দিনাজপুরে সাবেক ভারপ্রাপ্ত পৌর মেয়র আবু তৈয়ব আলী দুলালসহ ৮ জনের বিরুদ্ধে এক দিনে ৫টি মামলা দায়ের করেছে দুদক। বুধবার (২১ আগস্ট) এ মামলাগুলো দায়ের করেছেন দিনাজপুর জেলা দুদক কার্যালয়ের দুজন কর্মকর্তা।
দিনাজপুর দুদকের সহকারী পরিচালক নূর আলম জানান, দিনাজপুর পৌরসভার সাবেক ভারপ্রাপ্ত মেয়র আবু তৈয়ব আলী দুলাল, বিরামপুর পৌরসভার সাবেক মেয়র লিয়াকত আলী সরকার টুটুল, ঠিকাদার এস এম শফিকুল আলম ডাবলু, বিরামপুর পৌরসভার নকশাকার এস এম রবিউল ইসলাম, উপসহকারী প্রকৌশলী (যান্ত্রিক) মো. জুয়েল মিয়া, দিনাজপুর জেলা কারাগারের অবসরপ্রাপ্ত জেল সুপার মো. সাঈদ হোসেন, তার স্ত্রী সাবিনা ইয়াসমিন ও ব্যবসায়ী মো. রাহেনুল ইসলাম। এর মধ্যে অবসরপ্রাপ্ত জেল সুপার মো. সাঈদ হোসেনের নামে দুটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
বিরামপুর পৌরসভার সাবেক মেয়র ও পৌর আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি লিয়াকত আলী সরকার টুটুল নিয়মবহির্ভূতভাবে সরকারি অনুমোদন ছাড়াই ত্রুটিপূর্ণ নকশা বাতিল হওয়ার পরও মার্কেট নির্মাণ করে এবং বিভিন্ন বাজারের খাস কালেকশন করে ৪ কোটি ১৩ লাখ ১০ হাজার ৫৮০ টাকা আয় করেন, যা ঠিকাদার এস এম শফিকুল আলম ডাবলু, বিরামপুর পৌরসভার নকশাকার এস এম রবিউল ইসলাম ও উপসহকারী প্রকৌশলী (যান্ত্রিক) মো. জুয়েল মিয়াসহ পরস্পর যোগসাজশে আত্মসাৎ করেন। তাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন ১৯৪৭-এর ৫ (২) সহ দণ্ডবিধির ৪০৯/ ১০৯ ধারায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।
দিনাজপুর জেলা কারাগারের অবসরপ্রাপ্ত জেল সুপার মো. সাঈদ হোসেনের তার চাকরিকালীন সময়ে ১ কোটি ৮৪ লাখ ৭২ হাজার ৮৫১ টাকা অর্জিত সম্পদ পাওয়া যায়। তিনি ৮৭ লাখ ৪৭ হাজার ৩০২ টাকা জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন করেন। তিনি ৭৯ লাখ ৩২ হাজার ৮২২ টাকার সম্পদ অর্জনের তথ্য গোপন ও জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন ও ভোগ-দখলে রাখার অপরাধে তার বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪-এর ২৬ (২) ও ২৭ (১) ধারায় মামলা দায়ের হয়েছে।
এ ছাড়া তার স্ত্রী সাবিনা ইয়াসমিন জ্ঞাত আয়ের চেয়ে ২ কোটি ৭৩ লাখ ৫৮ হাজার ৬৭৯ টাকা অবৈধভাবে অর্জনপূর্বক ভোগদখলে রেখে তথ্য গোপন করেন। তার বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪-এর ২৭ (১) ও মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন ২০১২-এর ৪ (২) ধারা এবং দণ্ডবিধির ১০৯ ধারায় মামলা হয়েছে। সাবিনা ইয়াসমিনের মামলায় সহযোগী হিসেবে তার স্বামী সাবেক জেল সুপার মো. সাঈদ হোসেনকেও আসামি করা হয়েছে।
অন্যদিকে পার্বতীপুর উপজেলার বড়পুকুরিয়া মজিদপুর গ্রামের ভাটা ব্যবসায়ী ও আর এম আয়রন ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের মালিক মো. রাহেনুল ইসলামের বিরুদ্ধে ৪৪ লাখ ৪৫ হাজার ৬৩৯ টাকা জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন করে ভোগদখলে রাখায় দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪-এর ২৭ (১) ধারায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।
দিনাজপুর কোতোয়ালি থানায় এসব মামলা দায়ের করেছেন দুদক প্রধান কার্যালয়ের উপপরিচালক আহসানুল কবীর পলাশ এবং দুদক দিনাজপুর জেলা কার্যালয়ের উপসহকারী পরিচালক মো. মশিউর রহমান।
দুর্নীতি দমন কমিশন দিনাজপুর জেলা কার্যালয়ের উপপরিচালক মোয়াজ্জেম হোসেন মামলা বিষয়গুলো নিশ্চিত করেছেন।
মন্তব্য করুন