ভারত থেকে নেমে আসা উজানের ঢলে গোমতী নদীর বাঁধ ভেঙে কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলায় ভয়াবহ বন্যার সৃষ্টি হয়েছে। লোকালয়ে হু হু করে ঢুকছে পানি। এতে দিশেহারা হয়ে ঘরবাড়ি ফেলে প্রাণে বাঁচতে মানুষ নিরাপদ আশ্রয়ে ছুটছেন। অনেকেই আশ্রয়কেন্দ্রে ঠাঁই নিলেও এখনো হাজার হাজার পানিবন্দি মানুষ আশ্রয় নিয়েছে খোলা আকাশের নিচে।
শনিবার (২৪ আগস্ট) জেলার বুড়িচং উপজেলার ষোলনল ইউনিয়নের বুড়বুড়িয়া এলাকায় এ দৃশ্য দেখা গেছে।
সরজমিনে দেখা গেছে, বাঁধের ওপর খোলা আকাশের নিচে আশ্রয় নেওয়া এসব মানুষের কেউ কেউ সড়কের পাশে শুয়ে আছেন। এদের মধ্যে অসুস্থ, বয়োবৃদ্ধ, অন্তঃসত্ত্বা নারীসহ অনেক শিশু রয়েছেন। স্বাস্থ্য এবং নিরাপত্তা ঝুঁকি নিয়েই আশ্রয় নিয়েছেন এসব মানুষ। অনেকেই অটোরিকশাকে ঘরের মতো বানিয়ে সেখানে অবস্থান করছেন।
বাঁধ ভাঙার বিষয়টি আগে থেকে কিছুটা আঁচ করতে পেরেছিলেন কেউ কেউ। ঘরের দামি আসবাবপত্রসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় মালামাল সরিয়ে বাঁধের ওপর নিয়ে আসতে পেরেছিলেন সেসব মানুষ। যেসব পরিবারে পুরুষ ছিল না, সেসব পরিবারের নারীরা কোনোরকম জীবন বাঁচিয়ে বাঁধে ওঠেন সন্তানদের নিয়ে। ওইসব পরিবারের সবকিছুই তলিয়ে গেছে পানিতে। খোলা আকাশের নিচে এক বুক দীর্ঘশ্বাসই এখন তাদের সম্বল।
খোলা আকাশের নিচে আশ্রয় নিলেও এসব মানুষের কাছে পৌঁছায়নি কোনো ত্রাণ সহায়তা। শুকনো খাবার আর বিশুদ্ধ পানির সংকট পোহাচ্ছেন তারা। কয়েকটি সামাজিক সংগঠন ত্রাণ সহায়তা দিলেও প্রয়োজনের তুলনায় তা অপ্রতুল বলে জানিয়েছেন তারা।
খোলা আকাশের নিচে আবাস গড়া আসমা আক্তার নামের এক বানভাসি বলেন, আমরা নিরুপায় হয়ে এখানে আশ্রয় নিয়েছি। এখানে আমাদের খাবার-পানি সংকটের পাশাপাশি টয়লেটের সমস্যাটাও অনেক বেশি। শত শত নারী এখানে আছে। প্রসাশনের পক্ষ থেকে আমাদেরকে আগে জানালে আমরা মালপত্র, ছেলেমেয়েদের নিয়ে দূরে চলে যেতাম। রাত ১২টার দিকে বাঁধ ভাঙা নিয়ে হই চই পড়ে। তখন সামনে যা পেয়েছি তাই নিয়ে বাঁধে উঠেছি। ঘরবাড়ি সব তলিয়ে গেছে পানিতে।
বুড়িচং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইউএনও সাহিদা আক্তার কালবেলাকে বলেন, আশ্রয়কেন্দ্রের পাশাপাশি খোলা আকাশের নিচে আশ্রয় নেওয়া মানুষদের সহায়তা করা হবে। তাদের তালিকা করা হচ্ছে।