রাজশাহীর দুর্গাপুরে পুকুর থেকে মাছ চুরির সময় আন্তঃজেলা চোর চক্রের ১০ সদস্যকে আটক করে গণপিটুনি দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করেছে বিক্ষুব্ধ জনতা। এ সময় ঘটনাস্থল থেকে কৌশলে পালিয়ে যায় চোর চক্রের আরও আট সদস্য। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দুর্গাপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মাহফুজ আলম।
বৃহস্পতিবার (১৫ আগস্ট) রাত ২টার দিকে পৌর এলাকার ধরমপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
আটকরা হলো- নওগাঁর পত্নীতলার বয়সকইল গ্রামের মৃত হরেনের ছেলে শুকুর (২৬), একই গ্রামের নরেশের ছেলে নিপন (২৮), বগুড়া শিবগঞ্জের বড়িগঞ্জ গ্রামের মৃত যতিনের ছেলে সুমন (৩০), বিলআসড়া গ্রামের মৃত মোসাদ্দেকের ছেলে খাইরুল ইসলাম (৩৫), বুড়িগঞ্জ গ্রামের মানিকের ছেলে শাহাদাৎ হোসেন (২২), একই গ্রামের অশ্বিনীর ছেলে সম্পদ (৪৮), সঞ্জিত সরকার (৩৬), শিবগঞ্জ সদরের সেকেরকোলা গ্রামের চিত্তরঞ্জনের ছেলে মঙ্গল (৩৫), জয়পুরহাট ক্ষেতলালের মহব্বতপুর গ্রামের সুনীলের ছেলে অর্জুন (৩২) এবং একই গ্রামের নিবারণের ছেলে সুপদ (৩৪)।
দুর্গাপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মাহফুজ আলম জানান, গভীর রাতে বিভিন্ন জেলা থেকে আসা মাছ চোরের একটি দল দুর্গাপুর পৌর এলাকার ধরমপুর গ্রামের বিলে কয়েকটি পুকুর থেকে মাছ চুরির প্রস্তুতি নিচ্ছিল। এ সময় এলাকাবাসী বিষয়টি টের পেয়ে চারদিক থেকে তাদের ঘিরে ফেলে। পরে পুলিশে খবর দিলে তাদের আটক করে থানায় নিয়ে আসা হয়।
এ সময় তাদের কাছ থেকে মাছ ধরার বাঁধাই জব্দ করা হয়। তারা আন্তঃজেলা মাছ চোর সিন্ডিকেটের সদস্য বলে জানা গেছে। থানার তাদের বিরুদ্ধে মামলা করার পর শুক্রবার (১৬ আগস্ট) বিকেলে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, দুটি শ্যালো ইঞ্জিনচালিত বড় স্টিয়ারিং গাড়িতে গভীর রাতে ধরমপুর বিলে বাঁধাই জালসহ কয়েক ব্যক্তিকে নামতে দেখেন স্থানীয়রা। এতে তাদের সন্দেহ হয়। এ সময় এলাকাবাসী সংবাদটি চারদিকে ছড়িয়ে দেন। মাছ চুরির প্রস্তুতির সময় ঘিরে ফেলে আটক করে গণধোলাই দেয় বিক্ষুব্ধ জনতা।
ধরমপুর গ্রামের বাসিন্দা মৎস্যচাষী মো. রাজীব বলেন, প্রায় এক সপ্তাহ আগেও আমার পুকুর থেকে প্রায় ৭ লাখ টাকার মাছ চুরি হয়েছে। তারা আমাকে একেবারে নিঃস্ব করে ফেলছে। প্রায়ই বিভিন্ন এলাকায় মাছ চুরির সংবাদ পাই। বিভিন্ন জেলা থেকে আসা এই চোর সিন্ডিকেট এ অঞ্চলে মাছ চুরি করে আসছিল।
বৃহস্পতিবার গভীর রাতে এই চোর সিন্ডিকেটের ১৮ সদস্য বিলে নামে। এ সময় ১০ জন এক পুকুরে বাঁধাই জাল দিয়ে মাছ ধরার প্রস্তুতি নিতে থাকে। আর ৮ জন অন্য পুকুরগুলোর পজিশন দেখতে যায়। এমন সময় এলাকাবাসীর হাতে তারা আটক হয়।
দুর্গাপুর থানার ওসি খাইরুল ইসলাম কালবেলাকে বলেন, পুকুর থেকে মাছ চুরির সময় আন্তঃজেলা চোর চক্রের ১০ সদস্যকে আটক করা হয়েছে। থানায় মামলা হয়েছে। তাদের আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।
মন্তব্য করুন