সাবেক গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ (সদর-বিজয়নগর) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য র.আ.ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরীসহ আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের ২৬ জনের নামে হত্যা মামলা করা হয়েছে। এতে অজ্ঞাতনামা আরও ২০০-৩০০জনকে আসামি করা হয়।
২০২১ সালের ২৭ মার্চ ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফরকে কেন্দ্র করে হেফাজতে ইসলামের কর্মসূচি হরতালের সমর্থনে শহরে একটি বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় আ.লীগের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের সংঘর্ষে ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের টি.এ. রোডে মাওলানা হোসাইন আহাম্মদ নিহত হয়।
ওই ঘটনায় শুক্রবার (২৩ আগস্ট) ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানায় মাওলানা হোসাইন আহাম্মদ এর বড় বোন তানিয়া আক্তার বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
নিহত হোসাইন আহম্মদ ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জামিয়া ইসলামিয়া ইউনুছিয়া মাদ্রাসার ছাত্র ছিলেন। তিনি জেলার আখাউড়া উপজেলার মনিয়ন্দের বাসিন্দা।
মামলার আসামিরা হলেন, জেলা আ.লীগের সাবেক সহ সভাপতি মুজিবুর রহমান বাবুল, পৌর আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম, জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি রবিউল হোসেন, সাধারণ সম্পাদক ও সদর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান শাহাদাৎ হোসেন শোভন, সাবেক গণপূর্তমন্ত্রী র.আ.ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরীর ব্যক্তিগত সহকারী আবু মুছা আনছারি, সদর উপজেলা আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক মাহবুব রহমান (এম.এ.এইচ মাহবুব আলম), জেলা আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবকলীগের সভাপতি ও সদর উপজেলা পরিষদের সাবেক ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান অ্যাড. লোকমান হোসেন, জেলা আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবকলীগের সাধারণ সম্পাদক এম. সাইদুজ্জামান আরিফ, জেলা আ.লীগের দপ্তর সম্পাদক মো. মনির হোসেন, জেলা আ.লীগের উপ দপ্তর সম্পাদক সুজন দত্ত, ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি কলেজ ছাত্র-সংসদের সাবেক ভিপি ও জেলা আ.লীগের সদস্য হাসান সারোয়ার হাসান, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ও জেলা আ.লীগের সদস্য মাসুম বিল্লাহ, সদর উপজেলা আওয়ামী যুবলীগের সভাপতি মো. আলী আজম, সাধারণ সম্পাদক জসিম রানা, ঠিকাদার হামদু মিয়া, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোমিন মিয়াসহ আ.লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের ২৬ জনের নাম উল্লেখ করা হয়। এ ছাড়া অজ্ঞাতনামা আরো দুই-তিনশ’ লোককে আসামি করা হয়।
তানিয়া আক্তার অভিযোগ করে জানান, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফরকে কেন্দ্র করে আন্দোলন কর্মসূচি চলাকালে ২৭ মার্চ সকাল ১০টায় হেফাজতে ইসলামের উদ্যোগে পরের দিন হরতালের সমর্থনে শহরে একটি বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। ওই দিন সন্ধ্যায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আ.লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের উদ্যোগে অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে একটি মিছিল হয়। মিছিলটি জামিয়া ইসলামিয়া ইউনুছিয়া মাদ্রাসার সামনে গিয়ে আসামিরা দেশীয় ও আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে হামলা করে।
তিনি আরও জানান, এ সময় হোসাইন আহাম্মদ মাথার ডানপাশে গুলিবিদ্ধ হয়। আহত অবস্থায় প্রথমে তাকে জেলা সদর হাসপাতালে ও পরে ঢাকার একটি হাসপাতালে নেয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। ওই সময় পুলিশ ও সিভিল প্রশাসনের অসহযোগিতা এবং দমন-নিপীড়নের ভয়ে কোনো আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব হয়ে উঠেনি। এমনকি পুলিশের চাপে তখন নিহতের লাশ ময়না তদন্ত ছাড়া দাফন করতে বাধ্য করা হয় বলে অভিযোগে উল্লেখ করেছেন।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানার ওসি মোজাফফর হোসেন মামলা দায়েরের বিষয়টি সত্যতা নিশ্চিত করেন।