১৮ শিক্ষার্থী বহিষ্কার

১৬

জনস্বাস্থ্য সুরক্ষায় তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের সংশোধনী দ্রুত পাসের আহ্বান

১৭

কিশোর বয়সে প্রেম ও বিয়ে, অতঃপর যা ঘটল

১৮

বিজিএমইএ প্রশাসকের সাথে নেদারল্যান্ডস রাষ্ট্রদূতের সাক্ষাৎ

১৯

আইএমএফ ঋণের চতুর্থ কিস্তি ১০ ফেব্রুয়ারির মধ্যে পাওয়া যাবে 

২০
X