একসময় লোকে লোকারণ্য থাকত হবিগঞ্জের এমপি, মেয়র ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের বাসা ও অফিস। কিন্তু এগুলো এখন নিস্তব্ধ। ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে স্থানীয় এমপির ৬ তলাবিশিষ্ট বাড়িটি। যাদের পদচারণায় মুখরিত থাকত বাড়িটি, তাদের কাউকেই আর প্রকাশ্যে দেখা যাচ্ছে না। আওয়ামী লীগ নেতাকর্মী ও জনপ্রতিনিধিশূন্য হয়ে পড়েছে।
সূত্রমতে, ৭৮টি ইউনিয়ন, ৯টি উপজেলা ও ৬টি পৌরসভা নিয়ে গঠিত হবিগঞ্জ জেলা। প্রায় ২০ লাখ লোকের বসবাস। জেলার অধিকাংশ স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানে আওয়ামী লীগের জনপ্রতিনিধিরা নির্বাচিত হয়ে আসছে কিন্তু সরকার পরিবর্তন হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে জনপ্রতিনিধিরা হাওয়া হয়ে গেছে। ফলে সেবা প্রত্যাশীরা চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন।
শেখ হাসিনার দেশত্যাগের পরদিন থেকেই হবিগঞ্জ পৌরসভার মেয়র আতাউর রহমান সেলিম, সদর উপজেলা চেয়ারম্যান মোতাচ্ছিরুল ইসলাম, লাখাই উপজেলা চেয়ারম্যান মুশফিউল আলম আজাদ, শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান আবদুর রশিদ তালুকদার ইকবাল, চুনারঘাট পৌরসভার মেয়রসহ অধিকাংশ জনপ্রতিনিধিরাই আত্মগোপনে রয়েছে। অনেকেই আবার ইতোমধ্যে মামলার আসামি হয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। তাদের অনুপস্থিতিতে কাঙ্ক্ষিত সেবা পাচ্ছে না জনসাধারণ। এ কারণে অনেকেই ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
আবার অনেক চেয়ারম্যান এলাকায় থাকলেও জনরোষের ভয়ে অফিসে আসছেন না। বিগত দিনে যারা অবৈধ সুযোগ-সুবিধা নিয়েছে তারাই এখন ভয়ে অফিসে আসছেন না। আবার অনেক চেয়ারম্যানরা নিজ বাসায় অফিস করছেন। যে কারণে স্থানীয় লোকজন বাসায় যেতে বিব্রতবোধ করছেন।
হবিগঞ্জ পৌরসভার উমেদনগর এলাকার বাসিন্দা আব্দুল জলিল বলেন, জন্মনিবন্ধন করানোর জন্য পৌরসভার আসলে মেয়র না থাকায় কাজ করতে পারছি না। কবে মেয়র আসবেন তাও কেউ বলতে পারছে না।
লাখাই উপজেলার করাব গ্রামের বাসিন্দা সোহাগ বলেন, উপজেলায় গিয়ে চেয়ারম্যানকে পাওয়া যায়নি। তিনি পলাতক রয়েছেন। আমরা চরম দুর্ভোগে রয়েছি।
এ বিষয়ে অনেক জনপ্রতিনিধির ব্যক্তিগত মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তাদের ফোন বন্ধ পাওয়া গেছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন ইউপি চেয়ারম্যান বলেন, আমি বাড়িতে অবস্থান করছি। আগের মতো অফিসে যাওয়ার সুযোগ হয়নি। পরিস্থিতি ভালো হলে নিয়মিত অফিস করব।
মন্তব্য করুন