বগুড়ার সোনাতলায় নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে বিভিন্ন স্থানে গড়ে উঠেছে অবৈধ স’মিল। পরিবেশ অধিদপ্তর ও বন বিভাগের ছাড়পত্র এবং বৈধ লাইসেন্স ছাড়াই গড়ে উঠেছে ৩০টিরও বেশি স’মিল। কর্তৃপক্ষের অবহেলা ও নজরদারি না থাকায় উপজেলার যত্রতত্র গড়ে উঠেছে এসব স’মিল।
ফলে সরকার হারাচ্ছে রাজস্ব এবং উজাড় হচ্ছে পরিবেশবান্ধব গাছপালা। সেই সঙ্গে পরিবেশ মারাত্মকভাবে হুমকিতে পড়ছে। স’মিল স্থাপনে বন বিভাগের লাইসেন্স প্রাপ্তির পর নিতে হয় পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র। তবে সরকারি অফিস আদালত, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, হাসপাতাল, স্বাস্থ্যকেন্দ্র, জনস্বাস্থ্য বা পরিবেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ কোনো স্থানের ২০০ মিটারের মধ্যে স’মিল স্থাপন করার নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। এ ছাড়া যে কোনো সরকারি ট্রেজারি চালান জমা দিয়ে শর্ত মেনে লাইসেন্স গ্রহণ করতে হবে।
কিন্তু উপজেলায় সোনাতলা পৌরসভাসহ ৭ ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় ৩০টি স’মিল গড়ে উঠেছে। এর মধ্যে বন বিভাগ ও পরিবেশ অধিদপ্তরের লাইসেন্স রয়েছে মাত্র ৩টির। বাকি ২৭টি বন বিভাগ ও পরিবেশ অধিদপ্তরের লাইসেন্স ছাড়াই অবৈধভাবে গড়ে উঠেছে। বাকি সব স’মিল ইউনিয়ন পরিষদ থেকে ট্রেড লাইসেন্স নিয়ে ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে।
তথ্য অনুসন্ধানে দেখা গেছে, এসব মিল চলছে শ্যালো মেশিনের ইঞ্জিন অথবা বিদ্যুৎ সংযোগ দিয়ে। মিল চালানোর নিয়মনীতি মানা তো দূরের কথা এসব মিলের মালিক ও কর্মচারীরা জানেই না মিল চালানোর নিয়মনীতি আছে।
এ ছাড়া উপজেলা সদর থেকে জেলা সদরে যাতায়াতের পাকা রাস্তার দুপাশেই গড়ে উঠেছে কয়েকটি স’মিল। আর রাস্তা সংলগ্ন রেখে দেয়া হয়েছে বড় বড় গাছের গুঁড়ি। এতে ছোট বড় যানবাহন প্রায়ই দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক উপজেলার কয়েক জন স’মিল মালিক জানান, মিল স্থাপনে লাইসেন্স নিতে হয় সে বিষয়ে আমাদের জানা নাই। কোথায় গিয়ে এ লাইসেন্স করতে হবে তা আমরা স্পষ্ট জানি না।
মিলগুলোতে কর্মরত শ্রমিকেদের সঙ্গে কথা বললে তারা জানায়, কীভাবে দুর্ঘটনা এড়িয়ে মিলে কাজ করতে হয় সে বিষয়ে তাদের কোনো প্রশিক্ষণ নেই। সেই সঙ্গে নেই তাদের নির্ধারিত পোশাকও। বিগত সময় মিলের কাটিং মাস্টারের সঙ্গে যারা জোগালির কাজ করেছে তারাও এখন কাটিং মাস্টার হিসেবে কাজ করছেন।
এ ব্যাপারে উপজেলা বন কর্মকর্তার দায়িত্বে থাকা দুলাল চন্দ্র সাহা জানান, সোনাতলায় তালিকাভুক্ত স’মিল ৩০টি, এর মধ্যে লাইসেন্স রয়েছে ৩টির, আর ৩টির আবেদন প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। মিলের বৈধ লাইসেন্স করার জন্য বাকিদের নোটিশ প্রদান করা হয়েছে এবং ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বগুড়ায় তালিকা প্রেরণ করা হয়েছে।
বিষয়টি নিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা স্বীকৃতি প্রামানিকের সঙ্গে কথা বললে তিনি জানান, এ বিষয়ে বন কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
মন্তব্য করুন