বকেয়া বেতন, মজুরি বৈষম্য দূরসহ বেশ কিছু দাবিতে গাজীপুরের মোগরখাল, চন্দ্রা ও টঙ্গী ও জিরানী এলাকায় শ্রমিক অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। দাবি আদায়ে আন্দোলনরত শ্রমিকরা সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন। এতে যানজটে নাকাল হয়ে পড়েন হাজার হাজার যাত্রী।
বুধবার (২১ আগস্ট) সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত এ আন্দোলন চলে বলে জানিয়েছেন শিল্প পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ইমরান আহমেদ।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সকালে বকেয়া বেতনের দাবিতে মোগরখাল এলাকায় টিএনজেড অ্যাপারেলস লিমিটেডের পোশাক কারখানা শ্রমিকরা আন্দোলনে নামে। এ সময় তারা ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে অবস্থান করে অবরোধ করে। ফলে সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এতে টঙ্গী থেকে চান্দনা চৌরাস্তা পর্যন্ত প্রায় ১২ কিলোমিটার সড়কে যানজট দেখা দেয়।
আন্দোলনরত শ্রমিকরা জানায়, টিএনজেড গ্রুপে ৩ হাজার ৩০০ জন শ্রমিক কাজ করেন। কারখানার শ্রমিকদের জুলাই মাসের মজুরি মঙ্গলবার (২০ আগস্ট) পরিশোধ করার কথা ছিল। কিন্তু বেতন পরিশোধ না করায় তারা আন্দোলন করছেন।
এদিকে গাজীপুরের কালিয়াকৈরে মাহমুদ জিন্স পোশাক কারখানায় শ্রমিকরা বকেয়া বেতনের দাবিতে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক অবরোধ করে রাখে। বিক্ষুব্ধ শ্রমিকেরা খাড়াজোড়া এলাকায় গাছের গুঁড়িসহ বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতা ফেলে সড়কে যান চলাচল বন্ধ করে দেয়।
শ্রমিকদের দাবি, গত তিন মাস ধরে কারখানা কর্তৃপক্ষ বেতন দেওয়ার নাম করে নানা তালবাহানা করে আসছেন। তিন মাসের বেতন না পেয়ে শ্রমিকদের মানবতার জীবনযাপন করতে হচ্ছে। তাই বেতনের দাবিতে কারখানার শ্রমিকরা মহাসড়কে নেমে এসেছেন। এ ছাড়া একই দাবিতে কাশিমপুর থানার জিরানী এলাকায় আন্দোলনে নামে বেঙ্গল কারখানার শ্রমিকরা।
এ ছাড়া টঙ্গীর চেরাগ আলী এলাকায় বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড কারখানার অস্থায়ী শ্রমিকরা ৬ দফা দাবিতে কর্মবিরতি ও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেন। এ সময় বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে চেরাগআলী-স্কুইব রোড অবরোধ ও বিক্ষোভ করে।
এখানে আন্দোলনরত শ্রমিকরা জানান,বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস কারখানা কর্তৃপক্ষ অস্থায়ী শ্রমিকদের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে বৈষম্যমূলক আচরণ করে আসছে। কারখানায় নিম্নমান, মধ্যমমান ও উচ্চমানের খাবার তৈরি করা হয়। যারা অস্থায়ী শ্রমিক, তাদের কারখানা কর্তৃপক্ষ অতিরিক্ত পরিশ্রম করালেও নিম্নমানের খাবার দেওয়া হয়। এ ছাড়া এ কারখানায় চরম বেতন বৈষম্য বিরাজ করছে।
গাজীপুর শিল্পাঞ্চল-২ পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ইমরান আহমেদ বলেন, ঘটনাস্থলে শ্রমিকদের সঙ্গে শিল্প পুলিশ আলোচনা করছে। এ ছাড়াও শ্রমিক অসন্তোষ নিরসনে মালিকপক্ষ ও শ্রমিকপক্ষের সমন্বয় করার চেষ্টা চলছে । এরই মধ্যে চন্দ্রা ত্রিমোড়, জিরানী এলাকার পরিস্থিতি পুলিশের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।