টানা ভারি বর্ষণে পানিতে তলিয়ে গেছে মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার আটটি ইউনিয়নের অসংখ্য বসতঘর, গ্রামীণ সড়ক ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। এতে কমপক্ষে ১ লাখ মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।
বুধবার (২১ আগস্ট) সকাল ৯টায় ধলাই নদীর পানি বিপদসীমার ৪৬ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, টানা বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে একাধিক স্থানে প্রতিরক্ষা বাঁধে ভাঙন দেখা দিয়েছে। অপরদিকে উজানের পাহাড়ি ঢলে উপজেলার ইসলামপুর, আদমপুর, মাধবপুর, কমলগঞ্জ, শমসেরনগর, রহিমপুর, পতনঊষা, মুন্সিবাজার ইউনিয়নের প্রায় ৩০টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। পানির নিচে তলিয়ে গেছে উপজেলার বেশিরভাগ সড়ক।
ভারি বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে কমলগঞ্জ-আদমপুর আঞ্চলিক সড়কের ঘোড়ামারা ও ভানুবিল মাঝেরগাঁও এলাকা পানিতে তলিয়ে গেছে। আদমপুর ইউনিয়নের ঘোড়ামারা, রানিরবাজার, ইসলামপুর ইউনিয়নের মোকাবিল ও কুরমা চেকপোস্ট এলাকায় নদীর বাঁধে ভাঙন দেখা দিয়েছে এবং পানি লোকালয়ে প্রবেশ করেছে। আদমপুর-ইসলামপুর সড়কের হেরেঙ্গা বাজার, শ্রীপুর ও ভান্ডারিগাঁও এলাকা পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন কয়েক হাজার মানুষ।
কমলগঞ্জ পৌরসভার খুশালপুর, শ্রীনাথপুর, আলীনগর ইউনিয়নের যুগীবিল, মঙ্গলপুর, বারামপুর, জালালীয়া, কমলগঞ্জ সদর ইউনিয়নের উত্তর বালিগাঁও, বনগাঁও, চৈতন্যগঞ্জসহ প্রায় ৩০টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এ ছাড়া ভারি বর্ষণে ১ নম্বর রহিমপুর ইউনিয়নের ধলাই নদীর পানি নতুন সংস্কার করা বাঁধে ভাঙন দেখা দেওয়ায় ছায়চিরি বিষ্ণুপুর এবং লক্ষ্মীপুর এলাকা প্লাবিত হয়েছে। বন্যার কারণে বিভিন্ন গ্রামের পুকুর ও মাছের প্রজেক্ট ভেসে মাছ বেরিয়ে যাওয়ায় বহু ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। তলিয়ে গেছে সব ফসলি জমি।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা জয়ন্ত কুমার রায় বলেন, বন্যার পানিতে উপজেলার প্রায় ১ হাজার হেক্টর আমন ও আউশ ধানের ফসলি জমি প্লাবিত হয়েছে। পানি বাড়ার ফলে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ আরও বাড়তে পারে।
মৌলভীবাজার পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী জাবেদ ইকবাল বলেন, ধলাই নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে আটটি স্থান দিয়ে বাঁধে ভাঙন দেখা দিয়েছে। সকাল ৯টায় ধলাই নদীর (রেলওয়ে ব্রিজ) পানি বিপদসীমার ৪৬ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
মন্তব্য করুন