লক্ষ্মীপুরে পরিবার কল্যাণ সহকারী পদে নিয়োগ পরীক্ষায় চূড়ান্ত হন জান্নাতুল খুলুদ সেতু। কিন্তু এক বছর পার হলেও চাকরিতে যোগ দিতে পারেননি তিনি। মিথ্যে অভিযোগের ভিত্তিতে তার নিয়োগ স্থগিত রাখা হয়।
পরবর্তীতে অভিযোগটি মিথ্যে প্রমাণিত হলে নিয়োগের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে সুপারিশ করা হয়। তবে অজানা কারণে পরিবার পরিকল্পনা বিভাগ তাকে নিয়োগ দেয়নি। শুক্রবার (১৬ আগস্ট) বিকেলে ভুক্তভোগী সেতু সাংবাদিকদের বিষয়টি জানান।
সেতুসহ সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ২০২২ সালের ১৪ অক্টোবর পরিবার কল্যাণ সহকারী পদে তিনি নিয়োগ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। পরবর্তীতে মৌখিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলে তার নামসহ চূড়ান্ত ফলাফল প্রকাশ করা হয়। নিয়োগের আগ মুহূর্তে পিংকি রাণী মজুমদার অন্য প্রার্থী তার বিরুদ্ধে ঠিকানা সত্য নয় এমন তথ্যের ভিত্তিতে নিয়োগ কমিটির কাছে লিখিত অভিযোগ করেন।
এতে তার নিয়োগ কার্যক্রম স্থগিত হয়ে পড়ে। অভিযোগটি তদন্ত করতে কমিটি গঠন করা হয়। ২০২৩ সালের ২২ মে তদন্ত কমিটি প্রতিবেদন জমা দেয়। তদন্তের রিপোর্টে তার ঠিকানা সত্য বলে প্রমাণিত হয়। এতে সেই বছর ৩১ মে তার নিয়োগের জন্য পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের কাছে আবেদন করেন। সে ভিত্তিতে অধিদপ্তরে সেতুকে নিয়োগ প্রদান করা যেতে পারে বলে সুপারিশ করে নিয়োগ কমিটি।
তবে সেতুর গ্রামের বাড়ির অবস্থান এবং ইউনিটের সীমানা নিয়ে জটিলতা থাকায় লক্ষ্মীপুরের উপপরিচালক পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের কাছে সুনির্দিষ্ট তথ্য পাঠানোর জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়। একই বছর ১২ জুলাই তৎকালীন জেলা প্রশাসক আনোয়ার হোছাইন আকন্দ লক্ষ্মীপুর পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের উপপরিচালকের কাছে আবেদন করেন। কিন্তু তৎকালীন উপপরিচালক ডা. আশফাকুর রহমান মামুন তা গ্রহণ করেননি। এরপর তিনি অবসরে চলে যান।
এরপর উপপরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) হিসেবে দায়িত্ব পান লোকমান হোসাইন। জেলা প্রশাসকের দেওয়া চিঠির এক বছর পার হলেও এখনো সেতুকে নিয়োগ দেওয়া হয়নি। সেতুর ঠিকানা নিয়ে পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের মহাপরিচালকের কাছে প্রস্তাবও পাঠানো হয়নি।
এ বিষয়ে সেতু বলেন, এক বছর আগে আমাকে নিয়োগ দেওয়ার সুপারিশ করা হয়। অজানা কারণে লক্ষ্মীপুর পরিবার পরিকল্পনা বিভাগ আমাকে নিয়োগ দেয়নি। এ নিয়ে আমি লক্ষ্মীপুর জেলা প্রশাসক নুসরাত জাহানের কাছে একটি আবেদন করি। তার ভিত্তিতে জেলা প্রশাসক গত ২০ জুন নিয়োগ প্রদান সংক্রান্ত আবেদন অগ্রায়ণের জন্য পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের উপপরিচালককে চিঠি পাঠায়। এরপরও তারা কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না। মহাপরিচালকের সুপারিশ অনুযায়ী আমি নিয়োগ কার্যক্রম সম্পন্ন করার জন্য অনুরোধ করছি।
লক্ষ্মীপুর পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের উপপরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) লোকমান হোসাইন বলেন, বিষয়টি আমার জানা ছিল না। কিছুদিন হলো আমি জানতে পেরেছি। সাবেক উপপরিচালক ডা. আশফাকুর রহমান মামুন এ বিষয়ে আমাকে কিছু বলে যায়নি। চাইলে তিনি নিয়োগ কার্যক্রম সম্পন্ন করে যেতে পারতেন। এখন আমাকে পুনরায় সবকিছু জানতে হবে। আমরা আবার তদন্ত কমিটি গঠন করব। খুব শিগগিরই বিষয়টি সুরাহায় পৌঁছাতে পারব।
মন্তব্য করুন