লালমনিরহাটের তিস্তা পাড়ের বাসিন্দা মকবুল হোসেন বলেন, তিস্তায় সবকিছু হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে গেছি। কয়েকবার তিস্তার পানিতে নিজের কষ্টে গড়া বাড়ি-ভিটা ভাসিয়ে নিয়ে গেছে। বউ বাচ্চা নিয়ে আবার চরে এসে নতুন করে বাড়ি করে আছি। কখন যে হঠাৎ করে পানি বেড়ে আবার সবকিছু নিয়ে যায়। নদীভাঙন আর বন্যায় জীবনের সবকিছু হারিয়েছি। তিস্তায় পানি বাড়লেই বুকটা ভয়ে কেঁপে ওঠে।
রোববার (২৫ আগস্ট) সকাল ৯টায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্য অনুযায়ী তিস্তা নদীর ডালিয়া পয়েন্টের পানির সমতল ৫১.৫০ মিটার (বিপদসীমা ৫২.১৫ মিটার) যা বিপৎসীমার ৬৫ সেমি নিচে। সেন্টিমিটার নীচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তবে সিকিমের পাহাড়ে তিস্তায় নির্মিত জলবিদ্যুতের বাঁধ ভাঙনের খবরে আতঙ্কে আছেন তিস্তা পাড়ের মানুষ।
তিস্তা নদীর ভাঙনে নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে পাড়ের কয়েক হাজারের মানুষের ফসলি জমিসহ ঘরবাড়ি। পানি উন্নয়ন বোর্ডের জিও কিংবা বাঁধ নির্মাণ তেমন কোনো কাজে আসে না। নদীতে পানি বাড়লে নির্ঘুম রাত কাটে দু-পাড়ের মানুষের। নদী ভাঙ্গনে সবকিছু হারিয়ে তিস্তার জেগে ওঠা নতুন কোনো চরে আশ্রয় নিয়েও বারবার ভাঙনের সম্মুখীন হয় তিস্তা পাড়ের মানুষ। এতে অনেক পরিবার নদী ভাঙনের কবলে নিঃস্ব হয়ে মানবেতর জীবনযাপন করেন। নদীভাঙন, বন্যা আর তিস্তা পাড়ের মানুষের ভাগ্য যেন একই সুতায় গাঁথা। নতুন করে বাঁচার স্বপ্ন যেন স্রোতে ভাসিয়ে দেয় তিস্তা নদীর পানি।
পাটগ্রামের দহগ্রাম তিস্তা পাড়ের বাসিন্দা সহিদার রহমান বলেন, ভারতের বাঁধ ভেঙে তিস্তা নদীতে বন্যা শুরু হবে। তাই দুই দিন ধরে আতঙ্কে আছি। অনেক উঠতি ফসলি নিয়েও চিন্তায় আছি। গত দুই দিনে তিস্তার পানি একটু একটু করে বাড়ছে।
ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আসফাউদ্দৌলা জানান, তিস্তার পানি বিপৎসীমার ৬৫ সেন্টিমিটার নিচে রয়েছে। এতে তিনি আতঙ্কিত না হওয়ার পরামর্শ দেন তিস্তাপাড়ের মানুষদের।